ঢাকা | বুধবার
১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উন্নয়নের ছোঁয়া নেই দুই যুগেও

উন্নয়নের ছোঁয়া নেই দুই যুগেও
  • বেহাল দশায় শাহ্ কেয়াম উদ্দিন আউলিয়া (রহ.) সড়ক

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার পরৈকোড়া ইউনিয়নের শাহ্ কেয়াম উদ্দিন আউলিয়া (রহঃ) সড়কের বেহাল দশা। প্রায় দুই যুগ ধরে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি জনগুরুত্বপুর্ণ এ সড়কটি। এতে করে এলাকার প্রায় ৫ হাজার মানুষের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। এসব জনগনের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে সড়কটি দেখলে আঁতকে উঠবে যে কেউ! গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা, দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের হাঁটাচলাও। এসব প্রতি দিনকার চিত্র হলেও এলাকার জনপ্রতিনিধিদের কোন মাথাব্যথা নেই।দীর্ঘ ২৪ বছর পেরিয়ে গেলেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এই সড়কে। পরৈকোড়া ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মুৎসুদ্দি পাড়া শাহ্ কেয়াম উদ্দীন আউলিয়া (রহঃ)সড়কটির প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কজুড়ে খানাখন্দ বড় বড় গর্ত।

প্রতিনিয়তই ঘটছে কোনো না কোনো দূর্ঘটনা। বিশেষ করে অসহনীয় দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রী, ব্যবসায়ী ও হাসপাতালে রোগীদের আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে। কারণ সড়কটি এখন নিজেই রোগী! বিকল্প সড়ক না থাকাতে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন ও পথচারীরা।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে,শাহ্ কেয়াম উদ্দীন আউলিয়া রহঃ সড়ক থেকে শুরু করে ৯নং ওয়ার্ডের মামুরখাইন পর্যন্ত সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও ইট একটিও নেই জায়গা মতো। সব ইট আছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কাঁদায় ডুবে। অথচ এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচল করে গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মানুষ। তাছাড়া সড়কটি মামুরখাইন গ্রামের একমাত্র রাস্তা। বিকল্প সড়ক না থাকাতে ব্যবসায়ীদের পণ্য আনা নেওয়ার ক্ষেত্রেও পোহাতে হচ্ছে চরম দূর্ভোগ।

এলাকার বাসিন্দা আয়ুব খান, মো.দেলোয়ার, ও বরুন ডাঃ  ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নেতা আসে নেতা যায়, কিন্তু এ রাস্তা সংস্কার হয় না। শাহ্ কেয়াম উদ্দীন আউলিয়া (রহঃ) সড়কটি কৈখাইন চামুদরিয়া কানেকটিং রোড নামকরণ হয়ে মৃত মানিক ডাঃ বাড়ির পাশে সড়কটি নাজুক অবস্থা। বর্ষা এলে প্রতিবছরই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে পড়ে। হাঁটুসমান কাদামাটি পেরিয়েই এ রাস্তা দিয়ে যেতে হয়।এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি, এই রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করে দেয়া হোক।

এলাকাবাসী জানায়, জনপ্রতিনিধি ও নেতাকর্মীদের বারবার আশ্বাস দেওয়া সত্বেও সড়কটি দীর্ঘদিন অবহেলায় পড়ে থাকায় এলাকাবাসীর মাঝে হতাশ বিরাজ করছে।জনপ্রতিনিধি বদলায় কিন্তু বদলায় না আমাদের এলাকার দুর্ভোগের চিত্র। ফলে এই এলাকার চাষীরা উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করণ নিয়েও পড়েন বিপাকে এছাড়া কেউ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে চিকিৎসা সেবা দেয়া সম্ভব হয় না তাদের। আনোয়ারা উপজেলা প্রশাসনের নিকট এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি, অর্ধশতাধিক পুরোনো এই রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করে দেয়া হোক।

এদিকে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সামান্য মাটি কাজ করলেও বৃষ্টি হলে আবার আগের অবস্থা হয়ে যায়। বৃষ্টি না হলে কোনোভাবে পায়ে হেঁটে চলা যায়। কিন্তু বর্ষাকাল এলে যানবাহন চলাচল দূরের কথা হেটে চলা অসম্ভব হয়ে যাবে। তাই ভুক্তভোগী এলাকাবাসী রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা এম নুরুল হুদা চৌধুরী বলেন, দীর্ঘ ২৪ বছরেও উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি মুৎসুদ্দি পাড়া শাহ-কেয়াম উদ্দীন আউলিয়া (রহঃ) সংযোগ সড়কের। ফলে ইটের সিলিং করা সড়কটির বিভিন্ন স্থানে খানা খন্দক সৃষ্টি হয়ে ঘটছে ছোট বড় অসংখ্য দুর্ঘটনা। ফলে চরম ভোগন্তি নিয়ে চলাচল করছেন তিন গ্রামের বাসিন্দারা।দীর্ঘদিন ধরে শুনে আসছি, সড়কটির সংস্কার হবে, কিন্তু ওই শোনা পর্যন্তই, সংস্কার আর হয় না। ফলে বছরের পর বছর ধরে এই সড়ক পথ ব্যবহার করা হাজার হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।তাই এলাকাবাসীর দাবি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি মেরামতের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ওয়ারেছ আহমেদ চৌধুরী বলেন,গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা, দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষের হাঁটাচলাও। মানিক ডাক্তারের বাড়ির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সডকটি একদম বেহাল দশা।আমি চেয়ারম্যান মহোদয়কে বিষয়টি অবগত করেছি ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক চৌধুরী বাবুল বলেন,রাস্তাটি দীর্ঘ দিন থেকে জরাজীর্ণ খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে যাতায়াতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। অনেকেই আবার বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করে থাকে। যেহেতু দীর্ঘদিন থেকে রাস্তাটি সংস্কারবিহীন রয়েছে। সড়কটি শাহ্ কেয়াম উদ্দীন আউলিয়া (রহঃ) নামে এলজিইডি অন্তর্ভুক্ত কোনো আইডি খুঁজে পাওয়া না যাওয়ায় সড়কে কাজ হয়নি।বর্তমানে সড়কটি কৈখাইন চামুদরিয়া কানেকটিং রোড় নামে এলজিইডির অন্তভূক্ত হয়ে ঢাকা সচিবালয় থেকে নতুন আইডি নম্বর পেয়েছে।উধ্র্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ওই কানেকটিং সংযোগ সড়ক দ্রুত মেরামত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন