ঢাকা | মঙ্গলবার
১৩ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৩০শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পরিত্যক্ত কূপে সুখবর

পরিত্যক্ত কূপে সুখবর
  • জাতীয় গ্রিডে দিনে ৮০ লাখ ঘনফুট
  • বিয়ানীবাজারের পরিত্যক্ত কূপ থেকে সরবরাহ শুরু

গ্যাস ও তেলের অভাবে থমকে গেছে দেশের শিল্প-কারখানা। বাসাবাড়িতে নেই গ্যাসের চাপ। সকাল থেকে অপেক্ষা করে থাকতে হয়, কখন বাড়বে চাপ। অবশেষ রাতে চুলায় দেখা মেলে গ্যাসের। সবকিছু যেন উল্প-পাল্ট করে দিয়েছে জ্বালানির সংকট। তবে এই সংকট শুধু বাংলাদেশে নয় বরং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তা ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বের প্রায় প্রতিটি প্রান্তে। যখন এমন মরণ অবস্থা দেশের শিল্পের ঠিক সেই মুহূর্তে শোনা গেলো সুখবর।

আর সেই সুখবরটি হলো প্রায় পাঁচ বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকার পর সিলেটের বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রের ১ নম্বর কূপ থেকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয়েছে। এই কূপ থেকে উত্তোলনকৃত গ্যাস গত সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ শুরু হয়। প্রথম দিন থেকে ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিটেডের (এসজিএফএল) মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল প্রামাণিক। তিনি বলেন, ‘সোমবার সকাল থেকে সঞ্চালন লাইনে গ্যাস সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা ছিল। তবে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সারা দিন আমরা গ্যাস ফ্লো আউট করি। এরপর সন্ধ্যা ৬টা থেকে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ শুরু করি।’ আব্দুল জলিল প্রামাণিক আরও বলেন, ‘এর আগে রবিবার বিকালে আমরা পরীক্ষামূলক সব কাজ সম্পন্ন করেছি। গ্যাসের চাপ পরীক্ষার কাজও সম্পন্ন করেছি। এই কূপ থেকে প্রতিদিন ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস গ্রিড লাইনে সরবরাহ করা হবে।’

বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রের ১ নম্বর কূপ থেকে ১৯৯১ সালে গ্যাস তোলা শুরু হয়। ২০১৪ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৬ সালে আবার উত্তোলন শুরু হলেও ওই বছরের শেষ দিকে তা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৭ সালের শুরু থেকে কূপটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল। এরপর বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন (বাপেক্স) ওই কূপে অনুসন্ধান কাজ চালিয়ে গ্যাসের মজুত পায়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ সেপ্টেম্বর ওই কূপে নতুন করে পুনঃখনন কাজ (ওয়ার্ক ওভার) শুরু হয়। কূপে গ্যাস প্রাপ্তি নিশ্চিতের পর গত ১০ নভেম্বর থেকে গ্যাসের চাপ পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা শেষে কূপ থেকে দ্রুত জাতীয় সঞ্চালন লাইনে গ্যাস দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করা হয়। বর্তমানে কূপের তিন হাজার ২৫৪ মিটার গভীরে ৭০ বিলিয়ন ঘনফুটের বেশি গ্যাস মজুত আছে।

গ্যাসের চাপ পরীক্ষার পর দেখা গেছে, কূপটি দৈনিক ১০ থেকে ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করতে সক্ষম। তবে কারিগরি বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে দৈনিক ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এতে দৈনিক ১২৫ থেকে ১৩০ ব্যারেল কনডেনসেট গ্যাস পাওয়া যাবে।

বর্তমানে এসজিএফএলের আওতায় পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র আছে। এগুলো হলো, হরিপুর গ্যাস ফিল্ড, রশিদপুর গ্যাস ফিল্ড, ছাতক গ্যাস ফিল্ড, কৈলাশটিলা গ্যাস ফিল্ড ও বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ড। এরমধ্যে ছাতক গ্যাস ফিল্ড পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। বাকিগুলোর ১২টি কূপ থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ৯১ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন