মঙ্গলবার, ১০ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেট্রোরেল যুগে দেশ

মেট্রোরেল যুগে দেশ

আজ থেকে মেট্রোরেলের যুগে প্রবেশ করছে বাংলাদেশ। দেশে এই প্রথম মেট্রোরেল চালু হচ্ছে। আজ বুধবার বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেলের প্রথম অংশ উদ্বোধন করবেন। আগারগাঁও মেট্রোরেল স্টেশনের কনকোর্স লেভেলে বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-৬ এর উত্তরা উত্তর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অংশ উদ্বোধন করবেন। উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। আগামী বছর ডিসেম্বর মাসে মেট্রোরেল উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলবে। এরপর ২০২৫ সালে কমলাপুর পর্যন্ত চলবে।

দ্রুতগতির এ ট্রেন পুরোপুরি চালু হলে সুফল পাবেন নগরবাসী। মেট্রোরেলের উদ্বোধন ঘিরে ইতোমধ্যে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছে মানুষ। শুধু তাই নয়, রাজধানীর বুকে বিশাল এই উন্নয়ন প্রকল্প ঢাকাবাসীর মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। অনেকেই বলছেন, মেট্রোরেল নগরবাসীর যানজটের ভোগান্তি কিছুটা হলেও লাঘব করবে। তাই স্বস্তির আশায় বুক বেঁধে আছেন তারা। অত্যাধুনিক এই যোগাযোগ ব্যবস্থা দেশকে স্বল্পোন্নত থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

নগরবাসী বলছেন, রাজধানীতে যাতায়াতের সুবিধাজনক মাধ্যম মেট্রোরেল দিনে লক্ষাধিক যাত্রী বহন করতে পারবে। আর এক্ষেত্রে নারীরা, বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে। কারণ বর্তমানে যে গণপরিবহনগুলো রয়েছে সেগুলোতে নারীদের প্রায়ই হয়রানির মুখে পড়তে হয়। তাছাড়া মিরপুর কিংবা উত্তরার দিকে যেতে প্রতিবারই ট্রাফিক সিগন্যাল আর যানযটের কারণে নাকাল হতে হয়েছে। এখন মেট্রোরেলে অল্প সময়ে শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যাওয়া যাবে।

কেউ কেউ বলছেন, বিশ্বের সব দেশেই উন্নত যাতায়াত ব্যবস্থার জন্য মেট্রোরেলের ব্যবহার রয়েছে। তারা আশা করছেন, বাংলাদেশে মেট্রোরেল চালু হলে যাতায়াত ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন আসবে। অনেকেই বলছেন, ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপদান করার জন্য মেট্রোরেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। যানজটের কারণে বহু শ্রমঘণ্ট নষ্ট হয়। যে কারণে বড় অংকের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয় দেশকে। মেট্রোরেল এক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। যেটা জিডিপিতেও প্রভাব ফেলবে।

এছাড়া মেট্রোরেল থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে মধ্যবিত্ত শ্রেণি। তারা যাতায়াতের জন্য নিজস্ব পরিবহনের ব্যবহার কমিয়ে মেট্রোরেল ব্যবহার করবেন। এতে দেশের জ্বালানি সাশ্রয় ও বায়ুদূষণ রোধ হবে।

বাড়বে গতি-সমৃদ্ধি
রাজধানীবাসীর প্রতিদিনের ভোগান্তির নাম যানজট। স্বল্প দূরত্বের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতেও সীমাহীন দুর্ভোগ ও সময়ের অপচয় হচ্ছে। তীব্র যানজটের কারণে ঢাকায় যানবাহনের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটারের নিচে নেমেছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়ছে রাজধানীবাসীর শারীর ও মনে। বিভিন্ন সংস্থার গবেষণায় উঠে এসেছে, যানজটের কারণে ঢাকা মহানগরীতে দৈনিক ৫০ লাখ কর্ম ঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে কর্মজীবীদের, যার আর্থিক ক্ষতি বছরে ১ লাখ ১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা।

আরও পড়ুনঃ  গাজীপুরে শীতের সিজনাল পিঠা বিক্রিতে ধুম

ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সমীক্ষাও দিচ্ছে একই তথ্য। সেই সমীক্ষায় ২০০৪ সালে ঢাকার রাস্তায় যানবাহনের গড় গতি ছিল প্রায় ২১.২ কিমি/ঘণ্টা। যা ২০১৫ সালে তা ৬.৮ কিমিতে নেমে আসে। ২০২০ সালের ঢাকায় যানবাহনের গতি মানুষের হাঁটার গতির মতো ঘণ্টায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটারে নামে। অন্যদিকে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা অনুসারে রাজধানীতে যানজটের কারণে বছরে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ১ লাখ ১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। আর্থিক ক্ষতির হিসাবে যা দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২.৯ শতাংশ। নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে মাথাপিছু আয়েও।

প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা অনুসারে, যানজটের কারণে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমছে ৩ শতাংশের বেশি, এমনকি দারিদ্র্য বিমোচনের হারও কমছে আড়াই শতাংশের কাছাকাছি। এসব পরিসংখ্যান বিবেচনায় নিয়ে সরকার ফ্লাইওভার ও ইউলুপসহ নগর ভিত্তিক বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। সর্বশেষ সংযোজন মেট্রোরেল। আধুনিক নগর-পরিকল্পনা ও গণপরিবহনে সবচেয়ে কার্যকর হিসেবে দেখা হচ্ছে মেট্রোরেলকে। যানজট নিরসন, দ্রুত বিপুলসংখ্যক যাত্রী পরিবহনের জন্য উন্নত বিশ্বে মেট্রোরেল সবচেয়ে বেশি সমাদৃত। সেই বিবেচনায় ২০১২ সালে হাতে নেওয়া মেট্রোরেল প্রকল্প। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার সঙ্গে ঋণচুক্তির পরে মূল কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে।

এ প্রকল্পের আওতায় উত্তরা (দিয়াবাড়ি) থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের কাজ চলছে। চলতি মাসেই উদ্বোধন হতে যাচ্ছে উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের। পুরো মেট্রোরেল পথের দৈর্ঘ্য ২০ কিলোমিটারের কিছু বেশি। এর মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত পথের দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকা শহর যানজটের কবল থেকে অনেকটা মুক্তির পাওয়ার পাশাপাশি আর্থিক হিসাবের বিবেচনায় প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। যা মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১ দশমিক ৫ শতাংশের সমান। আর যানজট থেকে মুক্তি মিললে আমদানি-রপ্তানির সরবরাহ লাইনও গতিশীল হবে।

বিশেষজ্ঞরা আরও মনে করছেন, ঢাকার যানজট এবং পরিবেশে মেট্রোরেলের অসামান্য প্রভাব পড়বে। মেট্রোরেল চালু হলে দুই জায়গায় প্রভাব পড়বে সবচেয়ে বেশি। প্রথমত, সময়। উত্তরা থেকে কমলাপুর যেতে এখন ২-৩ ঘণ্টা সময় লাগে। মেট্রোরেল হলে সময় লাগবে মাত্র ৩৮ মিনিট। এই সময়ের মধ্যেই ১৭টি স্টেশনের প্রতিটিতে ৩০-৪৫ সেকেন্ড থামবে। এ বেঁচে যাওয়া সময় অন্য ব্যক্তিগত ও সামাজিক কাজে লাগাতে পারবে মানুষ। দ্বিতীয়ত, তখন শহরে জ্বালানি পোড়ানো অনেক কমে যাবে। এতে ঢাকার পরিবেশের উন্নয়ন হবে। ঢাকায় কেবল মেট্রোরেল-৬ প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে বলে আশা করছে কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুনঃ  মহানগর আওয়ামী লীগ সম্মেলনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

নেই হাফপাস, মুক্তিযোদ্ধাদের ফি
মেট্রোরেলের ভাড়া প্রতি কিলোমিটার ৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই হিসাবে আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত ভাড়া হবে ৬০ টাকা। মেট্রোরেলে করে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে ১০ মিনিট। আর, সবগুলো স্টেশন খুলে দেওয়া হলে এ দূরত্ব পৌঁছাতে সময় লাগবে ১৭ মিনিট। মেট্রোরেলে যাত্রার সময় দেশের অন্যান্য গণপরিবহনের মতো হাফপাসের সুবিধা পাবেন না শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে, মুক্তিযোদ্ধারা বিনামূল্যে যাতায়াত করতে পারবেন এই বাহনে।

এমআরটি পাস (স্মার্ট কার্ড) বহনকারীরা ১০ শতাংশ ছাড় পাবেন। মেট্রোরেলে ৯০ সেন্টিমিটার বা তার কম উচ্চতার শিশুরাও বিনামূল্যে যাতায়াত করতে পারবে। তাছাড়া, মেট্রোরেলে পোষাপ্রাণী নিয়ে ওঠা যাবে না বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ভাড়া প্রতি কিলোমিটার ৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই হিসাবে আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত ভাড়া হবে ৬০ টাকা।

৫০ টাকার স্মারক নোট
বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫০ টাকা মূল্যমানের একটি স্মারক নোট মুদ্রণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মেট্রোরেল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এই স্মারক নোটটি আনুষ্ঠানিকভাবে অবমুক্ত করবেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রমতে, অবমুক্তকরণের পর আগামীকাল থেকে এই স্মারক নোট বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিস এবং পরে অন্যান্য শাখা অফিসে পাওয়া যাবে।

বাংলাদেশের প্রথম উড়াল মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে মুদ্রিত ৫০ টাকা মূল্যমান স্মারক নোটের ডিজাইন ও নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য হলো- বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার স্বাক্ষরিত ১৩০ মিমি x ৬০ মিমি পরিমাপের এ স্মারক নোটের সম্মুখভাগের বামপাশে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতি এবং ব্যাকগ্রাউন্ডে মেট্রোরেলের ছবি সংযোজন করা হয়েছে। নোটের পেছনভাগে মেট্রোরেলের অপর একটি ছবি সংযোজন করা হয়েছে। ৫০ টাকা অভিহিত মূল্যের স্মারক নোটটির জন্য পৃথকভাবে বাংলা ও ইংরেজি লিটারেচার সম্বলিত ফোল্ডার প্রস্তুত করা হয়েছে। ফোল্ডার ছাড়া শুধুমাত্র খামসহ স্মারক নোটটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকামাত্র এবং ফোল্ডার ও খামসহ স্মারক নোটটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা।

আরও পড়ুনঃ  ‘চারবার বিক্রি’ হওয়া বাংলাদেশি কিশোরী গুজরাট থেকে উদ্ধার

ভাড়ায় আপত্তি বিএনপির
মেট্রোরেলের ভাড়া নির্ধারণে আইন ও বিধিমালা লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে দাবি বিএনপির। মেট্রোরেলের ভাড়া সর্বনিম্ন ২০ টাকা এবং উত্তরা থেকে মতিঝিল এই ২০ কিলোমিটারের ভাড়া ১০০ টাকা নির্ধারণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। গতকাল মঙ্গলবার গুলশান বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ প্রতিবাদ জানান।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ঢাকায় মেট্রোরেলের এই ভাড়ার পরিমাণ শুধু দেশের বেসরকারি বাসভাড়ার দ্বিগুণ নয়, ভারত ও পাকিস্তানের বিভিন্ন নগরীর মেট্রোরেলের ভাড়ার চেয়ে ২ থেকে ৫ গুণ বেশি। ঢাকা মেট্রোরেলের সর্বনিম্ন ভাড়া দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই ও লাহোরের ভাড়ার প্রায় দ্বিগুণ এবং কলকাতার ৩ গুণ। ঢাকার ২০ কিলোমিটারের ভাড়া কলকাতার ৪ গুণ, নয়াদিল্লি, মুম্বাই ও চেন্নাইয়ের ৩ গুণ এবং লাহোরের ভাড়ার চেয়ে সাড়ে ৫ গুণ বেশি।

এক নজরে মেট্রোরেল প্রকল্প
মেট্রোরেল প্রকল্প নেওয়া হয় ২০১২ সালে। জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাইকার সঙ্গে ঋণচুক্তি হয় পরের বছর। মূল কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। পুরো মেট্রোরেল পথের দৈর্ঘ্য ২০ কিলোমিটারের কিছু বেশি। এর মধ্যে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত পথের দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। এ পথে ৯টি স্টেশন রয়েছে। উত্তরা উত্তর (দিয়াবাড়ি), উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর ১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া ও আগারগাঁও। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত স্টেশন রয়েছে সাতটি—বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, টিএসসি, প্রেসক্লাব ও মতিঝিল। অবশ্য মেট্রোরেল কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার সম্প্রসারণ করা হবে। মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল আগামী বছরের শেষ দিকে চালুর কথা রয়েছে। কমলাপুর পর্যন্ত চালু হতে ২০২৫ সাল লেগে যেতে পারে। ডিএমটিসিএলের তথ্য মতে, মেট্রোরেল ছুটবে সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার গতিতে। শুরুর দিকে রাজধানীর উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও যেতে সময় লাগবে প্রায় ২০ মিনিট। পরে যাত্রার সময় ১৬ থেকে ১৭ মিনিটে নেমে আসবে।

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন