ঢাকা | মঙ্গলবার
২২শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৬ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাহস থাকলে শেখ হাসিনা আদালতে বিচারের মুখোমুখি হবেন: অ্যাটর্নি জেনারেল

অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগে কথায় কথায় তার বিরোধীদের সাহস থাকলে দেশে এসে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার আহ্বান জানাতেন। এখন তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আমি আশা করি শেখ হাসিনা দেশে এসে বিচারের মুখোমুখি হবেন।

রোববার (২০ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টের অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

মো. আসাদুজ্জামান আরো বলেন, শেখ হাসিনাকে ফিরিরে আনতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ রয়েছে। ইন্টারপোলের সহযোগিতা নিয়েও শেখ হাসিনাকে ফিরে আনা হতে পারে।

এদিকে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের রিভিউয়ের আবেদন নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। এতে ফের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা ফিরলো সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে। রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ৬ বিচারপতির বেঞ্চ এই রায় দেন।

এর আগে সকাল ৯টা ২০ মিনিটের দিকে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

গত ১৫ আগস্ট বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন শুনানির দিন ধার্য করা হয়। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।

আদালতে রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তিনি আদালতে বলেন, অনেকদিন ধরে ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে রয়েছে। শুনানি হওয়া প্রয়োজন।

এর আগে বেশ কয়েকবার সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন কার্যতালিকায় আসলেও শুনানি হয়নি।

প্রসঙ্গত, দেশের প্রথম সংবিধানে সংসদের হাতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা রাখা হয়। তবে ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীতে রাষ্ট্রপতিকে এ ক্ষমতা দেয়া হয়। পরবর্তীতে আবারও পঞ্চম সংশোধনীতে বিচারক অপসারণে নিষ্পত্তির ভার দিতে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়। এরপর পঞ্চম থেকে পঞ্চদশ সংশোধনী পর্যন্ত বিচারপতি অপসারণ নিয়ে আর নতুন কোনো সংশোধনী আসেনি। তবে ২০১৪ সালে ষোড়শ সংশোধনীতে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয় জাতীয় সংসদ। তৎকালীন প্রধান বিচারপতির এস কে সিনহার তৎপরতায় হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করা হয়। পরে আওয়ামী লীগ সরকার এর রিভিউতে যায়। যা এখনো একই অবস্থাতেই আছে। ফলে কার্যত কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তা কীভাবে নিষ্পত্তি হবে সেটি নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়। এই অবস্থায় গত বুধবার (১৭ অক্টোবর) দলান্ধ ও দুর্নীতিবাজ বিচারপতিদের অপসারণে সুপ্রিম কোর্টে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে নজিরবিহীন আন্দোলন হয়।

যদিও এর আগেই ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তবে মোট ৩০ বিচারপতিকে অপসারণের দাবি করে ছাত্ররা। সেদিনই সিদ্ধান্ত হয়, ২০ অক্টোবর চূড়ান্ত শুনানি হবে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতার রিভিউ নিয়ে।

সংবাদটি শেয়ার করুন