দস্যুমুক্ত সুন্দরবনে নতুন করে দস্যুতার খবরে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। বাগেরহাট পুলিশের তিনটি দল ও র্যাব ৬ এর সদস্যরা পৃথকভাবে এ অভিযান শুরু করেছে। এ অভিযানের খবর পেয়ে দস্যুরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েছে। তারা তাদের হাতে জিম্মি জেলেদের ছেড়ে দিয়ে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে। পুলিশ বনের বিভিন্ন এলাকা থেকে দস্যুদের হাতে জিম্মি থাকা ১১ জন জেলেকে উদ্ধার করেছে। বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক পিপিএম শরণখোলা ও মংলা থানায় পৃথক দুটি প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে ঐ ১১ জেলে উদ্ধারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার সকাল ১০ টায় শরণখোলা থানার কনফারেন্স রুমে প্রেস ব্রিফিং এর সময় উদ্ধারকৃত তিন জেলেকে হাজির করা হয়। এসময় শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ ইকরাম হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
জিম্মিদশা থেকে মুক্ত হয়ে আসা জেলে হানিফ, সোহেল মল্লিক ও আসাদুল জানান, চাঁদপাই রেঞ্জের বেড়ির খাল ও কলামুলা খালে কাকরা আহরণের সময় গত ১৫ ডিসেম্বর বিকালে ৭/৮ জনের একদল দস্যু তাদের উপর হামলা চালায়। দস্যুরা তাদের বেধরক মারপিট করে আতংক সৃষ্টি করে। এসময় তারা অস্ত্রের মুখে আহরিত কাকরা,মোবাইল ফোন ও দু’টি নৌকাসহ ১১ জেলেকে অপহরন করে নিয়ে যায়। দস্যু দলের প্রধান নয়ন মিয়া নিজেদের নয়ন বাহিনী নামে পরিচয় দিয়ে তাদের মুক্তিপন হিসাবে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। প্রশাসন কে জানালে তাদের কে হত্যা করা হবে বলে দস্যু হুমকি দেয়। নয়ন বাহিনীর কাছে ৩টি দেশী তৈরি পাইপগান, কয়েকটি রাম দা ও লাঠি সোটা রয়েছ বলে ফিরে আসা জেলেরা জানায়। জিম্মি থাকা অবস্থায় ৬ দিনে এসব জেলেদের অর্ধাহার ও অনাহারে কাটাতে হয়েছে বলে জানান তারা।
দুপুরে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মংলা থানায় অনুরূপ প্রেস ব্রিফিং করে দস্যুদের কবল থেকে উদ্ধার ৮ জেলেকে হাজির করেন।
ব্রিফিং কালে তিনি, বর্তমান সরকারের কঠোর মনোভাব ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রচেষ্টায় সুন্দরবন কে দস্যু মুক্ত করার কথা স্মরন করিয়ে দিয়ে বলেন, সুন্দরবনে কাউকে দস্যুতা করতে দেয়া হবেনা।
বন কে দস্যু মুক্ত করতে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। হঠাৎ করে গজিয়ে ওঠা এসব বন অপরাধীদের অচিরেই গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনা হবে।
দস্যুদের তৎপরতা শুরু হওয়ার খবর প্রকাশ করে জিম্মি জেলেদের উদ্ধারে সহায়তা করার জন্য তিনি উপস্থিত সংবাদ কর্মীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।