বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি- শিক্ষা মন্ত্রী ড. দীপু মনি

ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি- শিক্ষা মন্ত্রী ড. দীপু মনি

শিক্ষা মন্ত্রী ড. দীপু মনি বলেছেন সারাদেশে আজকে বই উৎসব হচ্ছে। সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশ একটি অণ্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে যেখানে বছরের প্রথম দিন একটি বই উৎসব হয়। যেখানে আমাদের কোটি কোটি শিক্ষার্থী এই বই উৎসবে অংশগ্রহন করে।

মন্ত্রী বলেন, বিগত ২০১০ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিনামূল্য যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছি তার সংখ্যা হলো ৪৩৪ কোটি ৪৫ লক্ষ ৮০ হাজার ২১১ কপি। এটি পৃথিবীর যেকোনো জায়গার জন্য অচিন্তনীয় ব্যাপার। তার মধ্য দিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের ঝড়ে পড়ার হার রোধ করতে পেরেছি। কারণ, বাবা-মা’র ওপর বই কেনার ভাড়টি থাকছে না। এই নতুন বই বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীরা হাতে পায়। নূতন বইয়ের ঘামের কথা সবাই বলেছেন। আমাদের সময় তিন, চার, ছয় মাসও অপেক্ষা করেছি নতুন বইয়ের জন্য। অনেক সময় পুরনো বই পড়ে আমাদের পার করতে হয়েছে। শিক্ষার্থী ভাই-বোনেরা তোমরা যেমন করে উৎসবের মধ্য দিয়ে বছরের প্রথম দিন নূতন বই নিয়ে যাচ্ছে তা দেখে মনে হচ্ছিল যদি আজকে তোমাদের মতো হতে পারতাম।

গতকাল দুপুরে গাজীপুরের কাপাসিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পাঠ্যপুস্তক উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শিক্ষা মন্ত্রী ড. দীপু মনি এসব কথা বলেন। 

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ আজকে সারা বিশে^র কাছে রোল মডেল বঙ্গবন্ধুন কণ্যার নেতৃত্বে। অনেক প্রতিবন্ধকতা, প্রতিকুলতা, সীমাবদ্ধতা। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। স্বপ্ন দেখি স্মার্ট বাংলাদেশের। সেই স্মার্ট বাংলাদেশের নাগরিক হবে স্মার্ট নাগরিক। সেই বাংলাদেশের সরকার হবে স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সমাজ। এইসব স্মার্ট গড়বার জন্য যেটি দরকার সেটি হচ্ছে স্মার্ট শিক্ষা। আমরা নতুন শিক্ষাক্রম তৈরির মাধ্যমে সেদিকেই আমরা এগিয়ে চলেছি। সপ্তম শ্রেনীর যে বইগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো নতুন শিক্ষাক্রমের। নতুন শিক্ষাক্রম আমরা এমনভাবে তৈরি করেছি সমস্ত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ, বিশেষজ্ঞ সকলের পরামর্শ নিয়ে এমন শিক্ষাক্রম তৈরি করেছি যেখানে শিক্ষা হবে আনন্দময়, শিক্ষায় পরীক্ষাভীতিতে আমাদের শিক্ষার্থীরা সারাদিন ভীত থাকবে না। আমাদের শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞানমনস্ক হবে। প্রযুক্তিবান্ধব শুধু নয়, প্রযুক্তি ব্যবহারে ও উদ্ভাবনে দক্ষ হবে। তারা মানবিক ও সৃজনশীল মানুষ হবে। আমাদের যে মূল্যবোধ আছে সে মূল্যবোধ নিয়ে বড় হতে হবে। আমরা দক্ষ, যোগ্য, মানবিক ও সৃজনশীল মানুষ হবো। আমরা সত্যিকারের সোনার মানুষ হবো যেন সোনার বাংলা গড়তে পারি। আজকে যদি তোমরা সচেতন হও তাহলে নিশ্চয় তোমাদের ভবিষ্যত আরো অনেক অনেক বেশি সুন্দর হবে ইনশাল্লাহ।

আরও পড়ুনঃ  পেঁয়াজ চারায় লোকসান

মন্ত্রী বলেন, কাপাসিয়া উপজেলায় অনেকগুলো অর্জন রয়েছে। শতভাগ সফল স্কাউটিং উপজেলা। সারা বিশ^ তার মধ্যে মাতৃ মৃত্যুরোধে বাংলাদেশে সাফল্য দেখিয়েছে তা নয়, সারা বিশ^ যে মডেল নিয়ে কথা বলছে মৃত্যুরোধে সেটিতে সবার আগে কাপাসিয়া মডেলের কথা বলছে। আমরা গর্বিত, সঠিক নেতৃত্ব থাকলে যে সব জায়গায় যেমন স্থানীয় পর্যায় থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ে যে সাফল্য অর্জন সম্ভব আজকে এটি তারা প্রমাণ করে। আমরা আজকে সারাদেশ একজন রাষ্ট্র নায়কের নেতৃত্বে এই দেশকে বিশ^সভায় মাথা তুলে দাঁডিয়েছে। শিক্ষায়, স্বাস্থ্য, দূর্যোগ ব্যবস্থায়, কৃষিতে, খাদ্য, শিল্প উৎপাদনে এমন কোনো ক্ষেত্র নেই যে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দ্রুত গতিতে, অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে চলছে।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনিসুর রহমান জানান, জেলায় এ বছর ১ম থেকে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত ৬ লাখ ১২ হাজার ৩৫১ জন শিক্ষার্থীর হাতে ২৫ লাখ ৪০ হাজার ২৩৪টি এবং ৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত ৬ লাখ ৯২ হাজার ৭৩০ জন শিক্ষার্থীর হাতে মোট ৮৭ লাখ ৭৬ হাজার ৬৮৯টি পাঠ্য পুস্তক বিতরণ করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পাঠ্যপুস্তক উৎসবের আয়োজন করে। এর মধ্যে বই উৎসবের প্রথম দিনে কাপাসিয়া উপজেলার ৩১টি স্কুল এবং ৬টি মাদ্রাসার ৬ হাজার শিক্ষার্থীর হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বকর ছিদ্দীকের সভাপতিত্বে পাঠ্য পুস্তক উৎসব অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের স্থায়ী কমিটির সদস্য সিমিন হোসেন রিমি এমপি, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব কামাল হোসেন, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব ইব্রাহিম ভূঁইয়া স্বপন, গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন মোল্লা, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আনিছুর রহমান, কাপাসিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট আমানত হোসেন খান।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন