ঢাকা | মঙ্গলবার
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রযুক্তির বিকাশে বেড়েছে সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জ

প্রযুক্তির বিবর্তনে সাংবাদিকতায় নতুন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে সাংবাদিকতা প্রথাগত নিয়মের বেড়াজাল ছিন্ন করে নতুন ধাঁচে অগ্রসারমান। এই নতুন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রযুক্তিগত জ্ঞানার্জনের বিকল্প নেই। ইন্টারনেটের যুগে সাংবাদিকরা যাচাই –বাছাই ছাড়া সংবাদ পাঠকের উদ্দেশ্যে ছেড়ে দিচ্ছে। এতে অনেক সময় ভুল সংবাদের জন্য পাঠক বিভ্রান্ত হচ্ছে। এজন্য সব চাপ ও বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে পাঠককে বস্তুনিষ্ঠু সংবাদ পরিবেশন করা একজন দক্ষ ও মানসম্পন্ন সাংবাদিকের কাজ। সাংবাদিকতাকে ভবিষ্যতে সাংবাদিকদের আয়ত্ত্বে রাখতে হলে প্রযুক্তি বিবর্তনের সাথে নিজেদের খাঁপ-খাইয়ে নিতে হবে, নতুবা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে মোকাবেলা দুরূহ হয়ে পড়বে। প্রাচীনকালে সমাজের ওয়াচম্যান থেকে সাংবাদিকতার ধারণা  বিকশিত। এরপর সংবাদপত্র, রেডিও,টেলিভিশনের পর আসছে অনলাইন। এসবের সাথে তালমিলিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাথে নিজেদের উপযোগী করে তুলতে না পারলে সাংবাদিকতায় টিকে থাকা দায় হয়ে যাবে।

শনিবার (০৩ জুন) ‘বাংলাদেশে সাংবাদিকতার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক সেমিনারে আলোচকরা এসব কথা বলেন। প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এর অধ্যয়ন বিভাগের আয়োজনে পিআইবি’র সেমিনার কক্ষে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।

প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) এর মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদের সভাপতিত্বে এবং অধ্যয়ন বিভাগের প্রভাষক ও সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা প্রোগ্রামের সমন্বয়কারী শুভ কর্মকারে সমন্বয়ে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে সভাপ্রধান জাফর ওয়াজেদ বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অর্থাৎ এ আইয়ের সাথে সাংবাদিকতাকে টিকিয়ে রাখতে হলে প্রযুক্তি জ্ঞান আহরণের বিকল্প নেই। বৃটিশ,পাকিস্তান আমলের সাংবাদিকতা ও স্বাধীনতা পরবর্তী সাংবাদিকতা ও বর্তমান ডিজিটাল সাংবাদিকতার বিস্তর ফারাক রয়েছে। সেকেলে সাংবাদিকতাকে আঁকড়ে ধরলে অদূর ভবিষ্যতে এপেশার সাথে নিজেকে আর রাখতে পারা সম্ভব হবেনা। তাই প্রযুক্তি জ্ঞানের উপর বেশি জোর দিয়েছেন। নতুবা নতুন বিকশিত প্রযুক্তি জ্ঞানের দাপটে নিজেদের আর খাঁপ খাইয়ে নিতে পারবেনা। সেভাবে সাংবাদিকদের প্রযুক্তি জ্ঞানার্জনের মাধ্যমে আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত হতে বলেছেন তিনি।

অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পান্ডে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, সংবাদপত্রের ইতিহাস অনেক পুরোনো। সপ্তদশ শতাব্দী থেকে শুরু হলেও এখনও টিকে আছে।টেলিভিশন ও বেতারের তুলনায় সংবাদপত্র অনেক প্রাচীন। তিনি বলেন,বিংশ শতাব্দীতে ইন্টারনেটের আর্বিভাবে মানুষের নিকট সহজে তথ্য পৌঁছে যাওয়ায় সংবাদপত্র, রেডিও ও টেলিভিশন অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে।

সেমিনারে পিআইবি’র পরিচালক (প্রশাসন) মো. জাকির হোসেন অংশগ্রহণ করেন। তিনি সাংবাদিকতাকে সময়ের তাগিদে প্রযুক্তির সাথে তালমেলানোর কথা বলেন। সাংবাদিকতাকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের কথা উল্লেখ করে মো. জাকির হোসেন বলেন, প্রথম –দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিল্প বিপ্লবের পর এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লব চলে এসেছে। এর সাথে খাঁপ খাওয়ানোর আগেই এমনকি পঞ্চম শিল্প বিপ্লব চলে আসবে। তাই সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সাংবাদিকের দক্ষ হয়ে গড়ে উঠতে হবে।

পিআইবি’র পরিচালক (অধ্যয়ন ও প্রশিক্ষণ) শেখ মজলিশ ফুয়াদ সংবাদপত্রের সত্তরের  ও নব্বইয়ের দশকের সাথে বর্তমান পরিস্থিতি তুলনা করে সাংবাদিকদের যোগ্য করে গড়ে তোলার কথা বলেন। সাংবাদিকতায় দক্ষতার কোন বিকল্প নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, সমাজের নিকট সামাজিক দায়বদ্ধতার কারণে সাংবাদিকদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।

সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন, পিআইবি’র অধ্যয়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক পংকজ কর্মকার। তিনি বলেন, সাংবাদিকতার ধারা পাল্টে যাচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন সংকট দেখা যাচ্ছে সেখান থেকে উত্তোরণের জন্য চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে পিআইবি’র অধ্যয়ন বিভাগের প্রভাষক বেগম লাজিনা আক্তার জ্যাসলিন ও পিআইবি’র সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা প্রোগ্রামের ৪০ জন শিক্ষাথী অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা শেষে ১৯ মার্চ ২০২৩ খ্রি. পিআইবি’র সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা প্রোগ্রামের শিক্ষাথীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থের আলোকে ‘বঙ্গবন্ধুর মানস’ শীর্ষক প্রবন্ধ লিখন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে এবং পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য কৃতী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার ও সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন