বুধবার, ৪ঠা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

২২ মণ ওজনের কালু মামার দাম ১০ লাখ টাকা

২২ মণ ওজনের কালু মামার দাম ১০ লাখ টাকা

এবার শেরপুরের কোরবানির হাট কাঁপাবে ২২ মণ ওজনের হলস্টেইন জাতের ষাড় গরু কালু মামা। ইতিমধ্যে কালু মামার আকৃতি ও সৌন্দর্য সবার নজর কেড়েছে । গরুটির মালিকের দাবি, এটিই শেরপুর জেলার সবচেয়ে বড় আকৃতির গরু। কালু মামার গায়ের রং কালো মিচমিচে, উচ্চতা ৫ ফুট আর লম্বায় ৯ ফুট। এর দাম হাঁকা হচ্ছে ১০ লাখ টাকা। শেরপুর পৌরসভার কসবা কাঠগড় এলাকার বাহাদুর ইসলাম গরুটির মালিক। তিনি পেশায় একজন গাড়ী চালক।

খামারি বাহাদুর ইসলাম বলেন, করোনার সময় পাবনা ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেখানকার গরুগুলা অনেক বড় আকৃতির হয়। তাই সেখান থেকে একটি গরু কেনার খুব ইচ্ছে জাগে আমার। পরে আমার এক বন্ধুর মামা পাবনা থেকে ৮৫ হাজার টাকায় একটি হলস্টেইন জাতের ষাড় গরু কিনে দেন। সেখান থেকে গরুটি বাড়িতে নিয়ে আসতে সব মিলে খরচ হয় ১লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রায় ২ বছর ধরে গরুটি লালনপালন করতে গিয়ে মায়া জন্মেছে। প্রতিদিন এর পিছনে একজন লোকের খাটতে হয় । আর প্রতিদিন গরুটি ৬-৭শ টাকার খাবার খায়। গোসল দিতে হয় ২-৩ বেলা। আমার এখন পর্যন্ত তার পিছনে খরচই হয়েছে ৪ লাখ টাকা। তাহলে কেনা খরচসহ পড়লো ৫ লাখ টাকা। আমি এখন কালু মামাকে বিক্রির জন্য ১০ লাখ টাকা চাচ্ছি। বিভিন্ন জায়গা থেকে কেনার জন্য মানুষ আসছে,দরদাম করছে। এখন পর্যন্ত ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হয়েছে। উপযুক্ত দাম পেলে বিক্রি করবো। বাহাদুর বলেন, সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতির খাবার খাইয়ে লালন পালন করা হয়েছে ষাঁড়টি । ভুট্টা, জব, কাঁচা ঘাস, কালাইয়ের ভুষি, গমের ভুষি এবং ধানের খড় খাইয়ে বড় করেছি ষাঁড়টিকে। সাথে আরও বিভিন্ন রকমের ফল খাইয়েছি। এটি আমার আদরের গরু। তাই যখন যা হাতের কাছে পেয়েছি তাই খাইয়েছি। তার পছন্দের ফল আঙ্গুর।

আরও পড়ুনঃ  একুশের দিনে বাংলা ফন্ট উদ্বোধন করলো জাতিসংঘ

ষাড় গরুটির নাম কালু মামা রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ষাড় গরুটি পছন্দ করে আমার এক বন্ধুর মামা কিনে দিয়েছিলেন। আর ষাড়টির রং ছিলো কালো। তাই দুই মিলে ষাড়টির নাম রেখেছি কালু মামা।

খামারি বাহাদুরের কাকা রহমত বলেন, গরুটি খুব শখ করে পেলেছে বাহাদুর। গরুটির প্রতি সবারই মায়া জন্মে গেছে। একটি সন্তানকে যেভাবে লালন পালন করা হয় কালু মামাকেও সেভাবে লালন পালন করা হয়েছে। আমরাও গরুটিকে এসে দেখাশোনা করি । খুবই ভালো লাগে। সামনে কোরবানির ঈদে গরুটিকে বিক্রি করে দিতে হবে। বিক্রি হলে খুব কষ্ট হবে তবুও বিক্রি করে দিতে হবে।

বাহারি নামের বড় আকৃতির এই ষাঁড় নিয়ে উৎসাহী আশপাশের এলাকার মানুষ। শেরপুর শহর থেকে দেখতে আসা মো. জিহাদ বলেন, আমি কখনও এত বড় ষাঁড় দেখিনি। শহরের মধ্যেই এতবড় ষাঁড় রয়েছে তা ফেইসবুকে দেখে বাস্তবে দেখতে আসলাম। একটা সেলফিও নিলাম। শেরপুর সদরের চরশেরপুর এলাকা থেকে আসা রফিক বলেন, সব সময় টিভিতে দেখি, বড় বড় গরু কোরবানির হাটে ওঠে। আজ বাস্তবে দেখলাম। গরু দেখতে আসা হুমায়ুন বলেন, আমার বাড়ি পাশের গ্রামেই। আমি আগে কখনও এত বড় গরু দেখিনি। তাই লোকজনের কাছে শুনে দেখতে আসছি। গরুটি দেখতে অনেক বড়। দেখতেও সুন্দর। নাম আর গরুর চেহারায় অনেক মিল আছে।

বড় ষাঁড় গরুর কথা শুনে দরদাম করতে আসছেন পাইকাররা। গরুর পাইকার হাসান বেলাল জানান, ষাঁড় গরুটি কেনার জন্য এসেছি। দরদাম করে যদি নিতে পারি তাহলে ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করবো।

আরও পড়ুনঃ  কেশবপুরে প্রেসক্লাব ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের মাঝে মাস্ক প্রদান

শেরপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কোরবানির জন্য শেরপুরের অনেক খামারি বড় বড় গরু তৈরি করেছেন। অনেকের বাড়ি থেকেই গরু বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এবার গরুর যে বাজার রয়েছে এতে খামারিরা বেশ লাভবান হবেন। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে খামারিদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে । ফলে প্রাকৃতিক উপায়ে খামারিরা গরু মোটাতাজাকরণ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, শেরপুর জেলায় এবার মোট ২০টি কোরবানীর হাট বসবে। পাশপাশি ৫টি অনলাইন প্লাটফর্ম থাকবে। প্রতিটা হাটে প্রাণী সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে একটি করে ভ্যাটেনারি টিম নিয়োজিত থাকবে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন