ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে এইডস আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড

দেশে এইডস আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড

দেশে গত এক বছরে ১২৭৬ জন নতুন এইডস আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন। আর একই সময় মৃত্যু হয়েছে ২৬৬ জনের। বাংলাদেশে এইডস রোগী শনাক্ত হওয়ার পর এক বছরে আক্রান্ত ও মৃত্যুর এটাই সর্বোচ্চ সংখ্যা।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) মহাখালীতে বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের জাতীয় যক্ষ্মা, কুষ্ঠ ও এইডস নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি।

এ বছর আক্রান্তদের মধ্যে এক হাজার ১১৮ জন বাংলাদেশি নাগরিক। বাকি ১৫৮ জন কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে আটকে পড়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা। উক্ত অনুষ্ঠানে এ বছরের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জাতীয় যক্ষ্মা, কুষ্ঠ ও এইডস নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. মাহফুজুর রহমান সরকার। তিনি জানান, গত বছর ( ২০২২সালে) সারা দেশে ৯৪৭ জন এইডস রোগী শনাক্ত হওয়ার কথা জানানো হয়েছিল। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছিল ২৩২ জনের।

অনুষ্ঠানে সার্বিক চিত্র তুলে বলা হয়েছে, এক বছরে আক্রান্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৩৪২ জন রোগী ঢাকায়। এছাড়া চট্টগ্রামে ২৪৬, রাজশাহীতে ১৭৫, খুলনায় ১৪১, বরিশালে ৭৯, সিলেটে ৬১, ময়মনসিংহে ৪০ এবং রংপুর জেলায় ৩৪ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে গত এক বছরে। তাদের মধ্যে ৮৫০ জন পুরুষ ও ২৭৮ জন নারী। ৯ জন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ গত এক বছরে এইডস আক্রান্ত হয়েছেন। উক্ত অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাইদুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর এবং আবদুন নূর তুষার উপস্থিত ছিলেন।

এইডস আক্রান্তদের মধ্যে পুরুষ যৌনকর্মীর সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া পুরুষ সমকামীদের মধ্যেও এই রোগ ছড়াচ্ছে। এ বছর যারা আক্রান্ত হয়েছে তাদের মধ্যে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ। ডা. মো. মাহফুজুর রহমান সরকার বলেন, নারী যৌনকর্মীদের মধ্যে এইডস আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে কম। পুরুষ যৌনকর্মী এবং পুরুষ সমকামীদের মধ্যে এই রোগের প্রবণতা বেড়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি যারা ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরায় মাদক গ্রহণ করে।

বাংলাদেশ অনেক রোগ নির্মূল বা নিয়ন্ত্রণে সফল হলেও এইডস নিয়ন্ত্রণে থমকে আছে উল্লেখ করে ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম বলেন, এইডস নির্মূলে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসায় আরও বেশি জোর দিতে হবে। পাশাপাশি রোগটি যেন না ছড়ায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, আক্রান্তদের দূরে সরিয়ে রাখা নয়। সরকার এইডসের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা, ওষুধসব সব ধরনের সেবা দিচ্ছে। আমাদের এখানে অস্ত্রোপচারসহ চিকিৎসায় রি-ইউজেবল অনেক কিছু ব্যবহার করা হয়। ওই জিনিসগুলো জীবানুমুক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। নইলে দেখা যাবে একজন নির্দোষ ব্যক্তি যিনি একটি কলোনস্কপি, এন্ডোস্কপি বা যে কোনও একটা পরীক্ষা করাতে এসে আক্রান্ত হয়ে গেলেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ১৯৮৯ সালে প্রথম এইডস রোগী শনাক্ত হয়। তখন থেকে এ পর্যন্ত ১০ হাজার ৯৮৪ জন এইডস রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আর মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ৮৬ জনের। তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ধারণা, বাংলাদেশে এইচআইভি ভাইরাস বহনকারী মানুষের সংখ্যা ১৫ হাজারের বেশি।

সংবাদটি শেয়ার করুন