ঢাকা | শুক্রবার
২২শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাতিল হচ্ছে বিমানবন্দরের ১০ হাজার প্রটোকল পাস

বাতিল হচ্ছে বিমানবন্দরের ১০ হাজার প্রটোকল পাস

প্রটোকল পাসের অপব্যবহার রোধে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যু করা ১০ হাজার পাস বাতিল করতে যাচ্ছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। নতুন পাস পলিসি অনুযায়ী নির্ধারিত সংখ্যার অতিরিক্ত পাস বরাদ্দ দেওয়া হবে না।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের প্রটোকলের জন্য বিমানবন্দরের রয়েছে প্রটোকল পাস। তবে এই পাসের অপব্যবহারে ঘটনাও ঘটে বিভিন্ন সময়। বিমানবন্দরে চোরাচালানে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটনেও প্রটোকল পাসধারীদের কেউ কেউ জড়িয়ে পড়ছেন। পুরনো ১০ হাজার পাস বাতিল করে নতুন পাস পলিসি করেছে বেবিচক। নির্ধারিত সংখ্যার বাইরে অতিরিক্ত পাস বরাদ্দ দেওয়া হবে না। আবার স্থায়ী পাস না দিয়ে বিশেষ ক্ষেত্রে আবেদনের প্রেক্ষিতে সাময়িক পাস দেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, বিমানবন্দরে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে ভিআইপি যাত্রীর প্রটোকলে আসা সিরাজ (পাস নং-০০২৮) নামের এক ব্যক্তি বিমানবন্দরের গ্রিন চ্যানেল দিয়ে দুটি ব্যাগ নিয়ে যাওয়ার সময় সন্দেহ হয় কাস্টম কর্মকর্তাদের। নাকটকীয়ভাবে সিরাজ পালিয়ে গেলেও তার ব্যাগ থেকে ১৬ কেজি ১শ গ্রাম স্বর্ণ, ১০০ মোবাইল ফোন সেট উদ্ধার করে ঢাকা কাস্টম হাউস। সে সময় সিরাজ নিজেকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রটোকলের কর্মকর্তা পরিচয় দেন। সম্প্রতি একটি সংস্থার প্রটোকলের কর্মকর্তা বিমানবন্দরে এসে ডিউটি ফ্রি শপ থেকে মদ নিয়ে যাওয়ার সময় ধরা পড়েন।

জানা গেছে, সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের জন্য পাস দেওয়া আছে। যাদের প্রটোকল পাস দেওয়া আছে, তাদের অনেকই নিজেদের ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে বিমানবন্দরে আসেন। যে প্রতিষ্ঠানের আবেদনে তিনি পাস পেয়েছেন, দেখা যাচ্ছে এর বাইরেও অনেক যাত্রীকে টাকার বিনিময়ে সার্ভিস দিচ্ছে। কেউ কেউ চোরচালানে সহযোগিতা করতে চেষ্টা করে। আবার বিমানবন্দরে ডিউটি ফ্রি শপ থেকে মদ কিনে নিয়ে বাইরে বিক্রি করার ঘটনাও আছে।

দেশের বিমানবন্দরসমূহের নিরাপত্তা পাসের আবেদন, অনুমোদন ও ব্যবস্থাপনা আরও যুগোপযোগী ও আধুনিকায়নের উদ্যোগ নিয়েছে বেবিচকের এভিয়েশন সিকিউরিটি বিভাগ। বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদার করতে করা হচ্ছে নতুন পাস পলিসি। বাতিল করা হবে পুরাতন প্রায় ১০ হাজার পাস। এছাড়া বিমানবন্দরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের জন্যও পাস পলিসিতেও পরিবর্তন হচ্ছে।

অনলাইন পোর্টাল ‘এভসেক আইডি’ মাধ্যমে বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা পাসের আবেদন, অনুমোদন ও ব্যবস্থাপনা করা হবে। এই পোর্টাল থেকে বিমানবন্দর নিরাপত্তা পাস প্রাপ্তির জন্য বিভিন্ন সংস্থাকে নিবন্ধন করতে হবে। একটি প্রতিষ্ঠানের দুই জন ব্যক্তি মনোনয়ন পাবেন। তাদের পাঁচ ডিজিটের কোড দেওয়া হবে।বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নতুন করে গণহারে পাস ইস্যু করা হবে না। তবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্তা, ব্যবসায়ীদের ক্ষেত্রে নতুন করে প্রটোকল পাস না দেওয়ার কথা ভাবছে বেবিচক। তাদের জন্য টাকার বিনিময়ে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রটোকল সেবা দেওয়া হবে। একইসঙ্গে ভিআইপি লাউঞ্জ সুবিধাও তারা পাবেন। তবে এই ফি কত হতে পার তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে জনপ্রতি ১০-১৫ হাজার টাকা ফি নির্ধারণের প্রস্তাব রয়েছে।

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মফিদুর রহমান বলেন, পাস পলিসি ডিজিটাল করা হচ্ছে। যে কেউ চাইলেই আর পাস দেওয়া হবে না। পুরাতন ১০ হাজার পাস বাতিল করা হবে। অনেক ব্যবসায়ীরা বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ও প্রটোকল সুবিধা নিতে চান। সেক্ষেত্রে তারা নির্ধারিত ফি দিয়ে সেই সুবিধা পেতে পারেন। পলিসি অনুযায়ী নির্ধারিত ব্যক্তির বাইরে কেউ বিমানবন্দরে প্রবেশ করতে পারবেন না।

আনন্দবাজার/কআ

সংবাদটি শেয়ার করুন