ঢাকা | রবিবার
২৩শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৯ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনা বিস্তারের মধ্যেই নিস্তার ব্যবস্থা

বেড়েই চলছে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব। আক্রান্ত হয়েছেন অজানা অনেক মানুষ। আর এ থেকে মুক্তির জন্য প্রয়োজন এ রোগের নিয়ন্ত্রণে তত নিখুঁত পরিকল্পনা। এজন্য আক্রান্ত ব্যক্তি কাদের সাথে মিশেছেন বিষয়গুলো যত বেশি জানা যাবে ততই তারাতাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে বলে অনেকেই মনে করছেন।

এদিকে বিদেশফেরতরা মানছে না কোন কথা।বিদেশ থেকে মানুষ ফিরে এসেছে, কিন্তু কোয়ারেন্টিনে থাকতে চাইছে না।  এসব লোকজন ঘুরে বেড়াচ্ছেন রাস্তায়, বাজার, আত্মীয়স্বজনের বাসায়; আবার কেউ বিয়েও করছেন। তবে অধিকাংশ মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষায় করোনা আক্রান্ত বা বিদেশফেরত প্রবাসীদের কোয়ারেন্টিনে থাকা বা রাখা জরুরি।

পুলিশ কীভাবে খুঁজবে বিদেশফেরতদের

বাংলাদেশের অনেক মানুষই বর্তমান ঠিকানা বা স্থায়ী ঠিকানায় থাকেন না। মোবাইল নম্বরটি হয়তো আর ব্যবহার করছেন না। বিগত কয়েক মাসে কয়েক লাখ মানুষ বিদেশ থেকে এসেছেন, তাদের এভাবে খুঁজে বের করা পুলিশের পক্ষে কঠিন। প্রয়োজন সেলফ রিপোটিং ব্যবস্থা

করোনার বিস্তারেই পথ চিহ্নিত করার সুবিধা

বর্তমানে করোনা মোকাবেলায় সারা দেশের মানুষকে মাথায় নিয়ে কাজ করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং সব সংস্থা। কিন্তু এ মুহূর্তে করোনা যেভাবে এসেছে ও ছড়াচ্ছে, তা চিহ্নিত করা দরকার। একজন অপরাধীকে যেভাবে খুঁজে বের করা হয়, ঠিক একইভাবে করোনার বিস্তারের পথ খুঁজে নির্মূল করতে হবে। বাংলাদেশ পুলিশ এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

শাস্তি ও প্রণোদনা

করোনা নিয়ন্ত্রণে জনগণকে শাস্তি ও প্রণোদনা দুটিই দেয়া উচিত। সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ অনুসারে সংক্রান্ত রোগ নিয়ন্ত্রণে সরকারের নির্দেশনা অমান্যের শাস্তি ছয় মাসের জেল বা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ডের ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া নির্দেশনা অমান্যে পাসপোর্ট বাতি বা লক করা, আগামী ছয় মাসের মধ্যে বিদেশ যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা যেতে পারে।

প্রবাসীদের ভয় নেই, পাশে থাকবে সরকার

এ দেশে অনেক গুজব রটানো হয়। প্রবাসীদের ভয় থাকতে পারে হোম কোয়ারেন্টিন বা নিবন্ধনের বিষয়ে। যারা সরকারকে সহযোগিতা করবে বা নির্দেশনা শুনতে তাদের এ দুর্যোগের শেষে জেলা প্রশাসন কর্তৃক দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে প্রশংসাসূচক চিঠি দেয়া যেতে পারে। এসব প্রবাসীকে মোবাইলে আগামী এক মাসের জন্য ইন্টারনেট ফ্রি করে দেয়া যেতে পারে। প্রবাসীদের ভয় নেই; সরকার তাদের সহযোগিতার জন্য এ ব্যবস্থা করছেন, এ বিষয়ে প্রচার করতে হবে।

আমরাও পারব, নিজের শক্তিকে প্রমাণ করতে

করোনার শুরুতে স্যানিটাইজার, পার্সোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট (পিপিই), মাস্ক, করোনা টেস্টিং কিটের অভাব ছিল, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নানা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা স্যানিটাজার, মাস্ক বানিয়ে বিতরণ করছে। চিকিৎসকদের জন্য একদল ব্যক্তি কয়েক লাখ পিপিই বানাচ্ছে, ইতিমধ্যে একটি সংগঠন বানিয়ে বিতরণ শুরু করেছে। কিছু ব্যক্তি পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে জীবনমুক্ত করছে। অনেক বাড়িওয়ালা আগামী মাসের বাসা ভাড়া মওকুফ করেছে। পরম করুণাময়ের দয়ায় আমরা এই সমস্যার মোকাবেলা করতে পারব। শুধু এক থাকতে হবে, নিজের শক্তিকে চিনতে হবে।

আনন্দবাজার/রনি

সংবাদটি শেয়ার করুন