নীলফামারীর সৈয়দপুরে ত্রাণ না পেয়ে বিক্ষোভ করেছে করোনার প্রকোপে কর্মহীন হয়ে পড়া প্রায় সহশ্রাধিক মানুষ। মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় উপজেলার ঢেলাপীর এলাকায় উত্তরা আবাসনের খেটে খাওয়া মানুষেরা সৈয়দপুর-নীলফামারী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।
জানা যায়, উত্তরা আবাসনে প্রায় এক হাজার ২শ’ হতদরিদ্র পরিবারের বসবাস। এদের মধ্যে প্রায় সিংহভাগই দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ। সম্প্রতি করোনাভাইরাসের কারণে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় এখানকার প্রায় সকলেই কর্মহীন হয়ে পড়েছে। যারা বিগত কয়েকদিন যাবত খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করছে। এমতাবস্থায় পৌরসভার মেয়র অধ্যক্ষ আমজাদ হোসেন সরকার ব্র্যাকের সহযোগিতায় ২৫০টি পরিবারকে ১ হাজার ৫শ’ টাকা করে সহযোগিতা প্রদান করেছেন। বাকী অন্য পরিবারগুলো পৌরসভা, উপজেলা প্রশাসন বা জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে কোন প্রকার সহযোগিতা বা ত্রাণ পায়নি। এতে তারা চরম দূরাবস্থার মধ্যে পড়েছে।
ত্রাণ না পেয়ে বাধ্য হয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আবাসনের মধ্য দিয়ে চলে যাওয়া সৈয়দপুর-নীলফামারী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। এসময় তারা জরুরী ভিত্তিতে ত্রাণ দেওয়ার জন্য দাবি জানান। নতুবা তাদের কাজ করার জন্য অনুমতি দিতে হবে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন। প্রায় ১ ঘন্টা যাবত তারা এখানে অবস্থান করে। এসময় জরুরী জ্বালানী তেল নিয়ে যাওয়া ট্যাংকসহ প্রাইভেট কার ও প্রয়োজনীয় যানবাহন আটকা পড়ে। খবর পেয়ে সৈয়দপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে তাদের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনসহ জেলা প্রশাসনকে অবহিত করে সুরাহার আশ্বাস দেয়। এতে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেয়।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নাসিম আহমেদ জানান, আবাসনের দরিদ্র লোকদের কথা আমাদের মাথায় আছে। প্রচুর ত্রাণ এসেছে। তাদেরকেও দেওয়া হবে। এভাবে বিক্ষোভ বা সড়ক অবরোধ করে কোন সুরাহা হবেনা।
পৌর মেয়র অধ্যক্ষ মোঃ আমজাদ হোসেন সরকার জানান, হতদরিদ্র ২৫০টি পরিবারের মাঝে ১৫শ’ টাকা করে প্রদান করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে অন্য পরিবারগুলোকেও খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা প্রদান অব্যাহত থাকবে।
জেলা প্রশাসক মোঃ হাফিজুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, পর্যায়ক্রমে সকল হতদরিদ্র ও কর্মহীন মানুষই ত্রাণ পাবে। অবিলম্বে তাদেরকে সহযোগিতা দেওয়া হবে। বিক্ষোভ বা সড়ক অবরোধ করে কোন লাভ হবেনা বরং তারাই ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। সরকারী আইন অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।
আনন্দবাজার/শাহী