সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গড়ে উঠা প্ল্যাটফর্ম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র ৯ দফা দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা এবং শিক্ষার্থী ও দেশের জন্য কল্যাণকর সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে নো ভ্যাট অন এডুকেশন এবং মুভমেন্ট ফর ওয়ার্ল্ড এডুকেশন রাইটসের (এমডব্লিউইআর)। একইসঙ্গে অন্যায়ভাবে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে মুক্তি দেওয়ারও ব্যবস্থা নিতে আহ্বান করা হয়েছে।
শনিবার (০৩ আগস্ট) সংগঠন দুটির সংগঠকদের মধ্যে এক অনলাইন মিটিংয়ে এ দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি মেইল পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন এমডব্লিউইআরের আহ্বায়ক ফারুক আহমাদ আরিফ ও যুগ্ম আহ্বায়ক এনায়েত উল্লাহ কৌশিক। এদিন গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আমরা লক্ষ্য করেছি যে, শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার চেয়েছিল। সেটি না করে বরং সরকারের পক্ষ থেকে অবজ্ঞা ও তাচ্ছিল্যপূর্ণ বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের হেয় করা হয়েছে। আদালতের ওপর চাপিয়ে দিয়ে নির্বাহী বিভাগ দায়িত্বমুক্ত হতে চেয়েছে; মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত দেশে যা কখনো কাম্য ছিল না। তা ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর ও বিভিন্ন দায়িত্বশীল মন্ত্রী এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অবজ্ঞামূলক নানা বক্তব্যের কারণে বর্তমানে আন্দোলন এই পর্যায়ে এসেছে। সেইসঙ্গে মাসব্যাপী চলা আন্দোলনে রাষ্ট্রীয় মদদে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, দলীয় রাজনৈতিক কর্মী ও অজ্ঞাতদের দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা-মামলা ও গ্রেপ্তার অব্যাহত রাখা হয়েছে।
গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী- আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন; যার বেশিরভাগই গুলিতে। এসব ঘটনা সাধারণ মানুষের হৃদয়েও রক্তক্ষরণ হয়েছে। আন্দোলনকে ঘিরে যেসব ঘটনা ঘটে গেছে, সেজন্য সরকারের সকল পর্যায়ের ব্যক্তিদের আত্মসমালোচনা ও কার্যক্রমের পর্যালোচনারও আহ্বান জানাচ্ছি।
এ অবস্থায় নো ভ্যাট অন এডুকেশন এবং মুভমেন্ট ফর ওয়ার্ল্ড এডুকেশন রাইটসের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ৫ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হল:
১. ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র ৯ দফা দাবি সরকারকে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে।
২. আন্দোলনে হামলা-গুলিতে নিহত ও আহতের ঘটনায় জাতিসংঘের অধীনে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩. আন্দোলনকে ঘিরে নিহতদের পরিবারকে সরকারিভাবে কর্মসংস্থান, অর্থায়ন এবং আহতদের সার্বিক চিকিৎসা ব্যয় সরকারকে বহন করতে হবে।
৪. যেসব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য আন্দোলনকারীদের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করেছে এবং গুলি চালিয়ে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছে, তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে চাকরিচ্যুত ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। মিথ্যা মামলা পরিহারসহ গ্রেপ্তার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে মুক্তি দিতে হবে। তা ছাড়া প্রবাসে এ আন্দোলনে সমর্থন দিতে গিয়ে দণ্ডিত বাংলাদেশিদের মুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. দেশের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।