ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন একাডেমি স্থাপনে ৭০০ একর বনভূমির বন্দোবস্ত বাতিল

অন্তর্বর্তী সরকার দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমি অব পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন স্থাপনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বরাদ্দ করা ৭০০ একর বনভূমির বন্দোবস্ত বাতিল করেছে।

রোববার (১০ নভেম্বর) ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আমিনুর রহমানের সই করা পত্রের মাধ্যমে এ বিষয়ে যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণ করে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য কক্সবাজারের জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

জানা যায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বনভূমির এ বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

এতে জানানো হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমি অব পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন স্থাপনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বন্দোবস্তকৃত কক্সবাজার জেলার সদর উপজেলার ঝিলংজা মৌজার বিএস-১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত বিএস-২৫০০১ নম্বর দাগের ‘পাহাড়’ শ্রেণির ৪০০ একর ও বিএস-২৫০১০ নম্বর দাগের ‘ছড়া’ শ্রেণির ৩০০ একরসহ মোট ৭০০ একর জমি রক্ষিত বনের গেজেটভুক্ত হওয়ায় উক্ত বন্দোবস্ত এতদ্বারা নির্দেশক্রমে বাতিল করা হয়েছে।

এদিকে এ বিষয়ে গত ২৯ আগস্ট একটি আধা-সরকারি পত্র প্রেরণ করেছিলেন পরিবেশ উপদেষ্টা। সে সময় উপদেষ্টার পাঠানো ওই আধা-সরকারি পত্রে বলা হয়, বন্দোবস্তকৃত এলাকা ১৯৩৫ সাল থেকে বন আইন ১৯২৭ এর ২৯ ধারার আওতায় রক্ষিত বন হিসেবে ঘোষিত। এই ২১৪৫ দশমিক ২ একর ভূমির অংশে গর্জন, চাপালিশ, তেলসুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা ছাড়াও হাতি, বানর, বন্য শুকরসহ বিভিন্ন প্রাণীর আবাসস্থল রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় ২০১১-১২ ও ২০১২-১৩ সালে এই বনভূমিতে বনায়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

এ ছাড়া, রেকর্ডে ‘রক্ষিত বনের’ বিষয়টি উল্লেখ না থাকায় এ বিষয়ে মামলা করে বন বিভাগ। পাশাপাশি ভূমির বন্দোবস্ত বাতিল চেয়ে একটি রিট মামলাও হাইকোর্টে দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে হাইকোর্ট বিভাগ এ বন্দোবস্তের বিষয়ে স্থগিতাদেশ দেন, যা আপিল বিভাগেও বহাল রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৯ সালে ঝিলংজা ইউনিয়নকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করে বনভূমির গাছ কাটাসহ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন নিষিদ্ধ করা হয়। বরাদ্দ করা ৭০০ একর রক্ষিত বনও এই সংকটাপন্ন এলাকার অন্তর্ভুক্ত। সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদ ছাড়াও জাতিসংঘ জীববৈচিত্র্য সনদে বন সংরক্ষণের অঙ্গীকার রয়েছে। তাই দেশের বনভূমির পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকায় এ বন্দোবস্ত জনস্বার্থ বিরোধী।

সংবাদটি শেয়ার করুন