ঢাকা | রবিবার
৩০শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১৬ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গুলশানে প্রকাশ্যে যুবককে হত্যার রহস্য উদঘাটন, ২ জন গ্রেপ্তার

রাজধানীর গুলশান থানাধীন গুলশান-১ পুলিশ প্লাজার সামনে ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ী সুমনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনার মূল হোতাসহ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশগ্রহণকারী ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) পটুয়াখালী ও গাজীপুরের টঙ্গীতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে বুধবার (২৬মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে র‌্যাব।

গ্রেপ্তারকৃতদের একজন মধ্যবাড্ডা এলাকার বাসিন্দা মেহেদী মো. ওয়াসির মাহমুদ সাঈদ ওরফে বড় সাঈদ(৫৯)। তিনি ঝালকাঠি সদর থানার সঞ্জয়পুর গ্রামে মৃত এম এ আজিজের ছেলে। র‌্যাবের দাবি, এই হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা সাঈদ।

গ্রেপ্তারকৃত অপরজন মামুন ওরফে বেলাল। তিনি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার মুরাদনগর গ্রামের মৃত আ. কাদেরের ছেলে। র‌্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত সাঈদ ও মুরাদসহ আরো কয়েকজন এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নিয়েছেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানিয়েছে, গুলশান এবং বনানী এলাকার ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ী সুমন মিয়াকে গত ২০ মার্চ রাতে পুলিশ প্লাজার সামনে প্রকাশ্যে কয়েকজন অস্ত্রধারী গুলি করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর সুমনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় গুলশান থানায় একটি হত্যামামলা দায়ের করে সুমনের পরিবার।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘটনার পর র‌্যাব-১, সিপিসি-১ এর একটি দল হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব জানতে পারে মেহেদী নামে একজন মো. ওয়াসির মাহমুদ সাঈদের সাহায্যে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে বিগত কয়েক বছর যাবত গুলশান ও বাড্ডা এলাকায় চাঁদাবাজী করে আসছিল। গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর মেহেদী পালিয়ে যান। পলাতক থেকেই তিনি তার বাহিনীর সদস্য মো. ওয়াসির মাহমুদ সাঈতের মাধ্যমে গুলশান ও বাড্ডা এলাকার চাঁদা সংগ্রহ করতেন। বিন্তু এরই মাঝে অন্য একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ রবিন গ্রুপের হয়ে নিহত সুমন গুলশান বাড্ডা এলাকায় চাঁদাবাজী শুরু করেন। গুলশান এলাকার বিভিন্ন মার্কেটের দোকানে চাঁদাবাজীর বিষয় নিয়ে মেহেদী গ্রুপের সাথে রবিন গ্রুপের সুমনের বিরোধের সৃষ্টি হয়। এই বিরোধের কারণে মেহেদী গ্রুপের প্রধান মেহেদীর নির্দেশে সাঈদ সুমনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

এতে আরও বলা হয়েছে, হত্যাকাণ্ডের ৮-১০ দিন আগে সাঈদ সুমনকে হত্যার উদ্দেশ্যে বিল্লাল ও মামুনের নেতৃত্বে মেহেদী গ্রুপের ৪/৫ জন সন্ত্রাসী দিয়ে একটি কিলার গ্রুপ গঠন করে। মেহেদী গ্রুপের সদস্যরা প্রতিদিন সুমনের উপর নজর রাখা শুরু করে। পরে ২০ মার্চ সন্ধ্যায় মেহেদী গ্রুপের একটি কিলার গ্রুপ সাঈদের বাসায় মিটিং করে এবং তার বাসা থেকে অস্ত্র নিয়ে গুলশান এলাকায় যায়। গুলশান এলাকায় গিয়ে সুমনকে গোপনে খুঁজতে থাকে এবং রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারা সুমনকে গুলশান-১ পুলিশ প্লাজার সামনে ডাক্তার ফজলে রাব্বি পার্কের সামনে বসা অবস্থায় দেখতে পেয়ে গুলি করে। সুমন গুলি খেয়ে দৌড়ে পালানোর সময় সন্ত্রাসীরা তাকে আরো কয়েকটি গুলি করে। এরপর সুমনের মৃত্যু নিশ্চিত করে সন্ত্রাসীরা কৌশলে পালিয়ে যায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন