ঢাকা | বৃহস্পতিবার
২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গৌতম আদানির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে আমেরিকার আদালতে মামলা

আবারও বিশ্ব গণমাধ্যমের খবরে ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানি। তবে কোনো ভালো কারণে নয়। গতবারের মতো এবারও দুর্নীতির অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। জারি করা হয়েছে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা। এমন খবরে আদানি গ্রুপের শেয়ারে বড় ধরনের দরপতন শুরু হয়েছে। মাত্র একদিনেই ভারতীয় ব্যবসায়িক গোষ্ঠীটির ২ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার লোকসান হয়েছে।

২৬৫ মিলিয়ন ডলার ঘুষ কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের একটি আদালতে ভারতীয় আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি গৌতম আদানিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ দায়ের ছাড়াও তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে মার্কিন আদালত।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আদানি গ্রিন এনার্জির জন্য সৌরশক্তি প্রকল্পের একটি কাজ পেতে গৌতম আদানি ও অন্য সাতজন অভিযুক্ত ব্যক্তি ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ২৫ কোটি ডলারের বেশি ঘুষ দেন। এই প্রকল্প থেকে ২০ বছরে তাদের ২০০ কোটি ডলার ফায়দা হওয়ার কথা ছিল। এটি ভারতের বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প।

প্রসিকিউটররা জানান, গৌতম আদানি, তার ভাইপো সাগর আদানি, আদানি গ্রিন এনার্জির একজন নির্বাহী কর্মকর্তা, সাবেক সিইও ভিনিত জৈন ঋণদাতা ও বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে তাদের দুর্নীতিন কথা গোপন করে ৩০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ ও বন্ড সংগ্রহ করেন।

এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে সিকিউরিটিজ জালিয়াতি, সিকিউরিটিজ জালিয়াতির ষড়যন্ত্র এবং গোপন বার্তা জালিয়াতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনেও (এসইসি) গৌতম ও সাগর আদানির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

এক সংবাদ বিবৃতিতে এসইসি জানিয়েছে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে আদানি গ্রিন এনার্জি ৭৫ কোটি ডলার সংগ্রহ করার সময় এই ঘুষ কেলেঙ্কারিতে গৌতম ও সাগর আদানি ছিলেন। এই সময় যুক্তরাষ্ট্রও থেকে সাড়ে ১৭ কোটি ডলার সংগ্রহ করেন তারা।

আদালতের নথির বরাতে রয়টার্স বলছে, গৌতম আদানি ও সাগর আদানির বিরুদ্ধে একজন বিচারক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। প্রসিকিউটররা এই পরোয়ানা বিদেশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কাছে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা করেছেন।

এ বিষয়ে আদানি গ্রুপের প্রতিনিধিরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। এ ছাড়া ভারতীয় সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড (সেবি)সহ ভারতীয় কর্তৃপক্ষও মার্কিন অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে জবাব দেয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রে অভিযোগ দায়ের এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির খবরে তাৎক্ষণিকভাবে আদানির ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যে ধস নেমেছে। মাত্র দুই বছরে দ্বিতীয়বারের মতো বড় ধরনের সংকটে পড়ল আদানি গ্রুপ। তার বছর দুয়েক আগে মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ শেয়ারমূল্য কারচুপির অভিযোগ তুললে এমন সংকটে পড়েছিল আদানি গ্রুপ।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও বন্ডের ব্যাপক দরপতন হয়েছে। এবারের অভিযোগে মূল কেন্দ্রে থাকা প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রিন এনার্জি তাদের ৬০ কোটি ডলারের বন্ড বিক্রি বাতিল করেছে।

আদানি গ্রিন এনার্জির শেয়ারদর ১৭ শতাংশ কমেছে। আদানি গোষ্ঠীর অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর ১০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। শুধু বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) মাকের্ট থেকে ২৮ বিলিয়ন বা ২৮০০ কোটি ডলার মূল্য হারিয়েছে গোষ্ঠীটি। এর ফলে তাদের সামগ্রিক মূলধন কমে ১৪১ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন