বাবার রেখে যাওয়া বাড়ি ও দোকান দখলে নিয়ে সত্তরোর্ধ বয়স্ক বিধবা মাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে ছেলেরা। বাধ্য হয়ে মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন অসহায় বৃদ্ধা জোবায়দা বেগম (৭০)। দীর্ঘ দিন ধরে সেখানেই অবস্থান করছেন তিনি। নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের পুরাতন বাবুপাড়া এলাকায এমন অমানবিক ঘটনা ঘটেছে।
জোবাইদা খাতুন ওই এলাকার মৃত আব্দুল হালিমের স্ত্রী। এ ঘটনায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকার মান্যগণ্য ব্যক্তিবর্গের কাছে সহযোগিতা চাইলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। ফলে নিরুপায় হয়ে গত রবিবার বিকেলে মেয়েদের নিয়ে ছেলের দখলে নেওয়া একটি দোকানে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।
জানা যায়, জোবাইদা বেগমের স্বামী প্রায় ছয় বছর আগে মারা যান। তাঁর পাঁচ মেয়ে ও তিন ছেলে। স্বামীর রেখে যাওয়া পুরাতন বাবুপাড়া ও ইসলামবাগ ফিদালী মিলনায়তন এলাকার দুইটি বাড়ি ও শহরের শেরে বাংলা সড়কের দুইটি দোকান রয়েছে। স্বামীর রেখে যাওয়া এই সম্পত্তি ও সন্তানদের আগলে রেখে বাকী দিনটুকু বাচাঁর স্বপ্ন দেখছিলেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি তাঁর তিন ছেলে জাবেদ, মুরাদ ও লিটন বাড়িসহ দোকান জোর করে দখল করে নিয়েছেন।
জানতে চাইলে জোবাইদা খাতুন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, স্বামীর কষ্টে উপার্জিত বাড়ি ও দোকান ছিল। কদিন আগে ছেলেরা দখল করে নিয়েছে। এছাড়া আমাকে এক কাপড়ে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। কয়েকদিন আমি এ বাড়ি ও বাড়ি ছিলাম। পরে খবর পেয়ে মেয়ে এসে তার বাড়িতে নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, এতো কষ্ট করে সন্তানদের বড় করলেও তারা আমাকে কোনোদিনও ভরণপোষণের খরচ দেয় নাই। আমি আমার ছেলেদের বিচার চাই। আমার স্বামীর বাড়ি ও দোকান ফিরে পেতে চাই। আমি বাকিটা জীবন স্বামীর দেওয়া ঘরে কাটাবো।
এ ব্যাপারে ওই বৃদ্ধার মেঝো ছেলে মো. মুরাদ বলেন, ছোট একটি দোকান ভাগে পেয়েছি আমি। আর পাশের দোকান আমার দুই ভাই ভাগ করে নিয়েছে। তাঁরা ভাড়াটিয়া রেখেছে আর আমি নিজে করি। রেলের দোকানে মা বা বোনের কিসের ভাগ? এটা পৈত্রিক সম্পত্তি? যে তাদেরকেও দিতে হবে।