দেশের সব পোশাক কারখান বন্ধ হলেও আশুলিয়ার আজমত অ্যাপারেলস কারখানার পাঁচ শতাধিক শ্রমিক ছুটিতে যাননি। ব্যস্ত সময় পার করছেন কারখানায়।করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা পেতে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) তৈরি করছেন তারা। অবাক করা বিষয় হলো পিপিই তৈরির বিনিময়ে কোনো পারিশ্রমিক নিচ্ছেন না কোনো শ্রমিক। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই বিনা পারিশ্রমিকে ৫০ হাজার পিপিই তৈরি করছেন তারা।
আজমত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আজমত রহমান নিজেই ৫০ হাজার পিপিই তৈরির এ উদ্যোগ নেন। করোনা প্রতিরোধে কাজ করা চিকিৎসক-নার্স ও অন্যান্য পেশার মানুষদের সুরক্ষায় এসব পিপিই ফ্রি বিতরণ করবেন তিনি।
আজমত রহমান জানান, করোনার প্রভাব শুরু হলে আমরা কারখানা ছুটি ঘোষণা করি। ইতিমধ্যেই কারখানার পাঁচ হাজার শ্রমিক ছুটিতে চলে যান। পরে পিপিই তৈরির উদ্যোগ বাস্তবায়নের জন্য কিছু শ্রমিকের কাছে সহায়তা চাওয়া হয়। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো পাঁচ শতাধিক শ্রমিক ছুটি না নিয়ে পিপিই তৈরির কাজ শুরু করে দেন। এজন্য তাদের মজুরি দিতে চাইলেও নিতে রাজি হননি শ্রমিকরা।
কারখানায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৫ মার্চ থেকে শুরু হয় পিপিই তৈরির কাজ। এরই মধ্যে তারা ৩০ হাজার পিপিই তৈরি করে ফেলেছে। তৈরিকৃত এসব পিপিই বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এরই মাঝে ঢাকায় যেসব হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা হয় সেসব হাসপাতালে পিপিই দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে, সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পুলিশ প্রশাসন ও বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পিপিই দেয়া হয়েছে।
পিপিই তৈরির কাজে ব্যস্ত পোশাককর্মী হাবিবা আক্তার জানান, আমাদের কষ্টে তৈরি পিপিই পরে অনেক চিকিৎসক, নার্স এবং সাধারণ মানুষ সুরক্ষিত থাকবে- এটি ভেবেই আনন্দ হচ্ছে। এটা আমাদের জন্য অনেক খুশির, অনেক বড় প্রাপ্তির।
আনন্দবাজার/শাহী