যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। সেইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক বিষয়ে চূড়ান্ত আলোচনায় অংশ নিতে সোমবার একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছে।
রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান।
বোয়িং-এর সঙ্গে বড় অর্ডার
বাণিজ্য সচিব বলেন, বোয়িং-এর ব্যবসা যুক্তরাষ্ট্র সরকার পরিচালনা করে না, এটি একটি বেসরকারি কোম্পানি। আমরা ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার জন্য বোয়িংকে অর্ডার দিয়েছি। এর আগে আমাদের ১৪টি অর্ডার ছিল। এখন সেটা বাড়িয়ে ২৫টি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “ভারত, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলো ইতোমধ্যে ১০০টি করে বোয়িং উড়োজাহাজের অর্ডার দিয়েছে। আমাদের অর্ডারও তাদের তালিকায় যুক্ত হয়েছে। তবে বোয়িং তাদের উৎপাদন সক্ষমতা অনুযায়ী সরবরাহ করে, ফলে আমাদের উড়োজাহাজ পেতে এক থেকে দুই বছর পর্যন্ত সময় লাগবে।
চূড়ান্ত শুল্ক আলোচনা ২৯ ও ৩০ জুলাই
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তৃতীয় ও চূড়ান্ত শুল্ক আলোচনা আগামী ২৯ ও ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য আলোচনাকারী সংস্থা USTR (ইউএস ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ)-এর অফিসে, ওয়াশিংটনে।
সচিব জানান, এই আলোচনায় অংশ নিতে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিনিধি খলিলুর রহমান এবং আমি নিজেও যাচ্ছি। সোমবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় প্রতিনিধি দল ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বে।
তিনি বলেন, গত ২৩ জুলাই আমরা ইউএসটিআর-এর কাছে আমাদের অবস্থানপত্র পাঠিয়েছি। এখন সরাসরি আলোচনায় সেই বিষয়গুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হবে।
সয়াবিন ও তুলা আমদানির ওপর গুরুত্ব
সচিব মাহবুবুর রহমান জানান, আলোচনায় সয়াবিন ও তুলা আমদানির বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণভাবে স্থান পাবে। তিনি বলেন, “সয়াবিন যেসব প্রতিষ্ঠান বেসরকারিভাবে আমদানি করে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে পণ্য আমদানির বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে। শুল্ক আলোচনা চলাকালে তারাও একযোগে বৈঠক করবে।
তুলা আমদানির বিষয়ে সচিব বলেন, তিন বছর আগে আমরা ১.৮ বিলিয়ন ডলারের তুলা আমদানি করতাম। বর্তমানে সেটা কমেছে। তবে সেটি পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারলে একাই প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমানো সম্ভব।
শুল্ক ঘাটতি কমাতে বহুমাত্রিক পরিকল্পনা
সচিব বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি হ্রাস এবং বহুমুখী রপ্তানি বৃদ্ধি। এ জন্য উড়োজাহাজ কেনার মতো বড় বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত ছাড়াও আমদানি-রপ্তানির বিভিন্ন দিক নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, শুল্ক আলোচনাকে কেন্দ্র করে আমরা শুধু সরকারি পর্যায়ে আলোচনা করছি না, বেসরকারি আমদানিকারকদেরও সম্পৃক্ত করছি যাতে উভয় পক্ষ উপকৃত হয়।




