কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর সোনাহাট স্থলবন্দরে আমদানী-রফতানিকারক সমিতির আহ্বায়ক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা বিরাজ করায় উপজেলা জুড়ে ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত উপজেলার সমগ্র এলাকায় সকল প্রকার আগ্নেয়াস্ত্র বহন ও প্রদর্শন, লাঠি বা দেশীয় কোনো অস্ত্র বহন বা প্রদর্শন, যে কোনো ধরনের মাইকিং বা শব্দযন্ত্র ব্যবহার, ৫ (পাঁচ) বা অধিসংখ্যক ব্যক্তির একত্রে চলাফেরা ও সভা সমাবেশ, মিছিল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম ফেরদৌস বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাতে এক আদেশে ১৪৪ ধারা জারি করেন। ইউএনও নিজে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইউএনও স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়েছে, যেহেতু ভুরুঙ্গামারী উপজেলাধীন সোনাহাট স্থল বন্দর এলাকায় ২৮ নভেম্বর একই স্থানে এবং একই সময়ে বিএনপির ২টি গ্রুপের মধ্যে থেকে সভা-সমাবেশ আহ্বান করা হয়েছে এবং উক্ত সমাবেশ ঘিরে সমগ্র ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে এবং এর ফলে আইন-শৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে মর্মে জানা গেছে। যেহেতু ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ হতে পাথর ও কয়লা আমদানি করা হয় এবং সরকারি রাজস্ব আয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে সরকারি স্বার্থ ব্যাঘাত সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সেহেতু সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে আমি মো. গোলাম ফেরদৌস, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, ভূরুঙ্গামারী, কুড়িগ্রাম আমার উপর অর্পিত ক্ষমতাবলে সমগ্র ভূরুঙ্গামারী এলাকায় ২৮ নভেম্বর সকাল ০৮টা হতে রাত ১২টা পর্যন্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ১৮৯৮ এর ১৪৪ ধারা জারি করলাম। এই সময়ে সমগ্র ভূরুঙ্গামারী এলাকায় সকল প্রকার আগ্নেয়াস্ত্র বহন ও প্রদর্শন, লাঠি বা দেশীয় কোন অস্ত্র বহন বা প্রদর্শন, যে কোন ধরনের মাইকিং বা শব্দযন্ত্র ব্যবহার, ৫ (পাঁচ) বা অধিসংখ্যক ব্যক্তির একত্রে চলাফেরা, সভা সমাবেশ, মিছিল ইত্যাদি নিষিদ্ধ থাকবে।’
আদেশ অমান্যকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থলবন্দরের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণত সম্পাদক একেএম ফরিদুল হক শাহিন শিকদার এর নেতৃত্বে ব্যবসায়ীদের একটি অংশ সোনাহাট স্থলবন্দর আমদানি রফতানি কারক সমিতির এক জরুরি সাধারণ সভায় অংশ নিয়ে ৯ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা করেন। খবর পেয়ে কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানা বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী নিয়ে বুধবার রাতে সোনাহাট স্থলবন্দরে উপস্থিত হন। তিনি বৃহস্পতিবার নতুন কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন। পাল্টাপাল্টি কমিটি ঘোষণা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সংঘাত এড়াতে ও শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে।
ইউএনও গোলাম ফেরদৌস বলেন, ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বিএনপির বিবদমান দুই পক্ষ পিছু হটেছে। পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে । বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
আনন্দবাজার আরবি