রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের জানিয়েছে, দেশে জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫৪৮৫টি। এতে নিহত হয়েছেন ৫৫৯৮ জন এবং আহত ৯৬০১ জন।
রবিবার (২০ অক্টোবর) রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংগঠনটি বলছে, নিহতের মধ্যে নারী ৬৭৭ জন, শিশু ৭২৯ জন।
নিহতদের মধ্যে ২০৪১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ১৯২৪ জন, যা মোট নিহতের ৩৪.৩৬ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৭.২১ শতাংশ।
দুর্ঘটনায় ১১২১ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২০ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৬৮৮ জন, অর্থাৎ ১২.২৯ শতাংশ।
বছরের প্রথম ৯ মাসে ৮৩টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১২৪ জন নিহত, ১২৫ জন আহত এবং ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। আর ২৪৩টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২২৭ জন নিহত এবং ২২৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।
দুর্ঘটনার যানবাহনভিত্তিক নিহতের চিত্র;দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৯২৪ জন (৩৪.৩৬ শতাংশ), বাস যাত্রী ২৯৩ জন (৫.২৩ শতাংশ), পণ্যবাহী যানবাহনের আরোহী (ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি ইত্যাদি) ৪২০ জন (৭.৫০ শতাংশ), প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স-জিপ আরোহী ২৯৫ জন (৫.২৬ শতাংশ), থ্রি-হুইলার যাত্রী (সিএনজি-ইজিবাইক-অটোরিকশা-অটোভ্যান ইত্যাদি) ১০৯৭ জন (১৯.৫৯ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-করিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-টমটম) ২৭৮ জন (৪.৯৬ শতাংশ) এবং বাইসাইকেল-রিকশা আরোহী ১৭০ জন (৩.০৩ শতাংশ) নিহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন; রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৮৪৯টি (৩৩.৭১ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ২১৩৪টি (৩৮.৯০ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৭৭১টি (১৪.০৫ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে, ৬৭০টি (১২.২১ শতাংশ) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৬১টি (১.১১ শতাংশ) দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।
দুর্ঘটনার ধরন; দুর্ঘটনাগুলোর ১২০৪টি (২১.৯৫ শতাংশ) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২৩৬৯টি (৪৩.১৯ শতাংশ) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১১৪৮টি (২০.৯২ শতাংশ) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৬৪৯টি (১১.৮৩ শতাংশ) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১১৫টি (২.০৯) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহন; দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে পণ্যবাহী যানবাহন (ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান-ড্রামট্রাক ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি তেলবাহী ট্যাংকার-বিদ্যুতের খুঁটিবাহী ট্রাক-সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী ট্রাক ইত্যাদি) ২৩.১৪ শতাংশ, যাত্রীবাহী বাস ১০.২৫ শতাংশ, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-জিপ ৪.৭৬ শতাংশ, মোটরবাইক ২০.৭৫ শতাংশ, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান ইত্যাদি) ১৬.৪৯ শতাংশ, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নসিমন-করিমন-ভটভটি-মাহিন্দ্র-টমটম) ৫.৯১ শতাংশ, বাইসাইকেল-রিকশা ২.২০ শতাংশ এবং অজ্ঞাত যানবাহন ১৬.৪৬ শতাংশ।
দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা; দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ১০ হাজার ৬৭৯টি। বাস ১০৯৫, পণ্যবাহী যানবাহন (ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রলি-লরি-ট্রাক্টর-ড্রামট্রাক-সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী ট্রাক ইত্যাদি) ২৪৭২, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-জীপ ৫০৯, মোটরসাইকেল ২২১৬, থ্রি-হুইলার ১৭৬১ (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৬৩২ (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-টমটম ইত্যাদি), বাইসাইকেল রিকশা ২৩৬ এবং অজ্ঞাত গাড়ি ১৭৫৮টি।
দুর্ঘটনার সময় বিশ্লেষণ; সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে ভোরে ৩১০টি (৫.৬৫ শতাংশ), সকালে ১৪৬৫টি (২৬.৭০ শতাংশ), দুপুরে ১১০২টি (২০.০৯ শতাংশ), বিকালে ৮৬৫টি (১৫.৭৭ শতাংশ), সন্ধ্যায় ৫২৪টি (৯.৫৫ শতাংশ) এবং রাতে ১২১৯টি (২২.২২ শতাংশ)।
দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান; দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারী পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২১.৩৬ শতাংশ, প্রাণহানি ২৪.৩৬ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে দুর্ঘটনা ১৪.৮৭ শতাংশ, প্রাণহানি ১৩.৮৪ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে দুর্ঘটনা ১৯.১০ শতাংশ, প্রাণহানি ২০.৪৮ শতাংশ, খুলনা বিভাগে দুর্ঘটনা ১৩.২৭ শতাংশ, প্রাণহানি ১২.৬৮ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে দুর্ঘটনা ৬.৪৫ শতাংশ, , প্রাণহানি ৬.১০ শতাংশ, সিলেট বিভাগে দুর্ঘটনা ৫.৮১ শতাংশ, প্রাণহানি ৫.৩৪ শতাংশ, রংপুর বিভাগে দুর্ঘটনা ১০.৯৩ শতাংশ, প্রাণহানি ১০.০৭ শতাংশ, এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৮.১৬ শতাংশ, প্রাণহানি ৭.০৭ শতাংশ ঘটেছে। ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। এ বিভাগে ১১৭২টি দুর্ঘটনায় ১৩৬৪ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ৩১৯টি দুর্ঘটনায় ২৯৯ জন নিহত হয়েছেন।