আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে সতর্কবার্তা হিসেবে।
এমন তীব্র গরমে বাড়ে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি। শরীরে পানি ও লবণের পরিমাণ কমে গেলে হিট স্ট্রোক হয়। এই গরমে সুস্থ থাকতে চাইলে সচেতন থাকার বিকল্প নেই।
আইসিডিডিআর,বি থেকে প্রকাশিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে জানানো হয়েছে। জেনে নিন হিট স্ট্রোকের লক্ষণ, প্রতিরোধে করণীয় ও বিশেষজ্ঞ পরামর্শ।
হিট স্ট্রোকের লক্ষণ:
- মাথা ব্যথা
- চোখে ঝাপসা দেখা
- মাংসপেশির ব্যথা ও দুর্বলতা
- শ্বাস- প্রশ্বাস দ্রুত হওয়া
- ত্বক লালচে হয়ে ওঠা
- গরম লাগলেও ঘাম কম হওয়া
- বমি হওয়া
- হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া
- হাঁটতে কষ্ট হওয়া
হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিতে যারা বেশি:
- শিশু
- বয়স্ক
- প্রতিবন্ধী ব্যক্তি
- শ্রমজীবী ব্যক্তি যেমন রিকশাচালক, নির্মাণশ্রমিক, কৃষক
- যাদের ওজন বেশি
- যারা শারীরিকভাবে অসুস্থ বিশেষ করে যাদের হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপ আছে
হিট স্ট্রোক প্রতিরোধে করণীয়:
- দিনের বেলায় বাইরে কম বের হওয়ার চেষ্টা করুন। রোদ এড়িয়ে চলুন
- বাইরে বের হলে সঙ্গে ছাতা রাখুন। এছাড়া টুপি বা কাপড় দিয়ে মাথা ঢেকে রাখার চেষ্টা করুন
- হালকা রঙের ঢিলেঢালা সুতি পোশাক পরুন
- প্রচুর পরিমাণে পানি খান
- সহজে হজম হয় এমন সহজপাচ্য খাবার খান, বাসি বা খোলা খাবার খাবেন না
- দিনের বেলা একটানা শারীরিক পরিশ্রম করবেন না
- সম্ভব হলে একাধিকবার পানির ঝাপটা দিন বা গোসল করুন
- প্রস্রাবের রঙ হলুদ হলে পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দিন
- ঘরের পরিবেশ যেন অতিরিক্ত গরম বা ভ্যাপসা না হয় সেদিকে লক্ষ রাখুন
- বেশি অসুস্থ বোধ করলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ দিয়েছেন। বারডেম জেনারেল হাসপাতাল চিকিৎসক ডা.কামরুজ্জামান নাবিল জানান, গরমে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায়। সেজন্য বাইরে বের হলে পানি নিয়ে বের হওয়া জরুরি। শরীরে পানির ঘাটতি কমাতে নিয়মিত পানি খাওয়ার বিকল্প নেই।। পাশাপাশি পানিজাতীয় খাবারও খেতে হবে। পানি বেশি পরিমাণে পাওয়া যায় এমন ফল তরমুজ খেতে পারেন নিয়মিত। প্রচণ্ড গরমে চলার পথে ফ্রিজের ঠান্ডা পানি খাওয়া অনুচিত। কারণ অনেক সময় হঠাৎ ঠান্ডা পানি খেলে গলা ব্যথাসহ বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে পারে। বাইরে থেকে ঘেমে ঘরে ফিরেও সঙ্গে সঙ্গে হিমশীতল পানি খাওয়া ঠিক নয়। বাচ্চা, বয়স্ক এবং ক্রনিক রোগের রোগীদের এই গরমে বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা খুব জরুরি।