ঢাকার ধামরাইয়ে ১৭ হাজার পাওনা টাকার জন্য গোপাল বাকালি নকুল (৫০) নামের এক পাওনাদারকে হত্যা চেষ্টাসহ তার পুরুষাঙ্গ কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গোপাল সরকার এক মহাজনের বিরুদ্ধে।
দীর্ঘদিন ধরে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল তাদের মধ্যে। পাওনা টাকার জন্য বিভিন্ন সময়ে হত্যার হুমকিও দিতেন গোপাল সরকার। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্ত্রী নিপা বাকালি (৩৮) বাদী হয়ে ধামরাই থানায় ১জন আসামি করেএকটি এজাহার দায়ের করেছেন।
এমন ঘটনা ঘটেছে গত বৃহস্পাতিবার বিকেলে ধামরাই পৌরসভার আমিন মডেল টাউন এলাকায়। ভুক্তভোগী গোপাল বাকালি নকুল স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে আমিন মডেল টাউন এলাকার সাইজুজ্জামান লিমনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। গোপাল বাকালি নকুল মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া থানার বালিয়াটি গ্রামের শ্রীধাম বাকালির ছেলে। গোপাল বাকালি একজন পাইলস ও ক্লোন ক্যান্সারের রোগী।
ভুক্তভোগীর স্ত্রী ও এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী গোপাল বাকালি নকুল দির্ঘদিন ধরে ইসলামপুর কাঁচাবাজারে ব্যবসা করে আসছিলেন। তিনি মহাজন গোপাল সরকারের কাছে থেকে মালামাল ক্রয় করে বাজারে বিক্রি করেন। মহাজন গোপাল সরকার ভুক্তভোগীর কাছে টাকা পাওনা নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। মহাজন গোপাল সরকার ধামরাইয়ের ইসলামপুরের একজন স্থানীয় বাসিন্দা। তিনি পাওনা টাকার জন্য স্থানীয় প্রভাব দেখিয়ে পাওনাদার গোপাল বাকালিকে ভয় ভীতি ও হত্যার হুমকি দিতেন। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার
মহাজন গোপাল সরকার পাওনাদার গোপাল বাকালি নকুল এর ভাড়া বাসায় গিয়ে হুমকি-ধমকি দেন এবং একপর্যায়ে গোপাল সরকারের সাথে থাকা লোক নিয়ে গোপাল বাকালিকে বিদ্যুতের তার দিয়ে গলায় পেঁচিয়ে হত্যা চেষ্টা করেন। পরে গোপাল বাকালির হাত-পা বেঁধে বাসার আলমারির তালা ভেঙে ভুক্তভোগীর চিকিৎসার জন্য রাখা নগদ ৪ লক্ষ টাকা, ৩ ভরি স্বর্নালঙ্কার ও ১২ শত টাকার একটি বাটন ফোন নিয়ে চলে যায় বলে এজাহার ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়। ইসলামপুর এলাকার কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, গোপাল সরকারের চরিত্র অনেক খারাপ। বিভিন্ন সময়ে তার সাথে নারী সংক্রান্ত ঘটনা ঘটেছে। গোপাল সরকারের আপন ভাই তাপস সরকার বলেন, আমার ভাই গোপাল লোক ভালো না।এর আগেও নারী সংক্রান্ত বিষয়ে স্থানীয়ভাবে মিমাংসা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ভক্তভোগী গোপাল বাকালি নকুলের স্ত্রী নিপা বাকালি বলেন, মাত্র ১৭ হাজার পাওনা টাকার জন্য মহাজন গোপাল সরকার এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। আমার স্বামী একজন পাইলস ও ক্লোন ক্যান্সারের রোগী। আমি অফিসে থাকা অবস্থায় ফাঁকা বাড়ি ছিল। আমার দুই ছেলে বাহিরে খেলা করতে চলে গেলে গোপাল সরকার ফাঁকা বাড়িতে আমার স্বামীকে একা পেয়ে আমার স্বামীকে প্রথমে বিদ্যুৎ এর তাড় গলায় পেচিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। পরে আমার স্বামী পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলে এবং ঘরে আলমারিতে থাকা নগদ ৪ লক্ষ টাকা, তিন ভরি স্বর্ণ এবং একটি ১২ শত টাকার বাটন মোবাইল ফোন নিয়ে আসে। আমি বাদি হয়ে থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে গোপাল সরকারের বাড়িতে গিয়ে কাউকেই পাওয়া যায় নি এবং তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম বলেন, “আমরা ভুক্তভোগীর স্ত্রীর কাছ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পেয়েছি। একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের পর প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”