সবার জীবনে কোনো না কোনো সময় মনের প্রশান্তির জন্য সঙ্গীতের আশ্রয় নিয়ে থাকে। সঙ্গীত হতে পারে জীবনের দাওয়াই, বিষন্নতাকে মোকাবেলা করার হাতিয়ার, মনের অজানা ভয়কে দূর করার সাহস এবং মনকে প্রশান্তি দেয়ার মতো নিখাঁদ বিনোদন।
বর্তমানে যুব সমাজে যেখানে মাদকের দিকে ঝুঁকছে তা ভাবিয়ে তুলছে সুশীল সমাজকে। যুব সমাজকে সুপথে ফেরাতে খেলা ও সঙ্গীতের কোন বিকল্প নেই। আজকের কলেজ পড়ুয়া তরুণ তরূণীরাও নানান ধরণের অবসাদে ভুগে থাকেন। অনেকেই মাদকের পথে পা বাড়ায় আবার অনেকেই গভীর ডিপ্রেশনে গিয়ে বেছে নেন আত্মহত্যার পথ। যুব সমাজ এসব সমস্যা থেকে থেকে সঙ্গীতের মাধ্যমে পেতে পারেন। ভবিষ্যৎ সুন্দর প্রজন্ম তৈরি করতে সঙ্গীতের ভূমিকা অপরিসীম।
এমন অনুধাবন থেকেই জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক সালেহীন তানভীর গাজী নিয়েছেন নতুন এক উদ্যোগ। জয়পুরহাট জেলার ৩২টি ইউনিয়ন এবং ৫টি পৌরসভার মানুষদের সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ জমাতে ‘সেরাকণ্ঠ জয়পুরহাট ২০২৪’ এর আয়োজন করেছেন। ১৫মে হতে শুরু হয়েছে এ প্রতিযোগীতা। প্রতিযোগীদের ০২টি বিভাগে ভাগ করা হয়। ‘ক’ বিভাগ ০৮ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত এবং ‘খ’ বিভাগ ১৯ বছরের উর্দ্ধরা যে কেউ অংশ নিতে পারবেন।
জয়পুরহাট জেলা প্রশাসন, জেলা ও উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি, জয়পুরহাট এর আয়োজনে ‘গানে গানে সুরে সুরে, আওয়াজ তোলো প্রাণে প্রাণে’ স্লোগানে ‘সেরাকন্ঠ জয়পুরহাট ২০২৪’ এর আয়োজন করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে এ প্রতিযোগিতা শেষ হয়েছে। এখন উপজেলা পর্যায়ে প্রতিযোগিতা শুরুর অপেক্ষায়। ইউনিয়ন পর্যায়ে যারা ইয়েস কার্ড পেয়েছেন তারা উপজেলা পর্যায়ে এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিবেন। ইউনিয়ন পর্যায়ে ১২ কেন্দ্রে প্রতিযোগিতায় অংশ নেন এক হাজার ১৭৩ জন। এদের মধ্যে ইয়েস কার্ড পেয়েছেন ১৬৩ জন। মজার বিষয় হচ্ছে এসব প্রতিযোগিতায় ৮ বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৭০ বছরের বয়স্করাও অংশ নিয়েছেন। অডিশন পর্বে ছাত্র, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, শ্রমিক, কৃষক, গৃহিনীসহ সকলেই অংশগ্রহণ করেন। যা জেলার সংস্কৃতি অঙ্গণে ব্যাপক উচ্ছ্বাস, উদ্বীপনার সৃষ্টি করে।
সর্বশেষ ২৯ জুন ক্ষেতলাল উপজেলা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ‘ক’ বিভাগে ০৫ জন এবং ‘খ’ বিভাগে ০৭ জন জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য মনোনীত হন। মনোনীতদের মাঝে জয়পুরহাট জেলার সুযোগ্য জেলা প্রশাসক সালেহীন তানভীর গাজী, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ বিচারকমন্ডলীদের উপস্থিতিতে সনদপত্র ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। পাঁচবিবি, আক্কেলপুর এবং সদর উপজেলার প্রতিযোগিতা এ মাসেই অনুষ্ঠিত হবে।
জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক সালেহীন তানভীর গাজী জানান, বাংলা সঙ্গীতের ঐতিহ্য হাজার বছরের। বাংলা সঙ্গীত বিশ্বের সঙ্গীতাঙ্গণে তার স্বতন্ত্র প্রকৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষা করে চলছে। সঙ্গীত একজন কলুষিত মানুষের মনকে শুদ্ধতায় ভরিয়ে তুলতে পারে। সঙ্গীতের মাধ্যমেই প্রকাশ হতে পারে একটি জনপদের আবেগ, আকাঙক্ষা, প্রেম। সঙ্গীতের কোন বিকল্প নেই, সঙ্গীতের বিকল্প কেবলই সঙ্গীত।
জেলা প্রশাসক সালেহীন তানভীর গাজী আরো বলেন, শিশুকে ঘুম পাড়ানোর জন্য মায়েরা সঙ্গীতের আশ্রয় নিয়ে থাকেন। এ চর্চা অনেক পুরানো কালের। একটি শিশু ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতকে প্রশান্তি হিসেবে জেনে আসে। অনেক উন্নত দেশে তাই এখন ‘মিউজিক-থেরাপি’ শিক্ষা দেয়া হচ্ছে।