স্বপ্ন ও সাধনার আমন ধান উঠেছে কৃষকের ঘরে। উপজেলার হাওরসহ বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা পালন করছেন ঐতিহ্যের নবান্ন উৎসব। একদিকে শীতের আমেজ, অন্যদিকে মাঠের ধান বাড়িতে উঠাতে কৃষান-কৃষাণীর ব্যস্তময় সময় গ্রামের বিস্তৃর্ণ ধানক্ষেতই যেন খেলার মাঠ। মাঠের মধ্যে বাঁশের খুঁটি পুঁতে একটি জায়গা চিহ্নিত করেছে। সেখানে হরেক রকম মানুষ গোল হয়ে বসে, কেউ দাঁড়িয়ে উপভোগ করেছেন এক গ্রামীণ ঐতিহ্য ঘোড়া দৌড়ের দৃষ্টি সবার এক দিকেই। মাঠের মাঝখানে চিহ্নিত স্থান দিয়ে প্রাণপণে ছুটছে ঘোড়া। পিঠে সওয়ারির চাবুকের আঘাতে ছুটছে ঘোড়া। উপস্থিত দর্শকেরা হর্ষধ্বনি ও তালি দিয়ে উৎসাহ দিচ্ছে সওয়ারিদের।
এমনই একটি ব্যতিক্রমি মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশাল ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার ফসলি জমির মাঠে ১৯ ডিসেম্বর সোমবার বিকালে হারিয়ে যাওয়ার পথে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলা ঘোড়দৌড় কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার চান্দঁপুর ইউনিয়ন গালিম খা বাগ যুব সমাজের উদ্যোগে আয়োজন করা হয়। উক্ত ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় উপস্থিত ছিলেন চান্দঁপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক জাকির আব্দুল্লাহ সুমনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতা ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তি এবং কয়েকহাজার দর্শকবৃন্দ।
ফেসবুক, বিভিন্ন গণমাধ্যম ও মাইক ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা শুরুর ঘোষণা দেওয়ায় বিভিন্ন এলাকা ও আশপাশের গ্রাম থেকে মাঠে আসতে শুরু করে স্থানীয় লোকজন। খেলা শুরুর আগেই গচিহাটা বালিরার পাড় মাঠ কানায় কানায় ভরে যায়। শিশু কিশোর থেকে শুরু করে নারী-পুরুষ, বৃদ্ধরা এসে জড়ো হতে থাকে ঘোড়দৌড় উপভোগ করতে।
ঘোড়দৌড় দেখতে আসা দর্শকরা জানান, ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা। একসময় ঘোড়াদৌড়, হাডুডু লাঠিভাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে খেলাগুলো দেখা যেত, তবে, এখন এ খেলাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে ও প্রায়ই দেখা যায় না। দীর্ঘদিন পরে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা উপভোগ করলাম।
গালিম খা বাগ যুব সমাজের নেতৃবৃন্দরা বলেন, এলাকার তরুণ ও যুবকদের নির্মল বিনোদন দিতে এবং তাদেরকে মাদক থেকে দূরে রাখতে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রায় বিভিন্ন ধরণের খেলাধুলার আয়োজন। এবার গ্রাম বাংলার হারিয়ে যেতে বসা ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হলো। আগামীতেও এ ধরনের আয়োজন করা হবে।
অনুষ্ঠান শেষে অতিথিরা ঘোড়দৌড় প্রতিযোগীতার উদ্বোধন ও বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার তুলে দেওয়া হয় এছাড়া অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক প্রতিযোগীকে সম্মানী দেওয়া হয়।