ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আখাউড়ায় জমে উঠেছে ঈদের বাজার

আখাউড়ায় জমে উঠেছে ঈদের বাজার

পবিত্র ঈদুল ফিতরের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। ঈদকে কেন্দ্র করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার সর্বত্র জমজমাট হয়ে উঠেছে কেনাকাটা। সেইসাথে মার্কেট আর বিপণীবিতানগুলো সেজেছে নতুন সাজে। প্রতিটি মার্কেটে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পোশাকে ভরে উঠেছে। শোভা পাচ্ছে বাহারি রং আর ডিজাইনের পোশাক। জমজমাট বেচাকেনা হওয়ায় প্রতিটি মার্কেটে যেন তিল ধরার ঠাঁই নেই। পরিবারের সদস্য আর স্বজনদের চাহিদা মেটাতে পছন্দের পোশাকের খোঁজে ছুটছেন তারা এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে।

এদিকে এবারের ঈদকে সামনে রেখে উপজেলার মার্কেটগুলো দখল করে আছে দেশিয় পোশাকের পাশাপাশি ভারতীয় এবং পাকিস্তানি পোশাক। এরমধ্যে মধ্যে নারীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে আলিয়া কাট, নায়রা কুর্তি, আঘানূর থ্রিপিস,মারিয়াবী ও ইত্যাদি। এবার রোজার শুরু থেকেই কেনা বেচা শুরু হওয়ায় ব্যবসায়ীরা বেজায় খুশি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,পৌর শহরের সড়ক বাজারের মটর ষ্ট্যান্ড মার্কেট, সিটি কর্নার মার্কেট, সরকার প্লজা, গোল্ডেন প্লাজা, সিঙ্গাপুর মার্কেট, চৌধুরী কমপ্লেক্স, খান টাওয়ারসহ বিভিন্ন মার্কেটে নারী পুরুষের উপচে পড়া ভিড়। চলছে জমজমাট কেনা বেচা।

এবারের ঈদে তরুণীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে, আলিয়া কাট, নায়রা, ঘারারা ও সারারা, নূরস, আঘানূর, মারিয়াবি, পার্সি, দিল্লি বুটিকস, ছানাছাফিনাসহ নানা নামের থ্রিপিস। ওইসব নারীদের কাছে বেশী বিক্রি হচ্ছে।

তাছাড়া শোভা পাচ্ছে স্কাট, টপস, থ্রিপিচ, জামদানি শাড়ি, বেনারশি, কাতান, সিল্ক, জর্জেট জয়পুরি, ছেলেদের নবাবী পাঞ্জাবী, ফতুয়া, টি শার্ট পেন্ট এবং ছোট ছেলে মেয়েদের জন্য বাহারি ডিজাইনের তৈরী পোশাক, জামদানি বেনারশি, কাতান, সিল্ক, জর্জেট জয়পুরি শাড়ী।

চৌধুরী মার্কেটের ব্যবসায়ী মো: মাহমুদ বলেন এবার ভারতীয় বিভিন্ন ব্রান্ডের থ্রিপিস বেশী বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশি ও পাকিস্তানি থ্রিপিস বিক্রি হচ্ছে। আমরা ভারতীয় থ্রিপিস ৩ হাজার থেকে উপরে ৭ হাজার টাকায় বিক্রি করছি। তিনি আরও বলেন, রোজার শুরু থেকে বেচাকেনা ভালো হলেও ঈদ যতই এগিয়ে আসছে ততই বেচাকেনা বাড়ছে। দেশি বিদেশি পণ্যের ভালো চাহিদা রয়েছে। তবে এবার চাহিদার শীর্ষে রয়েছে ভারতীয় পোশাক।

সড়ক বাজার এলাকার ব্যবসায়ী মো: আবু ছায়েদ মিয়া জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ঈদের কেনা কাটা রোজা শুরু থেকেই জমে উঠেছে। দোকানে ক্রেতাদের চাহিদানুযায়ী নিত্য নতুন বাহারি ডিজাইনের পোশাক আনা হয়েছে। ক্রেতাদের ভিড় থাকায় সকাল ৯ টা থেকে রাত ৮ টা পযর্ন্ত দোকান খোলা রাখা হয়। দিন দিন বেচা কেনা বৃদ্ধি পাওয়ায় খুবই খুশি।

মদিনা বস্ত্রালয়ের মো: আইনুল ইসলাম জানান, এই ঈদকে কেন্দ্র করে রোজার আগেই থ্রপিচ, জামদানি শাড়ি, বেনারশি, কাতান, সিল্ক বেডশিট, পর্দার কাপড়, লুঙ্গী ,থান কাপড়সহ নানা প্রকারের মালামাল উঠানো হয়েছে। গত কয়েক বছরের তুলণায় এবার বেচা বিক্রি ভালো হচ্ছে বলে জানায়।

পৌর শহরের কলেজ পাড়া এলাকার গৃহিণী আসমা আক্তার বলেন, এবার ঈদে তার মেয়ের পছন্দ ভারতীয় আলিয়া কাট ড্রেস। বেশ কয়েকটি মার্কেটে ঘুরে কয়েকটি ড্রেস দেখে পরে ৪ হাজার টাকায় আলিয়া কাট কিনেছি। এই ড্রেস কিনতে পেরে মেয়ে মহাখুশি।

মো: আলমগীর হোসেন বলেন, অনেক ঘুরে দেখে ছেলের জন্য শার্ট ও প্যান্ট স্ত্রীর থ্রি পিচ এবং দুই মেয়ের জন্য আলিয়া কাট ও নায়রা কুর্তি কিনে দেওয়া হয়েছে। কারণ মেয়েদের এই দুটি ড্রেস অনেক পছন্দ। এটা ছাড়া অন্য কোন ড্রেস তারা কিনবে না। মেয়েকে খুশি রাখতে কেনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন এবার ঈদের পোশাকের দাম তুলনামূলক অনেক বেশি।

গৃহিণী লাকী আক্তার বলেন, ছেলে ও মেয়ের জন্য ঈদ পোশাক কিনতে বাজারে আসা। অনেক পোশাক দেখেছি কিন্তু মনে হচ্ছে পোশাকের অনেক দাম। অবশেষে ৩ হাজার ৫শ টাকা দিয়ে একটি থ্রিপিচ আর ছেলের জন্য জিন্স প্যান্ট আর গেঞ্জি কেনা হয়েছে । এবার অনেক আগ থেকেই দোকানে ভিড় বেড়ে যাওয়ায় আগেবাগে কেনা হয়েছ। কারণ গত বছর ভিড়ের কারণে পোশাক কিনতে খুবই কষ্ট হয়েছে। তাই এবার আগে আসা।

মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি মার্কেটের উপচেপড়া ভিড়। অনেক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে মায়ের জন্য শাড়ি, মেয়ের জন্য সারারা ঘারারা ও ছেলের জন্য শার্ট ও পাঞ্জাবি কেনা হয়েছে। তবে এবার দাম তুলনামূলক অনেক বেশী বলে জানায়।

এদিকে ঈদে গজ কাপড়ের কদর কমেনি। বেশী ভাগ নারীই নিজেদের মনের মতো করে পছন্দের নকশা তৈরী করে গজ কাপড় কিনে পোশাক বানাচ্ছেন। এজন্যই এখন গজ কাপড়ের দোকানে উপচে পড়া ভিড়। একরঙ্গা, চিকেন জর্জেট,মাখন সিল্ক, ক্রাশড চায়না জর্জেট, টিসুসহ বিভিন্ন রকমের গজ কাপড় বিক্রি হচ্ছে দোকানগুলোতে। তাছাড়া জুতা,চুড়ি, কসমেটিকস আর ফুটপাতের দোকান গুলোতে সমান তালে স্বল্প আয়ের লোকজন কেনা কাটা করছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন