গরমে ঘামাচির পরই ছত্রাকজনিত চর্মরোগ বেশি হতে দেখা যায়। ঘাম ও ভেজা শরীর ছত্রাক জন্মানোর জন্য উপযোগী। যারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে সচেতন, তাদের এসকল রোগ সাধারণত কম হয় বা হয় না।
তাই এ সময় সাবধান থাকা জরুরি। চলুন জেনে নেওয়া যাক গরমে কোন কোন চর্মরোগ বাড়ে-
ছত্রাকজনিত চর্মরোগ প্রধানত তিনটি- দাউদ, ছুলি ও ক্যানডিডিয়াসিস। এ ছত্রাক প্রজাতির সবই ত্বকের বাইরের অংশকে আক্রমণ করে।
দাউদ: ত্বকে গোলাকার চাকার মতো দাগ হচ্ছে দাউদ। মধ্যখানের চামড়া স্বাভাবিক গোল দাগের পরিধিতে ছোট ছোট গোটা দেখা যায়, চুলকালে সেখান থেকে কষ ঝরতে থাকে। শরীরের ভাজে, মাথা, হাত-পা ও নখে এ দাউদ হতে পারে। এটি খুবই ছুঁয়াছে।
ছুলি: এ রোগে ত্বকে হালকা বাদামি বা সাদা গোলাকৃতির দাগ দেখা যায়। এতে ত্বক সাদা দেখা যায় বলে অনেকেই শ্বেতী ভাবেন।
ক্যানডিডিয়াসিস: এ রোগে শিশু, বৃদ্ধ, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বা যারা দীর্ঘদিন ধরে স্টেরয়েড ওষুধ খাচ্ছেন, যাদের ত্বকের ভাঁজে পানিতে বা ঘামে ভেজা থাকে তাদের এ রোগটি বেশি হয়। যারা সবসময় পানি নাড়াচাড়া করেন, তাদের আঙুলের ফাঁকে হাতের ভাঁজে, শিশুর জিহ্বায়, মহিলাদের যৌনপথে ও গর্ভবতীরা এতে বেশি আক্রান্ত হন।
চিকিৎসা মূলত নির্ভর করে আক্রমণের স্থান ও তীব্রতার ওপর। এ ধরনের চর্মরোগ অনেক ক্ষেত্রে রেসিস্ট্যান্স হয়ে যায় বলে নতুন ধরনের এন্টি ফাদাল ট্যাবলেট ও মলম ব্যবহার করতে হয়। রোগ থেকে আরোগ্য সম্ভব, তবে দীর্ঘমেয়াদি ওষুধ খেতে হয়। এ জাতীয় সমস্যায় অবশ্যই বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
এছাড়া, ঘামাচি খুবই নিয়মিত একটি সমস্যা। গরমে ঘামাচির সমস্যা বাড়ে। এমনিতে সবারই ঘামাচি হতে পারে। তবে সবার সামনে এটি অস্বস্তিদায়কই বটে।
ব্রণ: ব্রণের সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। তবে গরমে এই সমস্যা বাড়ে। কারণ ঘাম ও ধুলো মিলেমিশে ত্বকের ছিদ্রে জমতে থাকে।
একজিমা: তাপমাত্রার পারদ যত বাড়তে থাকে, ততই একজিমার সমস্যা বেড়ে যায়। একজিমা এই সময় নতুন করে বাড়তে পারে।
শুষ্ক ত্বকের সমস্যা: গরমে ডিহাইড্রেশন বেশি হয়। তাই যাদের ত্বক শুষ্ক, তাদের ত্বক আরও শুকিয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। এজন্য এ সময় পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে।
সান এলার্জি-সানবার্ন: অনেকেরই এই সমস্যা রয়েছে। গ্রীষ্মের সূর্যের তাপে তা আরও বেড়ে যায়। আবার সানবার্ন হলে ত্বকে ট্য়ান পড়ে। এক্ষেত্রে ত্বকের খোলা অংশ কালচে হয়ে পড়ে। তাই রেদে যাওয়ার আগে সান স্ক্রিন ব্যবহার করা মাস্ট।
ত্বকের ক্যানসার: শুনতে অবাক লাগলেও এটি সত্যি। কারণ ক্রান্তীয় অঞ্চলে রোদের তীব্রতা অনেকটাই। যে কারণে অবিরত গায়ে রোদ লাগলে স্কিন ক্যানসারের ভয় আছে। সূত্র: এবিপি লাইভ
বিশেষজ্ঞরা বলেন, চিকিৎসার প্রথম ধাপ হচ্ছে রোগ নির্ণয় করা। রোগ সঠিকভাবে নির্ণয় হলে শুধুমাত্র সময়ের ব্যবধানে সুস্থ্য হন রোগী। এ জন্য প্রাথমিকভাবে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হয়। সাধারণ মানুষ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে না গিয়ে গ্রামের ফার্মেসী এবং ভূয়া ডাক্তারের চিকিৎসা নেন বলে বেশী অর্থের অপচয় এবং কষ্টে ভোগেন।