লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের চর মার্টিনের জেলে আবুল কাশেমের(৪৫) বলছিলেন, ‘গাঙে অবরোধ দেয়ার হরে চিটাগাং গেছি সিএনজি চালানোর লাইগা। কিন্তু হরে হুনি, করোনা আইছে দ্যাশে। হিয়ারলাই আর সিএনজিও চালাইতে হারি নাই, বাড়িতে আসার হরেও কোন কাজকাম পাই নাই। এমন অবস্থায় আছি যে, কওনের মতো না। দুইদিন আগে উপাস আছিলাম। শাগ-লতা রান্না করে। আমরাতো গাঙে কাজকাম করতাম। ইলিশ মাছ খাইতাম সব সময়। এখন সব কি আর পেটে ঢুকে?’
চর কালকিনির জেলে আব্বাস মাঝির (৪৩) আলাপ হয় বাত্তির খালপাড়ে। তিনি বলছিলেন, ‘সরকার অভিযান দিছে গাঙে। আজ দুই মাসের মতো। আমাগো কোন খোঁজ খবর নাই। ভাইরাস আসার পর থেইকা তো কোন কাজই করতে পারি নাই। গাঙে মাছ ধরা বন্ধ অইলে আঁই বিভিন্ন স্থানে গিয়া গাছ কাটতাম। মোটামুটি সংসারটা চলতো। কিন্তু এহন কোন দিকেও যাওয়া যায় না, কাজ কামও কোনডা করতে পারি না। কারও কাছ থেকে যে হাওলাত বরাত করে চলমু, সেটাও পারি না। এখন কার কাছে টিয়া চামু? সবার হাত খালি। কারও হাতে কোন টিয়া নাই।’
আব্বাস মাঝির সঙ্গে আলাপের পর দেখা মেলে ইছমাইল মাঝির। বয়সে ২৫এর গন্ডিতে। লোকজন নিয়ে নৌকার কাজ করছেন। জানতে চাই, কেমন আছেন, কি অবস্থায় আছেন? ‘আমরা আছি, কোন রকুম বাঁচি আছি। আমাগো খবর নেওয়ার মতো কেউ আছে? শুধু আমাগোরে পিটিয়ে ঘরে ঢুকানো হয়। কিন্তু ঘরে ঢুকলে যে আমাগো পেট চলে না, সেটার খবর কেউ রাখে? গাঙে অভিযানের পর থেকে আমরা অলস সময় কাটাই। অন্য কোন কাজও যে গিয়া করমু, সেটাও পারছিনা। ধার-দেনা করেও যে চলমু, সেই পথও অন বন্ধ। গাঙে গিয়া যে মাছ ধরমু, সেটাও বন্ধ।’
মেঘনাতীরর বাত্তির খাল পাড়ে দেখা মেলে আরো বেশ কয়েকজন জেলের। সবার একই দাবি, তারা কিছুই পাননি করোনা দুর্যোগে। এতে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় জীবন পার করছেন তারা।
লেখা ও ছবি Junayed Al Habib