- খালি হাতে ফিরলেন ৩ শতাধিক কার্ডধারি
ভুয়া কার্ডধারীরা পণ্য নিয়ে চলে যাওয়ায় প্রকৃত কার্ডধারীরা বঞ্চিত হয়েছেন : মমতাজ বেগম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, পাইকগাছা
খুলনার পাইকগাছা পৌরসদরে টিসিবি’র ডিলারের বিরুদ্ধে পণ্য বিক্রয়ে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে অন্তত তিন শতাধিক কার্ডধারি পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন। যদিও অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সংশ্লিষ্ট ডিলার। সর্বশেষ এ ঘটনায় কার্ডধারি ভোক্তা সাধারণ অভিযোগের বিষয়টি তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
জানা যায়, পাইকগাছা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে টিসিবির কার্ডধারি উপকারভোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৬৪১ জন। গত ২২ ও ২৩ নভেম্বর উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে টিসিবির কার্ডধারীদের মধ্যে সর্বোমোট ৪০৫ টাকায় পূর্ব নির্ধারিত অনুপাতে তেল, চিনি ও ডাল বিক্রয়ের কথা ছিল। তবে নির্ধারিত দিনে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে পণ্য বিক্রি না করে সংশ্লিষ্ট ডিলার পরবর্তীতে গত শনিবার ২৬ নভেম্বর কৌশলে পৌরসভা সদরস্থ টাউন স্কুলে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত পণ্য বিক্রয় করেন।
ভুক্তভোগী টিসিবির কার্ডধারীদের অভিযোগ, গত ২২ ও ২৩ তারিখ পণ্য বিক্রির দিন ধার্য করা হলেও দায়িত্বলীদের সহযোগীতায় ডিলার মেসার্স কপিলমুনি ট্রেডার্স এর স্বত্তাধিকারী মনোয়ার হুসাইন উপকার ভোগীদের অর্ধেকের কাছে টিসিবির পণ্য বিক্রি করে বাকি ৩ শতাধিক উপকারভোগীর পণ্য বেশি দামে অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছেন।
টিসিবির কার্ডধারী মনিরুজ্জামান, সাত্তার, সেলিম ও লিজাসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, পরবর্তী দিনে গত ২৬ নভেম্বর বিকেল ৪টার দিকে টিসিবির পণ্য কিনতে গেলে ডিলারের পক্ষে মাল নেই বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
এসময় কার্ডধারী উপকারভোগীদের পক্ষে ২ দিন ধরে পণ্য বিক্রি করার কথা থাকলেও ভেন্যু পরিবর্তনপূর্বক এক দিনে মাত্র ৪ ঘণ্টায় কিভাবে সমুদয় পণ্য বিক্রি হলো? তাছাড়া তাদের কার্ডের পণ্য কারা কিনলো এমন প্রশ্নের জবাবে উপস্থিত ট্যাগ অফিসার ইমান উদ্দিন বলেন, এখানে কাউকে কৈফিয়ত দিতে আসেনি।
১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলাউদ্দীন গাজী অভিযোগ করে বলেন, ট্যাগ অফিসার ইমান উদ্দিন ও ডিলার দরজা লাগিয়ে পণ্য বিক্রি করেছেন। এসময় তিনি আরো বলেন, তার ওয়ার্ডের ২৫জন কার্ডধারীসহ পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের অন্তত ৩ শতাধিক কার্ডধারি এদিন পণ্য কিনতে পারেননি। ট্যাগ অফিসার ইমান উদ্দিনের যোগসাজশে সংশ্লিষ্ট ডিলার ব্যাপক অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে টিসিবির পণ্য অন্যত্র সরিয়ে ফেলেছে নতুবা বেশি দামে অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছেন। বিষয়টির তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে তিনি সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এব্যাপারে ডিলার মোনোয়ার হুসাইন ২ দিন ধরে পণ্য বিক্রির কথা স্বীকার করে বলেন, ম্যাম যেভাবে বলেছেন সেভাবে পণ্য বিক্রি করা হয়েছে।
ট্যাগ অফিসার ইমান উদ্দিন বলেন, ২ দিন ধরে পণ্য বিক্রির বিষয়টি তার জানা ছিলনা। ডিলার যেভাবে বলেছেন সেভাবে বিক্রি করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম জানান, প্রথম দিকে ভুয়া কার্ডধারীরা পণ্য নিয়ে চলে যাওয়ায় পরবর্তীতে প্রকৃত কার্ডধারীরা পণ্য পাননি। তবে আগামীতে প্রকৃত কার্ডধারীদের চিহ্নিতপূর্বক পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।