সারা বিশ্বব্যাপী প্রলয় সৃষ্টি করেছে নভেল করোনাভাইরাস। দেশে দেশে চলছে লকডাউন। ঝড় একদিন থেমে যাবে, লকডাউনও উঠে যাবে। কিন্তু আমাদের মাথায় রাখা দরকার সংক্রমণ আপাতত কমে গেলেও পরে যে তা আবার বাড়বে না বা নতুন কোন ভাইরাসের আক্রমণ ঘটবে না তারও কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই লকডাউন উঠে গেলেও আমাদের কিছু সাবধানতা আজীবন মেনে চলতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলো।
১) যতটা সম্ভব বাড়িতে থাকতে হবে
সরকারি ভাবে লকডাউন শেষ হয়ে গেলেও কিন্তু বহু সংস্থাই তাদের কর্মীদের ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ চালিয়ে যেতে বলবে। আপনি যদি তেমনই কোনো সংস্থায় চাকরি করেন, তা হলে এখন সেলফ-কোয়রেন্টাইনের যে নিয়মগুলো মেনে চলছেন ঠিক সেগুলোই চালিয়ে যেতে হবে। খুব জরুরী ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোবেন না। বেরোলেও দ্রুত কাজ সেরে ঢুকে পড়ুন ঘরে।
২) হাত ধোওয়ার অভ্যাস ছাড়া যাবে না
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর থেকেই আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা আগের চেয়ে বহুগুণে বেড়েছে। সেই অভ্যাস লকডাউন উঠে গেলেও একইভাবে বজায় রাখতে হবে। বাইরে থেকে ঘরে ঢুকে জামাকাপড় বদলে ফেলুন। সাবান দিয়ে খুব ভালো করে হাত-পা ধুয়ে ফেলুন। এমনকি, করোনা-আতঙ্ক পুরোপুরি কেটে গেলেও এই অভ্যাসটা আমাদের ধরে রাখতে হবে। তাতে করে অনেক রোগ-ব্যাধি থেকে দূরে থাকতে পারবেন।
৩) মাস্ক পরতে হবে নিয়মিত
মাস্ক পরা বন্ধ করা উচিত নয়। বাড়ির বাইরে যেতে হলে মাস্ক বা ওড়না বা স্কার্ফ দিয়ে ভাল ভাবে নাক-মুখ ঢেকে রাখুন। তাতে শুধু করোনা নয়, বাতাসের ধুলো, ময়লা, দূষণের হাত থেকেও রক্ষা পাবেন। সুস্থ থাকবে ফুসফুস।
৪) ভিড় এড়িয়ে চলার অভ্যাস বজায় রাখুন
করোনার কারণে ভিড় বা জনবহুল এলাকা কীভাবে এড়িয়ে চলতে হয় তা আমরা শিখে গেছি। আতঙ্ক কেটে গেলেও এই অভ্যাসটা ধরে রাখতে হবে। বাস, ট্রেন বা গণপরিবহণে অতিরিক্ত ভিড় দেখলে উঠবেন না। সে জন্য হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে বের হবেন।
৫) স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন সব সময়
সর্দি-কাশি হলেই রুমাল বা টিস্যু পেপার সাথে রাখুন। হাঁচি, কাশির দেয়ার সময় মুখ, নাক ঢেকে নিতে ভুলবেন না। একাধিক রুমাল সাথে রাখুন। যাতে প্রয়োজন হলে বদলে নিতে পারেন। রুমাল প্রতি দিন ব্যবহারের পর ভাল ভাবে পানিতে ধুয়ে ও রোদে শুকিয়ে নেবেন।
৬) রেস্তোঁরা, ক্লাব, পার্টি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে
লকডাউনে আপাতত বেশ কয়েক মাস এই সব জায়গা এড়িয়ে চলতে হবে। শুধু রেস্তোঁরা বা পার্টিই নয়, এড়িয়ে চলতে হবে সিনেমাহল বা থিয়েটারও। ভিড় বেশি হয়, এমন সকল জায়গাই এড়িয়ে চলতে হবে। এছাড়া, বাড়িতেও বড় পার্টি, বেশি লোকজনের দাওয়াত করা, এই সব কিছু দিনের জন্য হলেও বন্ধ রাখতে হবে।
৭) লকডাউন শেষ হলেই বাইরে বেড়াতে যাবেন না
লকডাউন শেষ হলেই মুক্তি পেয়েছেন ভেবে হুট করেই ক’দিনের জন্য বেড়াতে চলে যাবেন না। আপাতত আরও কয়েক মাস নিরাপদ বাড়ি বা নির্দিষ্ট এলাকার ঘেরাটোপেই থাকুন। এমনকি আজীবনের জন্য এই অভ্যাস রাখুন। কিছুটা হলেও পরে কাজে দেবে।
সূত্র- আনন্দবাজার।
আনন্দবাজার/শাহী