ঢাকা | শুক্রবার
২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বান্দরবানের থানচিতে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ

বান্দরবানের থানচিতে ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে লেংরাই ¤্রাে (৯) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১০ জুলাই) সকালে ম্যালেরিয়ার রোগের উপসর্গ নিয়ে থানচি সদর হাসপাতালে আনলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত শিশু থানচির সদর ইউনিয়নের পুরাতন বোডিং পাড়ার বাসিন্দা ইকথাই ¤্রাের ছেলে।

জানা গেছে, বান্দরবানের থানচি উপজেলার দূর্গম বিভিন্ন পাড়ায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। দূর্গম এলাকার অনেকেই যাতায়াতের অসুবিধার কারণে আক্রান্ত হওয়ার পর বাড়িতে অবস্থান করছে, অনেকেই স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছে। কোন কোন পাড়ায় রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হলে রোগীর স্বজনরা তাদেরকে হাসপাতালে নিয়ে আসছে। সোমবার সকালে থানচি সদর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের পুরাতন বোডিং পাড়ার বাসিন্দা ইকথাই ¤্রাের ছেলে লেংরাই ¤্রাের অবস্থা শংকটাপন্ন হলে তাকে স্বজনরা থানচি সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু লেংরাইকে মৃত ঘোষণা করেন। সে বেশ কয়েকদিন ধরে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে অবস্থান করে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করেছিল।

ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়া থানচির কয়েকজন ¤্রাে বাসিন্দা বলেন, আমরা সারাদিন জুমে কাজ করি। সেখানে কাজ করার সময় মশায় কামড় দেয়। জুমে কাজ শেষে বাড়িতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে যাওয়ায় মশারি আর টাঙ্গানো হয় না। মশারী না টাঙ্গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। যার কারণে সারারাত মশার কামড় খেতে হয়। তারা আরো বলেন, আমাদের গ্রাম থেকে হাসপাতাল অনেক দূরে এবং যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকার কারণে ছেলে-মেয়েদের জ¦র হলেও বাড়িতে অবস্থান করতে হয়। অবস্থা বেশি খারাপ হয়ে গেলে তারপর নৌকায় করে আর পায়ে হেঁটে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়। এর মধ্যে হাসপাতালে নেয়ার পথে অনেকের মৃত্যুও হয়।

এ বিষয়ে থানচি সদর হাসপাতালের ইউএইচএফপিও ডা: ওয়াহিদুজ্জামান মুরাদ বলেন, থানচি উপজেলার দূর্গম বেশ কয়েকটি পাড়ায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। দূর্গম এলাকার অনেকেই ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে। অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। সোমবার সকালে ক্রাইতং পাড়া থেকে এক শিশুকে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছে। তবে তার ম্যালেরিয়ার উপস্বর্গ ছিল। কিন্তু পরীক্ষা করতে না পারায় নিশ্চিত ভাবে সেটি বলা যাচ্ছে না।

উল্লেখ্য, প্রতিবছর বর্ষায় পাহাড়ে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। গত কয়েক বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ তেমন একটা দেখা না দিলেও এ বছর থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পানি জমে থাকার কারণে দূর্গম এলাকার বিভিন্ন পাড়ায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গেল এক মাসে বান্দরবানে ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন