নীলফামারীর সৈয়দপুর বিমানবন্দরের ১৫২টি জীবন্ত মেহগনি গাছ পানির দরে বিক্রি করা হয়েছে। নিলাম দরপত্রের নামে কতৃপক্ষের সঙ্গে যোগসাজস করে সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিয়েছে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। বর্তমান বাজার মূল্যে ওইসব গাছের মূল্য কমপক্ষে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা। বেশ কয়েকজন কাঠ ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে গাছগুলোর বাজার মূল্যের এই তথ্য মিলেছে।
স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী স্বপন চন্দ্র রায় বলেন, বিমানবন্দর চত্বরের মেহগনি গাছগুলো প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ বছর বয়সী। ফলে গাছগুলো পুরোপুরি পুষ্ট হয়েছে। এমন গাছ অত্যন্ত মূল্যবান। আর মেহগনি গাছের কাঠের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। সহসাই এমন পরিপক্ক গাছ মিলে না। যার কারণে বিক্রয়কৃত ওই গাছগুলো অনায়াসেই ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকায় বিক্রি হতো। তার মতে মাত্র ৬ লাখ টাকায় গাছগুলো বিক্রি করায় সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে!
এ বিষয়ে মুঠোফোনে কথা হয় সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবস্থাপক সুপ্লব কুমার ঘোষের সঙ্গে। তিনি বলেন সব নিয়ম কানুন মেনে জীবন্ত গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে। বিমানবন্দরে পার্কিংয়ের জায়গা সম্প্রসারণ করতেই এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নিলাম দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমেই ১৫২টি গাছ ৬ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।
একটি সূত্রের অভিযোগ পূর্ব পরিকল্পিত যোগসাজশে এতো অল্প দর হাকা হয়েছে এতগুলো গাছের। নিলামের বাইরে মূল দামের অর্থ ভাগাভাগি হয়েছে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। এতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও ক্রেতা লাভবান হলেও সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাথে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটেছে। অথচ সঠিক দামে বিক্রি করা হলে তা দেশের রাজস্বে যুক্ত হতো। কিন্তু দূর্নীতি করায় বিপুল অর্থ ব্যক্তি বিশেষের পকেটে ঢুকেছে।
সৈয়দপুর শহরের পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতা আশরাফুল আলম বলেন, উন্নয়নের নামে জীবন্ত গাছ কাটা কোনভাবেই উচিত নয়। এতে করে প্রাণিকুলের বেঁচে থাকার অক্সিজেনের জায়গায় বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়বে। হুমকির মুখে থাকবে মানব সমাজ। তার মতে বিমানবন্দর কতৃপক্ষের উচিত ১৫২টি গাছের বদলে কমপক্ষে ৫০০টি গাছ নতুন করে রোপণ করা। কিন্তু কতৃপক্ষ যে আদৌ এমন উদ্যোগ নিবে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন।