ঢাকা | সোমবার
১০ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
২৫শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দরকার বিশ্বব্যাপী নির্গমন হ্রাস: পরিবেশ উপদেষ্টা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, উদ্ভাবনী অভিযোজন পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি হলেও তা বিশ্বব্যাপী নির্গমন হ্রাসের বিকল্প হতে পারে না।

আজ সাভারের ব্র্যাক সিডিএম-এ অনুষ্ঠিত ফ্রুগাল ইনোভেশন ফোরাম ২০২৫-এর “Policy Perspective on Climate Adaptation in Agriculture, Food Security, and Livelihoods” শীর্ষক সেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে তিনি এ কথা বলেন।

উপকূলীয় নোয়াখালী ও ফেনী অঞ্চলের সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, জটিল নদীপ্রবাহ এবং জোয়ার-ভাটার প্রভাবে পানির উচ্চতা ক্রমাগত বেড়ে চলেছে, যা স্থানীয় বন্যা প্রতিরোধব্যবস্থাকে বিপর্যস্ত করে তুলছে। অভিযোজনেরও সীমা আছে। প্রশ্ন হলো, আমরা কতটা অভিযোজন করতে পারি, ধ্বংসের আগে?

তিনি প্রকৃতিভিত্তিক সমাধানের প্রচারে আন্তরিকতার অভাব তুলে ধরে বলেন, “প্রকৃতিভিত্তিক সমাধান মানে হওয়া উচিত নদী, বন আর খাল রক্ষা; শুধুমাত্র কার্বন অফসেট হিসাব করার জন্য গাছ গোনা নয়।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমানোর ওপর জোর দিয়ে বলেন, “জীববৈচিত্র্যকে পণ্য হিসেবে ব্যবহারের বদলে এখন সময় প্রকৃতিকে সম্মান দেখানোর।” তিনি তামাক ও ক্যাসাভা চাষের মতো ক্ষতিকর প্রবণতা বন্ধ করে জনগণের জ্ঞান ও অংশগ্রহণভিত্তিক পুনর্জাগরণমূলক কৃষি ব্যবস্থার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “শুধু খাদ্যের পরিমাণ নয়, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করাটাই হওয়া উচিত আমাদের লক্ষ্য।

অভিযোজনভিত্তিক অর্থায়নের ক্ষেত্রে তিনি তৃণমূল, সুশীল সমাজ ও স্থানীয় উদ্ভাবনী উদ্যোগগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান। বলেন, “নীতিনির্ধারক ও জনগণের মধ্যে দুইমুখী যোগাযোগ দরকার। অভিযোজন কার্যক্রমে স্থানীয় সরকার ও জনগণকে নেতৃত্বের আসনে বসাতে হবে।

উপদেষ্টা জানান, জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডে সংস্কার আনা এবং সমন্বয় ও অর্থবণ্টনে স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা আনতে নতুন প্ল্যাটফর্ম “বিসিডিপি” চালুর পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।

তিনি গাছ সংরক্ষণ আইন, বিদ্যালয়ভিত্তিক পুনরোপণ কর্মসূচি এবং ভূমি সংরক্ষণ উদ্যোগের অগ্রগতি তুলে ধরেন এবং বলেন, “প্রকৃতিকে সম্মান জানাতে হলে আমাদের মনোভাবেও পরিবর্তন আনতে হবে।

বক্তব্যের শেষে উপদেষ্টা বলেন, “উন্নয়নের ধরণ পরিবর্তন করতে হবে। জলবায়ু সহনশীলতা শুধু টিকে থাকার বিষয় নয়, এটি আমাদের মূল্যবোধ পুনর্বিবেচনার আহ্বান।”

অনুষ্ঠানে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ, নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্টের নির্বাহী পরিচালক এস এম মঞ্জুরুল হান্নান, ব্র্যাকের সিনিয়র ডিরেক্টর কে এ এম মোর্শেদ এবং দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা পরে প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণ করেন এবং প্রদর্শনীর স্টলসমূহ পরিদর্শন করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন