ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিদেশে কারাগারে আটক ৯৩৭০ বাংলাদেশি, বেশি সৌদি আরবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বিদেশে কারাগারে আটক ৯৩৭০ বাংলাদেশি, বেশি সৌদি আরবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কারাগারে ৯ হাজার ৩৭০ বাংলাদেশি শ্রমিক-প্রবাসী আটক আছেন বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি বন্দি আছেন সৌদি আরবের কারাগারে।

সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরীর লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন। এসময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বহির্বিশ্বের কারাগারে আটকদের বিষয়ে মিশনগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী পর্তুগালে একজন, মিশরে ছয়জন, ইতালিতে ৮১ জন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ৩৮৫ জন, কোরিয়ায় ছয়জন, শ্রীলঙ্কায় তিনজন, কাতারে ৪১৫ জন, লিবিয়ায় নয়জন, স্পেনে ১৯ জন, হংকংয়ে ১২২ জন, সিঙ্গাপুরে ৬৬ জন, ব্রুনাইয়ে ১৬ জন, চীনের বেইজিংয়ে ১৮৪ জন, কুনমিংয়ে সাতজন, আবুধাবিতে ৪০৪ জন, ইন্দোনেশিয়ায় ৪৯ জন, সৌদি আরবে ৫ হাজার ৭৪৬ জন, মালয়েশিয়ায় ২১৯ জন, আলজেরিয়ায় একজন, থাইল্যান্ডে চারজন, লেবাননে ২৮ জন, গ্রিসে ৪১৪ জন, ইরাকে ২১৭ জন, তুর্কিতে ৫০৮ জন, মিয়ানমারে ৩৫৮ জন, জাপানে দুইজন, জর্ডানে ১০০ জন আটক রয়েছেন।

এসময় বিদেশের কারাগারে আটক প্রবাসীদের মুক্তির ব্যাপারে সরকারের পদক্ষেপ ও তা বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত বছরের জুলাই থেকে চলতি মাস পর্যন্ত মোট এক হাজার ২২৬ বাংলাদেশিকে লিবিয়া থেকে, ফ্রান্স ও ইউরোপের অন্যান্য দেশের জেলখানা থেকে ৫১ জনকে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে।

এছাড়াও ভারত, মিয়ানমার ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের জেলখানা থেকে আরও এক হাজার ৯৫০ জনকে ফেরত আনা হয়েছে। হাছান মাহমুদ বলেন, বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাসের কর্মকর্তারা নিয়মিতভাবে কারাগারে আটক বাংলাদেশি কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাদের দ্রুত মুক্তির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট জেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করেন। বিভিন্ন দেশে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগে আটক শ্রমিক-প্রবাসী কর্মীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ দ্রুততার সঙ্গে সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট থানা ও পাবলিক প্রসিকিউশন অফিসের সঙ্গে সর্বদা যোগাযোগ রাখা হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জেলখানায় আটক প্রবাসীকর্মীদের আদালত কর্তৃক বিচারকালীন সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাসের একজন প্রতিনিধি বা আইন সহকারী কোর্টে উপস্থিত থেকে ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে সহায়তা করে থাকে। বিভিন্ন অভিযোগে আটক শ্রমিক বা প্রবাসী কর্মীদের পরিবারের চাহিদা মোতাবেক সংগ্লিষ্ট দেশের আইনজীবী-ল’ ফার্মের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন ও ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে দূতাবাস সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করেন। কারাগারে আটক শ্রমিক বা প্রবাসী কর্মীদের বিশেষ ও সাধারণ ক্ষমার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগ তদবির করা হয়।

কারাগারে আটক শ্রমিক-প্রবাসী কর্মীদের সাজার মেয়াদ শেষ হলে তাদের অতিদ্রুত দেশে প্রেরণের জন্য দূতাবাসের পক্ষ থেকে বিশেষ ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করা হয় ও টিকিট ক্রয় করা হয়। আর্থিক অভিযোগে আটক শ্রমিক বা প্রবাসী কর্মীদের আর্থিক দায় পরিশোধ ও দেশে প্রেরণের নিমিত্ত সংশ্লিষ্ট দেশের বিভিন্ন দাতব্য সংস্থা ও দানশীল ব্যক্তিদের সাথে দূতাবাস যোগাযোগ করে থাকে। এছাড়াও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের দণ্ড মওকুফের জন্য বাদীদের সঙ্গে দূতাবাসসমূহ সবসময় যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে। প্রয়োজনে রাষ্ট্রপ্রধানের পক্ষ থেকে মার্জনার অনুরোধ সম্পর্কিত সংশ্রিষ্ট দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কূটনৈতিক পত্র প্রেরণ করে থাকে।

বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ক্ষেত্রে ভিকটিমের পরিবারের সঙ্গে আদালতের মাধ্যমে সমঝোতা করে ব্লাডমানি/রক্তপণ পরিশোধপূর্বক মৃত্যুদণ্ড মওকুফকরণের ব্যবস্থা করে। দৃতাবাস প্রবাসে জেলে বন্দী বাংলাদেশিদের সেবাসমূহ প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট দেশের পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র এবং বিচার বিভাগের সাথে নিয়মিত কূটনৈতিক যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে।

সংবাদটি শেয়ার করুন