ঢাকা | বুধবার
৯ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
২৫শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনে নিরাপত্তা দিতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সরকার যখনই চায়, তখনই নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি আছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং নিয়ে অনিশ্চিয়তা নেই। দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে।

শনিবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরায় র‍্যাব-১ ও এপিবিএন সদর দপ্তর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা র‍্যাব-১ ও এপিবিএনের কার্যালয়ে গিয়ে বিভিন্ন সারির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তিনি তাদের বিভিন্ন রকম দিক-নির্দেশনামূলক পরামর্শ দেন। পাশাপাশি তিনি দুই কার্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন এবং যেগুলোতে ক্রটি রয়েছে, সেগুলো দ্রুত সমাধানের পরামর্শ দেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মাঠ পর্যায়ের পুলিশের কাছে রাইফেলের মতো অস্ত্র থাকলেও ভারী মারণাস্ত্র থাকবে না। আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) মতো বিশেষায়িত ইউনিটের কাছে থাকবে ভারী অস্ত্র। মারণাস্ত্র মানে বড় ধরনের হাতিয়ারগুলো থাকবে না। আপনারা জানেন, এপিবিএনের রোল আর অন্যান্য পুলিশের রোল কিন্তু এক না। একেকটা ইউনিট একেক রোলের জন্য তৈরি হয়েছে। এপিবিএন, থানা পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সার্বিক উন্নয়নে কাজ করছে সরকার।

তিনি আরো বলেন, আমাদের যদি কখনো যুদ্ধ করতে হয়, তাহলে এরা (এপিবিএন) কিন্তু সেনাবাহিনীর পাশাপাশি যুদ্ধ করবে। অন্যরাও যুদ্ধ করবে, কিন্তু এপিবিএন ফ্রন্টে থাকবে। এজন্য তাদের হাতিয়ার অন্যান্য ইউনিটের চেয়ে ভিন্ন। যেমন ধরেন, নৌ-পুলিশের বেশি দরকার জলযান। আবার ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের প্রয়োজন অন্য রকম সরঞ্জামের।

উপদেষ্টা বলেন, এইবার ঈদে কিন্তু খারাপ কোনো কিছু আপনারা রিপোর্ট করতে পারেননি। এতে বোঝা যায়, আইন-শৃঙ্খলার অনেক উন্নতি হয়েছে। ছোটখাট দু-একটা ঘটনা যে ঘটেনি, তা না। দু-একটি চুরি-ছিনতাই হয়েছে। তবে বড় ধরনের কোনো সমস্যা হয়নি। আপনারা দোয়া করবেন, বড় ধরনের যেন কিছু না হয়।

তিনি বলেন, সামাজিক হত্যাকাণ্ড কীভাবে কমিয়ে আনা যায়, সেজন্য আমরা চেষ্টা করছি। আপনারা লোকজনকে সচেতন করতে পারেন।

উত্তরার ছিনতাইয়ের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অনেক সময় র‍্যাব-পুলিশের পোশাক পরে অনেকে অনেক অপকর্ম করছে, তারাও পার পাবে না। তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্নীতির বিষয়ে আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আপনারা দুটো জিনিস করতে পারেন- দুর্নীতি কীভাবে কমানো যায় এবং মাদক কীভাবে কমানো যায়। আমি বা আমার আইজি সাহেবের যদি কোনো দুর্নীতি পান, আপনারা লিখুন।

সীমান্তে ভারতের পুশ ইন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ফরেন মিনিস্ট্রিতে জানিয়েছি। ভারতের যে হাই কমিশনার আছে, তিনি আমাদের অফিসে এসেছিলেন। আমরা বলেছি, আমাদের নাগরিক যদি অন্য দেশে থাকে, তাহলে তাদের আমরা অবশ্যই নেব; তবে একটা প্রপার চ্যানেলে আসতে হবে। জঙ্গলের ভেতরে ফেলে দেওয়া, কোনো একটা লেকের ওপর ফেলে দেওয়া, নদীর ওপর ফেলে দেওয়া- এসব কিন্তু খুবই অমানবিক কাজ হচ্ছে। আমরা স্ট্রং প্রটেস্ট করেছি। আর তাদের কোনো নাগরিক থাকলে আমরা প্রপার চ্যানেলে পাঠাই।

গুম কমিশনের প্রতিবেদনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়টি জানাতে চাইলে তিনি বলেন, গুম কমিশনের প্রতিবেদনটি আমরা দেখেছি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু স্বার্থান্বেষী কর্মকর্তারা গুম নামক কর্মকাণ্ডে জড়িয়েছিল।

এ সময় আইজিপি বাহারুল আলম, র‍্যাব মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) প্রধান পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ও র‍্যাব-১ এর লে. কর্নেল জাহিদুল করীমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন