গতকালের সহিংসতার পর খাগড়াছড়িতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। বুধবার (২ অক্টোবর) সারাদিন ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও সকাল থেকে শহরের কিছু দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে। তবে মানুষের মাঝে আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠা বিদ্যমান রয়েছে।
জেলা শহরের মহাজন পাড়া, পানখাইয়া পাড়া সড়কের চা দোকান, আনন্দ নগর রাস্তার মাথায় এখনো গতকালের সহিংসতার ক্ষত সুস্পষ্ট রয়েছে। সড়কের উপর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র পড়ে রয়েছে।
গতকাল এক শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় পাহাড়ি-বাঙালির মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়। সহিংসতায় মহাজন পাড়া এলাকায় প্রায় ১০টি দোকানে ভাংচুর করা হয়। একটি কাপড়ের দোকান থেকে লুটপাটেরও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এছাড়াও শহরের পানখাইয়া পাড়া সড়কের কেএসটিসি হাসপাতালসহ অন্তত ২০ দোকানে ভাংচুর লুটপাট করেছে দুর্বৃত্তরা।
পানখাইয়া পাড়া সড়কের ব্যবসায়ী সুশীল মারমা বলেন, “কাল দুপুরের পর থেকে পরিস্থিতি খারাপ দেখে দোকান বন্ধ করে রেখে ছিলাম। আজ সকালে এসে দেখি দোকান ভাংচুর হয়ে গেছে। বেছে বেছে পাহাড়ি দোকান ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা”।
মহাজন পাড়া এলাকার মুদি দোকানদার স্বপন চাকমা বলেন, “উপজেলার দিক থেকে অনেক মানুষ এসে দোকানে হামলা করে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে”।
কেএসটিসি হাসপাতালের ম্যানেজার মো. পারভেজ ইসলাম বলেন, “দুপুর থেকে হাসপাতাল বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। তারপরও দুর্বৃত্তরা হাসপাতালে হামলা করে ভাংচুর করেছে”।
মগের চায়ের দোকান এলাকার জয়া কালেকশনের মালিক জয়া চাকমা জানান, “সকালে দোকানে এসে দেখি দোকানের কোনো চিহ্ন নেই। শুধু ভাঙা গ্লাসগুলো পড়ে আছে। দোকানে কোনো মালামাল নেই”।
খাগড়াছড়ি সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, “খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা এবং পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। পরিস্থিতি এখন অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসছে। বাজারের কিছু দোকানপাট খুলতে শুরু করেছে। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুলিশের টহল রয়েছে”।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজেরে ইন্সট্রাক্টর (বিল্ডিং মেইনটেন্যান্স) ও বিভাগীয় প্রধান শিক্ষক আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানাকে স্কুলের অধ্যক্ষের রুমে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার জেরে পাহাড়ি ও বাঙালি সম্প্রদায়ের মাঝে সহিংসতা শুরু হয়।