সারাদেশে সেপ্টেম্বর মাসে ৩৯২ সড়ক দুর্ঘটনায় ৪২৬ জন নিহত ও ৮১৩ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৬৪ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৭৯ জন নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ৪২ শতাংশ।
সোমবার (৭ অক্টোবর) বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে বলে জানানো হয়েছে। নিহত ৪২৬ জনের মধ্যে নারী ৬১ জন ও শিশু ৫৩ জন রয়েছে। দুর্ঘটনায় ৯৭ পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ২২.৭৬ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫৪ জন, অর্থাৎ ১২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এই সময়ে ৮টি নৌ-দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত, ৪ জন আহত এবং ২ জন নিখোঁজ রয়েছেন। ১৭টি রেল ট্রাক দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত এবং ৯ জন আহত হয়েছেন।
নিহতের পরিসংখ্যানে বলা হয়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৭৯ জন (৪২ শতাংশ), বাসের যাত্রী ২৫ জন (৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ), ট্রাক-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি আরোহী ২২ জন (৫ দশমিক ১৬ শতাংশ), প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস আরোহী ২৪ জন (৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ), থ্রি-হুইলার যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান) ৬৩ জন (১৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু) ৬ জন (১ দশমিক ৪০ শতাংশ) এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা আরোহী ১০ জন (২ দশমিক ৩৪ শতাংশ) নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন সম্পর্কে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৬২টি (৪১ দশমিক৩২ শতাংশ) জাতীয় মহাসড়কে, ১৪৪টি (৩৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ) আঞ্চলিক সড়কে, ৪৭টি (১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ) গ্রামীণ সড়কে ৩৪টি (৮ দশমিক ৬৭ শতাংশ) শহরের সড়কে ৫টি (১ দশমিক ২৭ শতাংশ) অন্যান্য স্থানে সংঘটিত হয়েছে।
সড়কে দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৮২টি (২০ দশমিক ৯১ শতাংশ) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬৯টি (৪৩ দশমিক ১১ শতাংশ) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৯৪টি (২৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ) পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেওয়া, ৪১টি (১০ দশমিক ৪৫ শতাংশ) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৬টি (১ দশমিক ৫৩ শতাংশ) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
উল্লেখ্য, দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৬৩২টি। এরমধ্যে বাস ৯৮টি, ট্রাক ১০৬টি, কাভার্ডভ্যান ১৮টি, পিকআপ ২১টি, ট্রাক্টর ১১টি, ট্রলি ৪টি, লরি ১০টি, ড্রাম ট্রাক ৭টি, তেলবাহী লরি ২টি, রোড রোলার ১টি, মাইক্রোবাস ১৬টি, প্রাইভেটকার ১৫টি, অ্যাম্বুলেন্স ৫টি, পাজেরো ২টি, মোটরসাইকেল ১৭৩টি, থ্রি-হুইলার ৯৬টি (ইজিবাইক- সিএনজি- অটোরিকশা- অটোভ্যান- লেগুনা), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ১৮টি (নসিমন- ভটভটি- আলমসাধু- চান্দের গাড়ি- মাহিন্দ্র- হ্যালোবাইক), বাইসাইকেল-রিকশা-রিকশাভ্যান ১৩টি এবং অজ্ঞাত যানবাহন ১৬টি। এ ছাড়া দুর্ঘটনার সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ভোরে ঘটেছে ৫ দশমিক ১০ শতাংশ, সকালে ২৬ শতাংশ, দুপুরে ১৮ দশমিক ৬২ শতাংশ, বিকেলে ১৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ, সন্ধ্যায় ৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ এবং রাতে ২৮ দশমিক ৮২ শতাংশ। আর ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১২৪টি দুর্ঘটনায় ১২৮ জন নিহত হয়েছেন। বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম ১৫টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত হয়েছেন। একক জেলা হিসেবে চট্টগ্রাম জেলায় ৩১টি দুর্ঘটনায় ২৮ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম শরীয়তপুর, পটুয়াখালী, সুনামগঞ্জ ও জামালপুর জেলায়। এ চার জেলায় কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটলেও প্রাণহানি ঘটেনি। রাজধানী ঢাকায় ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৯ জন নিহত ও ১৩ জন আহত হয়েছেন।