চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দরিদ্র মানুষেরা তুলনামূলক বেশি ভুক্তভোগি হচ্ছেন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক সংযুক্ততা বৃদ্ধি করে এখানকার দরিদ্র মানুষদের বিদ্যমান সংকট থেকে কার্যকর সুরক্ষা দেয়া সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান।
বুধবার (২১ ডিসেম্বর) হেরিটেজ কলেজ কলকাতা এবং গোয়েনকা কলেজ অফ কমার্স অ্যান্ড বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের যৌথ আয়োজনে ‘কনটেম্পোরারি ইস্যুজ ইন ইন্টারন্যাশনাল ট্রেইড: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড অপরচ্যুনিটিজ’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপি আন্তর্জাতিক সেমিনারের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আতিউর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সঙ্কুচিত করার কোন সুফল নেই। বরং ভূরাজনৈতিক অস্থিরতাকে নিয়ন্ত্রণে এনে বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনগুলো আরও টেকসই করে আগামীতে যেন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এমন ঝুঁকিতে আর না পড়ে- সেটা নিশ্চিত করাই সবার জন্য মঙ্গলজনক হবে।
হেরিটেজ কলেজ, কলকাতা-এর স্বামী বিবেকানন্দ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন কলেজের চেয়ারম্যান শ্রী সঞ্জয় আগারওয়াল এবং মূল নিবন্ধ উত্থাপন করেন ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ফরেন ট্রেইড-এর ফার্স্ট ডিস্টিঙ্গুইশড প্রফেসর ড. সুগত মার্জিত। বিভিন্ন দেশ থেকে আগতি এ্যাকাডেমিক ব্যক্তিত্ব, বিশেষজ্ঞ, পেশাদার, গবেষক এবং শিক্ষার্থীবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো মোট যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করে তার মাত্র ৫ শতাংশ তারা করছে নিজেদের মধ্যে। ফলে এটি অর্থনৈতিক সংযুক্ততার বিচারে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা অঞ্চলগুলোর একটি। চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটে এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বাণিজ্য বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা নতুন করে উপলব্ধি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, করোনাজনিত অর্থনৈতিক স্থবিরতা এবং তার পরপরই রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক সংকটের ফলে বিশ্বমানবতা যে হুমকির মুখে পড়েছে তা কাটিয়ে উঠতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাড়াতেই হবে। এক্ষেত্রে এ অঞ্চলের বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে ভারতকেই অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ- এই দুই দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির যে উৎসাহ দেখিয়েছেন তার সুফল আমরা ইতোমধ্যেই পেতে শুরু করেছি। এশিয়ায় এখন ভারতই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি গন্তব্য, এবং ভারতে বাংলাদেশের বার্ষিক রপ্তানির পরিমাণ প্রায় ২ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে। বাংলাদেশে পদ্মা সেতু, কালনা সেতুসহ বেশ কয়েকটি বৃহৎ সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সহযোগিতা আরও বলশালি হবে।
আনন্দবাজার/কআ
