ঢাকা | রবিবার
২৫শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভাতার জমানো টাকা ত্রাণ তহবিলে দান করলেন প্রতিবন্ধী বাদশা

শারীরিক প্রতিবন্ধী, তারপরও করোনা পরিস্থিতিতে মানুষের সহায়তায় নিজের ভাতার টাকা ত্রাণ তহবিলে দান করে করেছেন তিনি। মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী বরিশাল নগরের চা দোকানি মো. বাদশা খান।

বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বরিশাল নগরের কালিবাড়ি রোডে সেরনিয়াবাত ভবন কম্পাউন্ডে সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মোয়াজ্জেম হোসেনের হাতে ত্রাণ তহবিলে জমা দেওয়া ৫ হাজার টাকার রশিদ তুলে দেন নগরীর ১ নম্বর ওয়ার্ডের হাজেরা খাতুন সড়কের এই বাসিন্দা।

বাদশা জানান, নগরীর নথুল্লাবাদ বাসটার্মিনাল এলাকায় একটি চায়ের দোকান রয়েছে এই মানবিক মানুষের। এটিই তার উপার্জনের মূল উৎস। সেটি দিয়েই কোনো মতে চলে মা, স্ত্রী, সন্তানসহ ৪ জনের টানাটানির সংসার। যদিও করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের কারণে বর্তমানে বন্ধ আছে একমাত্র আয়ের পথ ওই চায়ের দোকানটি। হাজেরা খাতুন সড়কে ভাড়া বাসায় বন্দি থেকেই এখন দিন কাটছে তাদের। তারপরও এই দুর্দিনে অল্প সামর্থ্য তা দিয়েই মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছেন তিনি। কিন্তু তার মতো মানুষের কাছ থেকে কে সহায়তা নেবে, তাই অনেক ভেবে প্রতিবন্ধী ভাতার অর্থ ও মেয়ের পড়াশোনার জন্য জমানো কিছু টাকা দরিদ্রদের সহায়তায় বরিশাল সিটি মেয়রের ত্রাণ তহবিলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন তিনি।

বাদশা জানান, প্রতিবন্ধী হিসেবে প্রতি মাসে ৬শ’ টাকা ভাতা পান। পহেলা রমজানে ৫ মাসের ভাতা হিসেবে ব্যাংক থেকে ৩ হাজার টাকা তুলেছেন। এছাড়া আগের জমানো ছিল আরও ২ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে মোট ৫ হাজার টাকা এক করে সদররোডস্থ জনতা ব্যাংকে গিয়ে সিটি করপোরেশনের ত্রাণ তহবিলের অ্যাকাউন্টে জমা দেন তিনি। বিকেলে সেই জমাদানের রশিদ তুলে দেন সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তার হাতে।

তিনি বলেন, করোনায় সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ নগরের নিম্ন আয়ের মানুষদের সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন। এতে বিপুল অর্থ ব্যয় হচ্ছে। সেই ব্যয় বহনের জন্য মেয়র ত্রাণ তহবিল গঠন করেছেন। মেয়রকে সহযোগিতা করার জন্য নিজের হাতে থাকা সবটুকু সেই তহবিলে দিয়েছি। আশা থাকবে, নগরের বিত্তবানরা নিম্ন আয়ের মানুষের সহায়তায় অবশ্যই এগিয়ে আসবেন। কেবল তাহলে একটা মানুষও না খেয়ে থাকবে না।

সংবাদটি শেয়ার করুন