ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এসএসসির ফল: খাতা চ্যালেঞ্জ করা যাবে সোমবার থেকে

এসএসসির ফল খাতা চ্যালেঞ্জ করা যাবে সোমবার থেকে

চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে গড় পাসের হার ৮৩.০৪ শতাংশ। প্রকাশিত ফলাফলে কারও কাঙ্ক্ষিত ফল না এলে সে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন বা খাতা চ্যালেঞ্জ করতে পারবেন।

আগামীকাল সোমবার (১৩ মে) থেকে চলবে ১৯ মে পর্যন্ত।

আন্তঃশিক্ষাবোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকার বলেন, আগামীকাল সোমবার থেকে পুনর্নিরীক্ষণ আবেদন শুরু হবে, চলবে ১৯ মে পর্যন্ত।

তিনি জানান, ফলাফলে কেউ সংক্ষুব্ধ বা অসন্তুষ্ট হলে তিনি চাইলে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবেন। অনলাইনে মাধ্যমে ঘরে বসেই তিনি এ আবেদন করতে পারবেন। পরে বোর্ড তার খাতা যাচাই বাছাই করে দেখে আবেদন নিষ্পত্তি করবেন।

যেভাবে আবেদন করতে হবে

শুধুমাত্র টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইল ফোন থেকে পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করা যাবে। আবেদন করতে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে RSC বোর্ডের নামের প্রথম তিন অক্ষর রোল নম্বর বিষয় কোড লিখে Send করতে হবে 16222 নম্বরে।

ফিরতি এসএমএ-এ আবেদন বাবদ কত টাকা কেটে নেওয়া হবে তা জানিয়ে একটি পিন দেওয়া হবে। এতে সম্মত থাকলে মেসেজ অপশনে গিয়ে RSC Yes PIN Contact Number (যে কোনো অপারেটর) লিখে Send করতে হবে 16222 নম্বরে।

ফল পুনর্নিরীক্ষণে ক্ষেত্রে একই এসএমএস-এর মাধ্যমে একাধিক বিষয়ের জন্য আবেদন করা যাবে। সে ক্ষেত্রে কমা (,) দিয়ে বিষয় কোড আলাদা লিখতে হবে। যেমন ঢাকা বোর্ডের একজন শিক্ষার্থী বাংলা ও ইংরেজি দুটি বিষয়ের জন্য টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে লিখবে RSC Dha Roll Number <Space) 101, 102, 107, 108। ফল পুনর্নিরীক্ষণে প্রতিটি পত্রের জন্য ১২৫ টাকা করে কেটে নেওয়া হবে।

পুনর্নিরীক্ষণে খাতার চারটি বিষয় দেখা হয়

শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, পুনর্নিরীক্ষণ করলে একজন শিক্ষার্থীর খাতা পুনরায় মূল্যায়ন করা হয় না। পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন হওয়া উত্তরপত্রের চারটি দিক দেখা হয়। এগুলো হলো, উত্তরপত্রের সব প্রশ্নের সঠিকভাবে নম্বর দেওয়া হয়েছে কি না, প্রাপ্ত নম্বর গণনা ঠিক রয়েছে কি না, প্রাপ্ত নম্বর ওএমআর শিটে উঠানো হয়েছে কি না এবং প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী ওএমআর শিটের বৃত্ত ভরাট করা হয়েছে কি না। এসব পরীক্ষা করেই পুনর্নিরীক্ষার ফল দেওয়া হয়। এই চারটি জায়গা কোনো ভুল হলে তা সংশোধন করে নতুন করে ফল প্রকাশ করা হয়।

এছাড়াও,

এবার গণিতে খারাপ ফল:

বিষয়ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সব বিভাগের কমন আটটি বিষয়— বাংলা, ইংরেজি, পদার্থ, রসায়ন, তথ্য ও প্রযুক্তি, পৌরনীতি ও হিসাব বিজ্ঞানে গড় পাসের হার ৯৬ শতাংশের বেশি। বিপরীতে সাধারণ ১০টি শিক্ষা বোর্ডে (কারিগরি বাদে) গণিতে গড়ে পাস করেছে ৯১.১৮ শতাংশ। এটা সার্বিক ফল খারাপ হওয়ার একটি কারণ। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষার্থীরা গণিতে সবচয়ে খারাপ করেছে। এই বোর্ডে পাস করেছে মাত্র ৮৭.৯৬ শতাংশ। এছাড়া, সিলেট শিক্ষা বোর্ডে পদার্থ বিজ্ঞান ও আইসিটিতে যথাক্রমে ৯৩.৬১ শতাংশ ও ৯২.৯২ শতাংশ পাস করেছে।

সিলেট ও কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে খারাপ ফল:

ফল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এবার সিলেট শিক্ষা বোর্ডের ফল অস্বাভাবিক খারাপ হয়েছে। এই শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭৩.৩৫ শতাংশ। এই শিক্ষা বোর্ডে খারাপ ফলের কারণে সার্বিক ফল নেতিবাচক দেখাচ্ছে। বোর্ডে সবচেয়ে খারাপ ফল হয়েছে তথ্য ও প্রযুক্তিতে। এ বিষয়ে পাস করেছে ৯২.৯২ শতাংশ। এরপর গণিত ও পদার্থ বিজ্ঞানে। এই দুই বিষয়ে পাসের হার ৯৩.৬১ শতাংশ। পাসের হারে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডে গড় পাসের হার ৭৯.২৩ শতাংশ। এখানে পাসের হার কমার অন্যতম কারণ গণিতে অস্বাভাবিক খারাপ ফল। এ বোর্ডে গণিতে পাস করেছে ৮৭.৯৬ শতাংশ। এটি সব শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফল

উল্লেখ্য, দেশের ১২ ক্যাডেট কলেজে পাসের হার শতভাগ, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৯৮ জন। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে। আইএসপিআর জানায়, এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ১২টি ক্যাডেট কলেজ থেকে সর্বমোট ৬০০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫৯৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাসের হার শতভাগ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯৯.৬৭ শতাংশ শিক্ষার্থী। বিগত ২০২৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় ১২টি ক্যাডেট কলেজের জিপিএ-৫ প্রাপ্তির হার ছিল ৯৯.৮৩ শতাংশ।

প্রসঙ্গত, এবার ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৮৯.৩২ শতাংশ, রাজশাহীতে ৮৯.২৫ শতাংশ, যশোরে ৯২.৩২ শতাংশ, কুমিল্লায় ৭৯.২৩ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৮২.৮০ শতাংশ, বরিশালে ৮৯.১৩ শতাংশ, দিনাজপুরে ৭৮.৪০ শতাংশ, সিলেটে ৭৩.৩৫ শতাংশ ও ময়মনসিংহে ৮৪.৯৭ শতাংশ। এ থেকে দেখা যায়, যশোর বোর্ডে পাসের হার এ বছর সবচেয়ে বেশি। আর সর্বনিম্ন পাসের হার সিলেট বোর্ডে।

সংবাদটি শেয়ার করুন