সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ঢুকলেই চোখে পড়ছে লাল ব্যাকগ্রাউন্ডের ওপর #wearenahid, যা প্রচার করছেন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের অনুরাগী-সমর্থকরা।
অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা এবং ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা নাহিদ ইসলামের পাশে থাকার এই বার্তা যারা দিচ্ছেন তাদের মধ্যে আছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন সমন্বয়কসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। কারণ নাহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
সম্প্রতি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির (এনআইবি) মহাপরিচালক পদের নিয়োগপত্রে নাহিদ ইসলামের সুপারিশসহ সই করা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘বিষয়টি অসত্য। আমাকে বিতর্কিত করার চেষ্টা হচ্ছে।’নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে পোস্ট করেছেন উপদেষ্টা নাহিদ।
নাহিদ লিখেছেন, ‘১৫ অক্টোবরের নিয়োগ ২২ অক্টোবরই বাতিল করা হয়ে গেছে।’ নাহিদ লিখেছেন, ‘মূলত আওয়ামীবিরোধী ও আন্দোলনের পক্ষের একটি গ্রুপ এই ব্যক্তির সুপারিশ করেছিল। পরবর্তীতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা উনার একাডেমিক এক্সেলেন্সি দেখে এনআইবির এই পদে নিয়োগ দেন। কিন্তু ওই ব্যক্তির রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড জানার পরে সঙ্গে সঙ্গেই উনার নিয়োগ বাতিল করা হয়।’
গত মাসের ঘটনা। বাতিলও করা হয় গত মাসে, যা সকলে অবগত আছেন। তার পরও নাহিদের কপালে কালিমা লেপনের চেষ্টা রাজনৈতিক অপপ্রচার ছাড়া কিছু না বলে অনারাগীদের দাবি।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. আবু সাদিক কায়েম লিখেছেন, ‘আমরা জুলাইয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ছিলাম। নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ যেহেতু ফ্রন্টলাইনে ছিলেন, ফ্যাসিস্টের প্রথম টার্গেটও তারাই। তাদের নিবেদিত লড়াই—নিশ্চিত কাঠগড়া কিংবা মৃত্যু জেনেও আপসহীন রাজপথ আমাদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন ত্বরান্বিত করেছে।’
সাদিক আরও লিখেছেন, ‘মানুষ সব সময় সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হয় না। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে ছাত্র নেতৃত্ব এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি যেটার জন্য হেনস্তার শিকার হতে হবে। আমরা চাই রাষ্ট্রের ইতিবাচক সংস্কার ও নতুন রাজনৈতিক মীমাংসা। ছাত্র নেতৃত্ব আস্থা হারানোর মতো কোনো সিদ্ধান্তও নেয়নি।‘
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ঘটনা নিয়েও নাহিদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে। এর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে নাহিদ ইসলামকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, জবি শিক্ষার্থীরা ‘সব শালারা বাটপার, আর্মি হবে ঠিকাদার’ বলে যখন স্লোগান দিচ্ছেন, তখন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে সচিবালয়ের সামনে যান উপদেষ্টা নাহিদ।
জবি শিক্ষার্থীরা জানান, এই স্লোগান জবি প্রশাসনের উদ্দেশে। নাহিদ ইসলামের উদ্দেশে নয়।
জবি শিক্ষার্থীরা চাইছেন তাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের ঠিকাদারি কাজ সেনাবাহিনীকে দেওয়া হোক।
আকরাম হোসাইন রাজ নামে এক ব্যক্তি ফেসবুকে #wearenahid ব্যবহার করে লিখেছেন, “উচ্চস্বরে ‘সব শালারা বাটপার’ বলার স্বাধীনতা আনার জন্যই নাহিদরা আন্দোলন করেছেন, বারবার নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের নাহিদ ভাই।”
ফরাজি এম ইসমাইল নামে একজন লিখেছেন, ‘আপনি এই প্রজন্মের নিপীড়িত ছাত্রজনতার প্রতীক। নিষ্ঠা, প্রচেষ্টা মানুষকে বড় করে। তার কোনো ঘাটতি মনে হয়নি। ফ্যাসিBadই শাসনের বিরুদ্ধে আপনার ত্যাগ-অবদান সবকিছুই এখনো জ্বলজ্বলে। সবার সব কথা কানে নেওয়া মানে মাথা ভারী করা। আপনি এগিয়ে যান। স্বার্থান্বেষী বাদে, গোটা দেশ আপনাদের সফলতার অপেক্ষায়। আপনাদের সফলতা বা ব্যর্থতার সুফল বা দায় আমাদেরও রয়েছে।’
ছাত্র আন্দোলনে অ্যাক্টিভিস্ট আশরেফা খাতুন তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, বড় ভাই নাহিদ ইসলামকে ভরসা করি। ভাইয়ের ভুলত্রুটির সমালোচনা আমরাই করব, কিন্তু ষড়যন্ত্র করতে দেব না কাউকে। আমি যদি এই আন্দোলনে কাউকে সামনে থেকে দেখে সাহস পেয়ে থাকি সেটা নাহিদ ভাই। পূর্ণ আস্থা রাখছি উনার ওপর।
খালেদ আহমেদ নামে একজন কমেন্ট করেছেন, ‘নাহিদদের অসম্মান পুরা জাতির অসম্মান। নাহিদেরা দুর্বল হলে দুর্বল হবে দেশ। #WeAreNahid. ষড়যন্ত্র এখানেই থামিয়ে দিতে হবে।‘