ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চরফ্যাশনে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ঘূর্ণিঝড় রেমাল..

ভোলার চরফ্যাশনে ঘূর্ণিঝড় রেমাল এর প্রভাবে বেড়েছে জোয়ারের পানির উচ্চতা। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারের পানি স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রবিবার (২৬ মে) দুপুরে অন্তত চার ফুট বেড়েছে বলে জানান স্থানীয় নদীর তীরের বাসিন্দারা।

এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে চরফ্যাশনে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আকাশ কালো মেঘে রুপ নিয়েছে। এবং প্রচন্ড ঝড়ো হাওয়া বইছে। এতে ভয়াবহ আবহাওয়া বিরাজ করছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন উপকূলের নদীতীরের বাসিন্দারা।

এছাড়াও ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়ো বাতাসে চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা ভেঙে পড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ও সঞ্চালন লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে গত শনিবার ২৫ মে সন্ধ্যা থেকে রবিবার ২৬ মে দুপুর পর্যন্ত বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে পুরো চরফ্যাশন।

এদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় বিঘ্ন হচ্ছে টেলিযোগাযোগসেবাও। অধিকাংশ এলাকায় বন্ধ রয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট। এছাড়া দেখা দিয়েছে মোবাইল নেটওয়ার্ক জটিলতা।

রবিবার দুপুরে সরেজমিন উপজেলার বেতুয়া লঞ্চ ঘাট, হাজারীগঞ্জ ও জাহানপুর ইউনিয়নসহ বেশকিছু এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, ঘুর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বেড়িবাঁধের বাইরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ঘাটে নোঙ্গর করা প্রায় শতাধিক ছোট-বড় নৌকা ও মানুষের ঘরবাড়ি, মাছের ঘের, পুকুর তলিয়ে গেছে।

উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চরপাতিলা এলাকার বাসিন্দা নোমান বলেন, আমাদের এখানে বেড়িবাঁধের অবস্থা একেবারে নাজুক। ঘুর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে বেড়িবাঁধ তলিয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। তাই আমরা আতঙ্কে রয়েছি।

চরফ্যাশন জোনাল অফিসার মো.মিজানুর রহমান জানান, শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে জেলার অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ বন্ধ রাখা হয়েছে। সেই সাথে চরফ্যাশনেও ঝড়ের গতি বেশি। বিভিন্ন জায়গায় গাছ পড়ছে। এসব কারণে পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বাতাসের গতি কমে গেলে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হবে।

এ বিষয়ে চরফ্যাশন পানি উন্নয়ন বোর্ড-০২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো.হাসানুজ্জামান বলেন, গত কয়েক দিনের তুলনায় রবিবার জোয়ারের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিপদসীমা অতিক্রম করেনি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নওরীন হক জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় উপকূলীয় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় আমরা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। উপজেলায় ১৫৬ টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এবং প্রায় ৩০০ এর ওদিক স্বেচ্ছাসেবী মোতায়ন করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, ফায়ার সার্ভিস, পল্লী বিদ্যুৎ অফিস ও সিভিল ডিফেন্সকে প্রস্তুত রাখাসহ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ২৬ টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। উপকূলীয় মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার মজুদ রাখা হয়েছে। এছাড়াও স্বেচ্ছাসেবী ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যেমে টিম গঠন করে স্থানীয় এলাকায় জনগনকে সচেতন ও সর্তক থাকতে কন্ট্রোল রুমের মধ্যে দিয়ে প্রচার প্রচারণা জোরদার করা সহ উপকূলের বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে আনার প্রস্তুতি চলছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন