মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতিতে এশিয়ার শেয়ার বাজারে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের পর সোমবার সকালে এশিয়ার শেয়ার বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। শেয়ারের দামে পতন হয়েছে বলে জানাচ্ছে অনলাইন বিবিসি। এতে বলা হয়, বিনিয়োগকারীরা সম্ভাব্য বাণিজ্য যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। এশিয়ার প্রধান কোম্পানিগুলোর আয়ে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে ট্রাম্পের শুল্ক নীতি। এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের নীতির বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে কানাডা ও মেক্সিকো। অন্যদিকে ‘পাল্টা প্রতিক্রিয়াশীল ব্যবস্থা’ নেয়ার কথা জানিয়েছে চীন। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় ট্রাম্পের পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ করার প্রতিশ্রুতি জানিয়েছে বেইজিং। এর আগে ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসন এবং মাদক চোরাকারবারি বন্ধ করতে শুল্ক অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয়।
তবে শুল্ক আরোপের ফলে এশিয়ার শেয়ার বাজরে বিরাট পরিবর্তন শুরু হয়েছে। সবগুলো সূচকই নিম্নগামী। বিবিসি বলছে, হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ১ দশমিক ৩ শতাংশ, জাপানের নিক্কেই ২২৫ এর সূচকও ২ দশমিক ৪ শতাংশের নিচে ছিল। দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পির ৩ শতাংশ এবং অস্ট্রেলিয়ার এএসএক্স ২০০ এর ১ দশমিক ৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
পক্ষান্তরে মার্কিন ডলারের উল্লম্ফন হয়েছে। চীনের ইউয়ারে বিপরীতে ডলারের অবস্থান রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। অন্যদিকে কানাডিয়ান ডলার ২০০৩ সালের পর সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছেছে।
আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান কেসিএম ট্রেডের প্রধান বাজার বিশ্লেষক টিম বলেছেন, বিশ্বের দুটি বৃহত্তম অর্থনীতির দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী বাণিজ্য বিরোধের সম্ভাবনা বিনিয়োগকারীদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। ট্রাম্পের পরবর্তী শুল্ক আরোপের তালিকায় কোন কোন দেশ রয়েছে এ নিয়েও বেশ উদ্বিগ্ন বিনিয়োগকারীরা।
সপ্তাহান্তে ট্রাম্প প্রশাসন কর্তৃক শুল্ক নীতি যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারকে লক্ষ্যবস্তু করেছে। তবে এখানেই ক্ষান্ত হবেন না বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। ইতিমধ্যেই ইউরোপিয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। তবে ট্রাম্পের এই নীতির গভীর সমালোচনা করেছেন ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক স্যাক্সোর প্রধান বিনিয়োগ কৌশলবিদ চারু চানানা। সতর্ক করে তিনি বলেছেন, এভাবে শুল্ক আরোপ স্বল্পমেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উপকারী হতে পারে। তবে দীর্ঘমেয়াদে খোদ আমেরিকাকেই ঝুঁকিতে ফেলবে।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। চীনের ওপর দিয়েছেন ১০ শতাংশ। এতে তিন দেশই প্রতিশোধমূলক পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। যা বিশ্বে বাণিজ্য যুদ্ধের ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন এতে বিনিয়োগকারীরা বেশ বিপাকে পড়বেন।