ঢাকা | শনিবার
১৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১লা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এ বছরই বিশ্বের বৃহত্তম ডিজিটাল ক্যামেরা চালুর প্রস্তুতি

মহাবিশ্ব সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানতে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ডিজিটাল ক্যামেরা তৈরি করা হচ্ছে। এটি দিয়ে মহাবিশ্বের এইচডি ভিডিও ধারণ সম্ভব হবে। ফলে মহাবিশ্বের আরো খুঁটিনাটি জানা যাবে।

চলতি বছরই চিলির অরা অবজারভেটরিতে ক্যামেরাটি স্থাপন করতে কাজ করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

ক্যামেরাটির আয়নার আকার ৮.৪ মিটার। এতে খরচ হয়েছে ১৬৫ মিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি মন্ত্রণালয় এ খরচ দিচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়ায় স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্ল্যাক গবেষণাগারে এটি তৈরি করা হয়েছে।

চিলির অরা অবজারভেটরির ভাইস প্রেসিডেন্ট আলেহান্দ্রো ফোইগট বলেন, ‘আজকাল বিজ্ঞানীরা নির্দিষ্ট কিছু পর্যবেক্ষণ করতে বলেন। কারণ তাদের একটি তত্ত্ব রয়েছে, যা তারা প্রমাণ করতে চান। তাই টেলিস্কোপটি আকাশের একটি নির্দিষ্ট স্থানে, একটি নির্দিষ্ট সময়ে, কয়েক ঘণ্টার জন্য বা কয়েক রাতের জন্য নির্দেশিত করা হয়। আমরা যা করতে যাচ্ছি তা হলো, সব কিছুর ছবি তোলা।

এগুলো আমরা রিয়েল টাইমে দিতে পারব। তখন বিজ্ঞানীরা সেগুলো দিয়ে তাদের নিজস্ব অনুমান ও থিসিস তৈরি করতে সক্ষম হবেন।’ইতিমধ্যে ১৪৪ মেগাপিক্সেলের টেস্ট ক্যামেরা দিয়ে পাওয়া ফল সবাইকে অবাক করেছে। নতুন ক্যামেরার মেগাপিক্সেল হবে তিন হাজার ২০০। ফলে অসাধারণ দৃশ্য দেখা যাবে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে তোলা একটি ছবি দেখাতে ৪০০টি আলট্রা এইচডি টিভি স্ক্রিন লাগবে।
অরা প্রকল্পের সায়েন্টিফিক ডিরেক্টর স্টুয়ার্ট কর্ডার বলেন, ‘আমরা মহাবিশ্বের রঙিন ছবি থেকে এইচডি ভিডিওর দিকে যাচ্ছি, অর্থাৎ সাদাকালোর যুগ পেছনে ফেলে যাচ্ছি। আমরা রঙিন ছবি থেকে সরাসরি এইচডি ভিডিওর দিকে যাচ্ছি।’

টেলিস্কোপটি স্থির পর্যবেক্ষণ থেকে হাজার গুণ গতিশীল পর্যবেক্ষণের দিকে যাবে। অরা অবজারভেটরির নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার হ্যারনান স্টকব্রান্ড বলেন, ‘রাতের পর রাত পাওয়া ছবিগুলো বিশ্লেষণ করে সিস্টেমটি শনাক্ত করতে সক্ষম হবে, কোনো তারা বিস্ফোরিত হলো কি না, এটি সুপার নোভা হয়ে গেল কি না, কিংবা কোনো তারা জ্বলা বন্ধ করে দিল কি না। গ্রহাণুর মতো কিছু পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে কি না, তা-ও জানা যাবে।’

ধারণা করা হয়, বর্তমানে আমরা মহাবিশ্বের মাত্র ৫ শতাংশ সম্পর্কে জানি। ক্যামেরাটি যখন কাজ শুরু করবে তখন বাকি ৯৫ শতাংশ সম্পর্কেও জানা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আলেহান্দ্রো বলেন, ‘আয়না ও ক্যামেরার এই সমন্বিত ব্যবস্থার সুবিধা হলো আপনি খুব দূরে দেখতে পারবেন, অথবা আপনি খুব ক্ষীণ বস্তু দেখতে সক্ষম হবেন, যেগুলো কোনো টেলিস্কোপে দেখা যায় না, মানুষের চোখেতো নয়ই। যেহেতু এটি প্রতি রাতে অনেক দ্রুত চলাচল করবে, তাই এটি অনেক ছবি তুলতে সক্ষম হবে, যেগুলো ১০ বছর ধরে তুলনা করা সম্ভব হবে। ফলে এই বস্তুগুলো কিভাবে পরিবর্তিত হচ্ছে এবং কিভাবে নক্ষত্র ও গ্রহগুলোর গতিবিধি, জীবন ও মৃত্যুতে পরিবর্তন হচ্ছে তা দেখা যাবে। কিভাবে তারা জন্ম নেয়, কিভাবে বিলুপ্ত হয়, কিভাবে তারা কাজ করে ইত্যাদি।’

চলতি বছরেই ক্যামেরাটি চালু করতে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা।

সংবাদটি শেয়ার করুন