দেশের সবচেয়ে গরিব মানুষদের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি সুদ নিচ্ছে এনজিও খাত। এটি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানান বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। ক্ষুদ্রঋণে নগদ টাকার বিনিময় কমিয়ে আনলে স্বচ্ছতা বাড়বে বলেও মত প্রকাশ করেন তিনি।
মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) অনুষ্ঠানে অটোমেশন লাইব্রেরি, ই-আর্কাইভ, ইনফো অ্যাপ্লিকেশন এবং ই-ক্লিপিং সেবার উদ্বোধনকালে মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) তিনি এসব কথা বলেন।
গভর্নর জানান, এনজিও খাতে ঋণের সুদহার সবচেয়ে বেশি এবং গ্রাহকও সবাই গরিব। নৈতিকতার প্রশ্ন তুলে বলেন, নগদ টাকার লেনদেন কমানো গেলে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।
দেশে ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান কার্যক্রমের বার্ষিক রিপোর্ট নিয়ে কর্মশালায় এনজিও খাতের সুদহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন গভর্নর। এতো বেশি সুদ নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে নগদ টাকার ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে। অধিক পরিমাণে লাভের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, এনজিওগুলোর সুদহার কমানোর বিকল্প নেই।
দেশে এমআরএ নিবন্ধিত প্রায় ৮৮১টি ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে ৭৪৭টি প্রতিষ্ঠান প্রায় ২২ হাজার শাখার মাধ্যমে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
দেশের তিন কোটি ৫২ লাখের বেশি পরিবার ক্ষুদ্রঋণ পরিষেবার আওতায় রয়েছে। পরিবারপ্রতি গড়ে চারজন ধরা হলে প্রায় ১৪ কোটি মানুষ অর্থাৎ, দেশের প্রায় ৭৫ শতাংশ মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষুদ্রঋণে সম্পৃক্ত রয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বা এনজিওগুলোর ঋণ আদায়ের হারও ৯৮ ভাগের বেশি।
দেশের অর্থনীতিতে ক্ষুদ্র, উৎপাদনশীল ও সেবা খাতে ক্ষুদ্র ও উদ্যোগ ঋণের ধারাবাহিক সরবরাহ না থাকলে দেশে বিদ্যমান দারিদ্র্য হারের সঙ্গে প্রায় ১৪ শতাংশ দারিদ্র্য যুক্ত হতো বলে মত প্রকাশ করে সিডিএফ।
এর কারণ হিসেবে বলা হয়, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলো বছরে প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার কোটি অর্থাৎ প্রতি মাসে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করে থাকে।
আনন্দবাজার/কআ