বুধবার, ১৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনা: ছুটির দাবিতে দেশের সকল চা বাগানে মানববন্ধন

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রক্ষায় চা বাগান মালিক পক্ষ শ্রমিকদের মজুরিসহ বাগান বন্ধের সিদ্ধান্ত না নেয়ার প্রতিবাদে আজ চা বাগান গুলাতে মানববন্ধন করছে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন।

আজ শনিবার সকালে কাজে যাওয়ার আগে ফাঁড়ি বাগানসহ প্রতিটি চা বাগানে ‘মানববন্ধন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে । প্রতিটি বাগানে চা শ্রমিকদের পক্ষে ১০ জন প্রতিনিধি ১০ মিনিটের জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, শান্তিপূর্ণ এই কর্মসূচি পালন করেছে।

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে অফিস-আদালত সবই এখন বন্ধ। তবে ছুটি নেই চা-বাগানের কর্মীদের। তাই এই কর্মসূচির পালন করাা হয়েছে বলে জানান সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রামভজন কৈরী।

ইউনিয়নের সূত্রে জানা গেছে, সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ১৬৬টি চা-বাগান রয়েছে। এসব বাগানে শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেও চা-শিল্প এর আওতার বাইরে পড়ে যায়। অথচ বাগানের শ্রমিকেরা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বাস করেন। ফলে তাঁদের ঝুঁকি বেশি। এ অবস্থায় বাগানে ছুটি ঘোষণার যৌক্তিকতা তুলে ধরে চা শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে চা-বাগানের মালিকপক্ষের সংগঠন বাংলাদেশ চা-সংসদসহ (বিটিএ) বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে একাধিকার চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো সাড়া মেলেনি। এর প্রতিবাদ আজ শনিবার সকালে কাজে যোগদানের আগে সব বাগানে অন্তত ১০ জন শ্রমিক ব্যানার নিয়ে একটি নির্ধারিত স্থানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থেকে মানব বন্ধন পালন করার হয় ।

আরও পড়ুনঃ  যে ৫ বিভাগে হতে পারে আজকাল কালবৈশাখী

কমলগঞ্জ উপজেলার মৃর্তিঙ্গা চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির নেতা ধনা বাউরি বলেন, অন্য সবার মতো আমরাও দেশের নাগরিক। এমনিতেই প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা আমরা ঠিকমত পাইনা। সেখানে করোনার মতো রোগ আসলে আমাদের কি হবে তা কল্পনাও করা যায় না। তাই আমাদের নিরাপদ জীবনের স্বার্থে সরকার ঘোষিত ছুটি কার্যকর করা হোক।

চা শ্রমিকরা জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভারতের আসাম রাজ্যের ৮৬০টি চা বাগানের কাজ বন্ধ ঘোষণার খবর এলে তারাও এই দাবি তোলেন। নিজ ব্যবস্থায় এবং কিছু কিছু বাগান হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেছে তবে তা এত অপ্রতুল যে অধিকাংশ শ্রমিকও সে সুযোগ পাচ্ছেন না। আমরা কাজ করি এক সঙ্গে। বিকেলে যখন পাতা জমা দেই তখন সবাই কাছাকাছি লাইনে দাঁড়িয়ে জমা দেই। এতে একজনের সংক্রমণ হলে সবার হতে পারে। ছুটি দেয়া হলে বেতন-ভাতা পরিশোধের বাধ্যবাধকতার অজুহাতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বাগান মালিকরা। তাই আমাদের মজুরিসহ ছুটি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী কাছেও চা শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে তারা আবেদন পাঠাবেন বলে জানান ।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন