বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে মৌলভীবাজারে প্রবাসীদের সচেতন করার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। জেলার ২ লাখ ৫ হাজার ২৪ জন প্রবাসীর তালিকা ইতিমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। তালিকাভুক্ত প্রবাসীদের অভিবাদন জানিয়ে বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর উৎসাহ প্রদান করে আধাসরকারি পত্র ও ক্ষুদে বার্তা প্রেরণ করবে জেলা প্রশাসন।
সোমবার (৫ ডিসেম্বর) মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে প্রেস কনফারেন্স এসব বলেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান।
নাহিদ আহসান বলেন, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে প্রবাসী কর্মীদের ভূমিকা অপরিসীম। বর্তমানে বিশ্বের ১৭৩টি দেশের ১ কোটি ৩০ লাখেরও অধিক বাংলদেশি কর্মী বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত আছেন। তারা বছরে গড়ে প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স দেশে প্রেরণ করে থাকেন। যা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বৈদেশিক কর্মসংস্থান এক দিকে দেশের বেকারত্ব হ্রাস করে, অন্যদিকে প্রবাসীদের প্রেরিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা দেশের আমদানি ব্যয় মেটানো, দারিদ্র্য বিমোচনসহ দেশের অর্থনৈতিক চাকাকে সচল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
জেলা প্রশাসক বলেন, মৌলভীবাজার জেলায় ২০০৫ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত ২ লাখ ৫ হাজার ২৪ জন প্রবাসীর তালিকা করা হয়েছে। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাস পর্যন্ত প্রবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদেরকে উৎসাহিত করে হুন্ডি বা অবৈধ পথে যেন তারা টাকা না পাঠান সেই বিষয়ে অনুরোধ করা হবে।
তিনি প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকিং চ্যানেলের বাইরে প্রেরণ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ এবং এতে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আপনাদের অর্জিত মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা হুন্ডি বা অন্য কোনো অবৈধ পথে না পাঠিয়ে বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে প্রেরণ করুন, দেশ গড়ায় মূল্যবান অবদান রাখুন এবং আপনার প্রিয়জনকে ঝুঁকিমুক্ত ও নিরাপদ রাখুন।
২০৪১ সালের মধ্যে পরিপূর্ণ অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের মাধ্যমে একটি উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে আপনাদের মতো রেমিট্যান্স যোদ্ধার অবদান জাতি সব সময় কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করবে।
এদিকে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন ১৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উদযাপনের সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। তাই ৫ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি ২০২৩ পর্যন্ত মাসব্যাপী মৌলভীবাজার জেলার অভিবাসীদের অভিবাদন জানিয়ে এবং বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর উৎসাহ প্রদান করে আধাসরকারি পত্র ও ক্ষুদে বার্তা প্রেরণ করা হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলাগুলোর ইউএনও, ইউপি চেয়ারম্যানসহ সকলকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১ হাজার ১০ জনের ঠিকানা সংগ্রহ করে বাড়ি গিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ, ইমেইলসহ প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে।
উক্ত প্রেস কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তানিয়া সুলতানা, স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক মল্লিকা দে, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জাহিদ আক্তার প্রমুখ।
আনন্দবাজার/কআ