শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কারো প্রতি পক্ষপাতিত্ব নেই

অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও প্রতিশ্রুতি আছে, সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে সহায়তায় বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক

অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনারও প্রতিশ্রুতি আছে, সেই প্রতিশ্রুতি পূরণে সহায়তায় বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি বলে জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার বিষয়ক আন্ডার-সেক্রেটারি উজরা জেয়া।

তিনি বলেন, ভিসা পলিসি হচ্ছে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। কোনো দলের প্রতি তাদের কোনো পক্ষপাতিত্ব নেই। তারা একটা নিরপেক্ষ, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন চান।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এসব কথা বলেন উজরা জেয়া। বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করে এসব কথা জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের সময় আরও ছিলেন দেশটির দক্ষিণ ও মধ্য-এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু ও ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।

প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, সুষ্ঠু নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন করা আমার অঙ্গীকার। সব সময় বলে আসছি অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন আমরা করেছি, আগেও করেছি।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘ছাত্রজীবন থেকে আমি এবং আমার পরিবার সব সময় মানুষের অধিকারের জন্য লড়াই করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য, মানুষের ভোটের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করেছি।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি আরও বলেন, আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব। জনগণ তাদের প্রতিনিধি বাছাই করবে—জনগণের এ অধিকার আদায়ে তার দল সব সময় সংগ্রাম করেছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি অতীতে বিএনপি কীভাবে ভোট কারচুপি করেছে। আমরা সংগ্রাম করে সেটি পরিবর্তন করেছি। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স এটা আমরা চালু করেছি।’

আরও পড়ুনঃ  মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের উপরে নয়

বিগত দিনে বিএনপির আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৩-১৫ সালে বিএনপি ও তাদের মিত্রদের নৃশংসতা, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং অগ্নিসন্ত্রাস করে, তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ৫০০ জন নিহত হয়েছে।

বিভিন্ন সময় হামলার শিকার হওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘হত্যার উদ্দেশে বারবার আমার ওপর হামলা হয়েছে।’ ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে তাকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে, সেখানে নেতা-কর্মী, সমর্থকরা মানবপ্রাচীর তৈরি তার প্রাণ বাঁচিয়েছিল।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব জানান, সাক্ষাতে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কথা বলেন উজরা জেয়া। রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন এবং শরণার্থীদের সঙ্গে কথা বলার কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানান মার্কিন আন্ডার-সেক্রেটারি। রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমন্বিত প্রচেষ্টা জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিচালন ব্যয়ের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে বলে জানান উজরা জেয়া। বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন মার্কিন আন্ডার-সেক্রেটারি উজরা।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের দুটি এলাকায় বাংলাদেশ বর্তমানে ১ মিলিয়নের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানব পাচার, অসামাজিক কর্মকাণ্ড চলছে, যেটি বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে জানিয়ে শ্রমিক ইস্যুতে আলোচনায় উজরা জেয়া বলেন, শ্রমিকদের কল্যাণে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ করবে এবং বাংলাদেশকে সহায়তা করবে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ব্যক্তিগতভাবে মালিকদের চাপ দিয়ে শ্রমিকদের বেতন ও অন্যান্য সুবিধা বাড়িয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ  বিশ্ববাজারে কমেছে স্বর্ণের দাম, কমতে পারে দেশেও

সাক্ষাতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরান।

সংবাদটি শেয়ার করুন