ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্যানিটেশন সুবিধার আওতায় আসছে ২৫ জেলার ২৫ পৌরসভা

স্যানিটেশন সুবিধার আওতায় আসছে ২৫ জেলার ২৫ পৌরসভায়

দেশের জেলা শহরের ২৫টি পৌরসভায় নিরাপদ এবং টেকসই স্যানিটেশন ব্যবস্থা ও সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য, জীবনযাত্রার মান ও পরিবেশব্যবস্থার উন্নয়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে এ লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশের ২৫টি শহরে অন্তর্ভুক্তিমূলক স্যানিটেশন’ শীর্ষক প্রকল্প প্রহণ করা হয়েছে। এ জন্য প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ২১০ কোটি ৭০ লাখ ৭৪ হাজার টাকা। দেশের ৮ বিভাগের (ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর) মনোনীত ২৫টি জেলা সদরের ২৫টি পৌরসভায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। গেল ভছরের অক্টোবরে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২৭ সালের ৩০ জুন মেয়াদে শতভাগ বাস্তবায়ন হবে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের উদ্যোগে নেওয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর, এমনই তথ্য জানিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের এক সূত্র।

২ হাজার ২১০ কোটি ৭০ লাখ ৭৪ হাজার টাকার মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল (জিওবি) থেকে জোগান দেওয়া হবে ৩২৮ কোটি ৪৯ লাখ ৪০ হাজার টাকা। এর বাইরে এশীয় পরিকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) থেকে প্রকল্প ঋণবাবদ সহায়তা পাওয়া যাবে ১ হাজার ৮৮২ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। বাংলাদেশের জেলা শহরের ২৫টি পৌরসভায় নিরাপদ ও টেকসই স্যানিটেশন সিস্টেম এবং সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য, জীবনযাত্রার মান ও পরিবেশব্যবস্থার উন্নয়নই প্রকল্প গ্রহণের মূল উদ্দেশ্য।

এ প্রকল্পের আওতায় ১২ হাজার ৩১২টি হাউসহোল্ড ল্যাট্রিন ও ১ হাজার ৩৫০টি কমিউনিটি ল্যাট্রিন, ১৩০টি পাবলিক টয়লেট ও ১৭৩টি ডি-ওয়াট সিস্টেম, ৩১ হাজার ৪৯৬টি পয়োবর্জ্য ধারক বা কন্টেইনমেন্ট সিস্টেম ও ২৭টি পয়োবর্জ্য বা ফেকাল স্লাজ ড্রাইং সিস্টেম, ৩০টি কঠিন বর্জ্য বা সলিড ওয়েস্ট ব্যবস্থাপনা প্ল্যান্ট (সর্টিং, কম্পোস্টিং, ল্যান্ড ফিলিং, তরল বর্জ্য পরিশোধন বা লিচেট ট্রিটমেন্ট) ও ৩২টি কঠিন ও পয়োবর্জ্য পরিশোধনাগার নির্মাণ করা হবে। সম্পদে পরিবর্তন, পুনর্ব্যবহার ও রূপান্তরের লক্ষ্যে আধুনিক, উদ্ভাবন সমৃদ্ধ, যান্ত্রিক প্রযুক্তি, ৩৪৭ কিলোমিটার বিভিন্ন ধরনের আরসিসি ড্রেন, ৩০টি উৎপাদক নলকূপ, ১০০ কিলোমিটার পাইপ লাইন, ১০০টি ডিস্লাজিং ট্রাক ও ৫০টি ডাম্প ট্রাক, ২৭০টি কঠিন বর্জ্য সংগ্রাহক ভ্যান ও ৮১০টি হ্যান্ড ট্রলি এবং ২৫টি এক্সক্যাভেটর সংগ্রহ করা হবে।

চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্ত নেই। তবে প্রকল্পটি প্রক্রিয়াকরণের লক্ষ্যে আন্তমন্ত্রণালয় প্রোগ্রামিং কমিটির সুপারিশ গ্রহণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্ধারিত ছক পূরণ করে সারসংক্ষেপ কার্যক্রম বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এ প্রকল্পের বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রীর নীতিগত অনুমোদন গ্রহণপূর্বক পিডিপিপি ইআরডিতে পাঠানো হয়েছে। পিডিপিপির ধারাবাহিকতায় প্রকল্পটি অনুমোদনের প্রক্রিয়া করা হয়েছে। সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অধ্যায়-৯-এর অনুচ্ছেদ-৯.৯.২ এ সবার জন্য নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন নিশ্চিত করার বিষয়ে অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া আরবান ডেভেলপমেন্ট খাতে শহর এলাকায় ২০২৫ সালের মধ্যে স্যানিটেশন সুবিধা ১০০ শতাংশ এবং প্রতিদিন কঠিন বর্জ্য সংগ্রহে ৭৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের ১০টি অগ্রাধিকারভিত্তিক শহরে সমন্বিত স্যানিটেশন ও হাইজিন কার্যক্রম ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে বিধায় প্রকল্পটি সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।

পরিকল্পনা কমিশনের মত, বাংলাদেশের ২৫টি জেলা শহরের সদর পৌরসভায় নিরাপদ স্যানিটেশন বাস্তবায়ন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের মাধ্যমে শহরগুলোর পরিবেশ সংরক্ষণ এবং বসবাসরত জনগণের স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা সম্ভব হবে।

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এ প্রসঙ্গে জানান, দেশের ১০টি অগ্রাধিকারভিত্তিক শহরে সমন্বিত স্যানিটেশন ও হাইজিন কার্যক্রম ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে বিধায় প্রকল্পটি সরকারের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।

আনন্দবাজার/কআ

সংবাদটি শেয়ার করুন