জমে উঠেছে জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ঐতিহ্যবাহী গোপীনাথপুর মেলার ঘোড়ার হাট। বিজলি, কিরণমালা, রানী, সুইটি আরও কত যে বাহারি নামের ঘোড়া।
ঘোড়াগুলোর দুলকী চলনে বিদ্যুৎগতি, এক পলকেই যেন মাইল পার। আকর্ষণীয় রং আর গড়নের এমন নানামুখী গুণের কারণে ঘোড়াগুলোর কদরও যথেষ্ট। পছন্দের ঘোড়া নিজের কাছে ভিড়তে ক্রেতাদের মধ্যেও চলছে রীতিমতো প্রতিযোগিতা।
আয়োজকরা জানান, এটি দেশের একমাত্র ঘোড়া বেচাকেনার হাট। যার কারণে সারা দেশ থেকে ক্রেতা-বিক্রেতারা আসেন এখানে। প্রতি বছর দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে মাসব্যাপী চলে এই মেলা। মূল মেলা এক মাস হলেও পশুর মেলা হয় ১০ দিন। যা শুরু হয়েছে ১০ মার্চ। ঘোড়া ছাড়াও মহিষ, গরু, ভেড়া ও ছাগল কেনাবেচা হয় এ মেলায়। ক্রেতা-বিক্রেতা ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় এখন মুখর ঐতিহ্যবাহী গোপীনাথ মেলার ঘোড়ার হাট। দরদাম ঠিকঠাকের পর একটি খেলার মাঠে ঘোড়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ক্রেতাকে দেখানো হয় ঘোড়ার দৌড়।
আয়োজকরা জানান, ৫০০ বছরের পুরনো এ মেলা শরু থেকেই ঘোড়ার জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। স্বাধীনতার পরও মেলায় নেপাল, ভুটান, ভারত, পাকিস্তানসহ মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলো থেকে উন্নত জাতের ঘোড়া আসত। বর্তমানে সে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঘোড় সওয়ারি ও ঘোড়া মালিকরা এ মেলায় ঘোড়া নিয়ে আসেন।
স্থানীয়রা জানান, এ মেলায় ময়মনসিংহ, জামালপুর টাঙ্গাইল, বগুড়া, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, পাবনা, রাজশাহী, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঘোড়া বিক্রির জন্য আনেন মালিকরা।রাজশাহীর তানোর থেকে আসা সাইফুল ইসলাম একটি ঘোড়ার দাম হাঁকিয়েছেন এক লাখ ৯০ হাজার টাকা। পরে তা দেড় লাখ টাকা বিক্রি করেন বলে জানান তিনি। নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার চকমরিয়ম গ্রামের আবদুল মালেক জানান, তিনি ২৫ বছর ধরে মেলায় ঘোড়া নিয়ে আসছেন, এবার তিনি তিনটি ঘোড়া এনেছিলেন, সবক’টি এক লাখ ৯০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।
এবার হাটে সর্বোচ্চ সাড়ে তিন লাখ টাকায় যে ঘোড়াটি বিক্রি হয়েছে তার মালিক হোসেন আলী জানান, ঘোড়াটির বয়স সাড়ে চার বছর। এটি রেসিং ঘোড়া। দ্রুত দৌড়াতে পারে সাদা-কালো ডোরাকাটা ঘোড়াটির যত্ন নিতেন তিনি নিজেই। বাহারি ঘোড়াটি কিনেছেন রাজশাহীর সেকেন্দার বাদশা নামের এক সৌখিন ঘোর সওয়ারি। সিরাজগঞ্জের কুতুব আলী প্রায় সাড়ে আট ফুট উচ্চতার কালো রঙের এক তেজী ঘোড়া এক লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।
আনন্দবাজার/শহক